তুচ্ছ ঘটনায় গোয়াইনঘাট ও মৌলভীবাজারে ২ যুবক খুন

ডাক ডেস্ক : তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোয়াইনঘাট ও মৌলভীবাজারে ২ যুবক খুন হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে পৃথক এই খুনের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় পুলিশ একজনকে আটক করেছে।
গোয়াইনঘাট (সিলেট) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, গোয়াইনঘাটের রুস্তমপুর ইউনিয়নে ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা চালকের হাতে খুন হয়েছেন পাতনি গ্রামের রহমত উল্লাহর ছেলে নাজিম উদ্দিন (২০)। পুলিশ জানায়, গত মঙ্গলবার দুপুরে নাজিম উদ্দিন বঙ্গবীর-হাদারপার সড়কের স্থানীয় পীরেরবাজার থেকে সালেহ আহমদের ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সায় বাড়ির উদ্দেশ্যে পাতনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে নামেন। নাজিম উদ্দিন অটোরিক্সা থেকে নেমে সালেহ আহমদকে ৫ টাকা ভাড়া দেন। এসময় সালেহ আহমদ নাজিম উদ্দিনের কাছে ১০ টাকা ভাড়া দাবি করলে উভয়ই তর্কে জড়িয়ে পড়ে। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সালেহ আহমদ রাস্তার পাশের এক মৎস্য খামারের বেড়ার বাঁশ দিয়ে নাজিম উদ্দিনের ঘাড়ে উপুর্যুপরি আঘাত করে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে নাজিম উদ্দিনের স্বজনরা ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গভীর রাতে তিনি মারা যান। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক গোয়াইনঘাট থানার পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ কেএম নজরুল বলেন, এ ঘটনায় জড়িত মূল আসামীকে গ্রেফতারে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশের একাধিক টিম মাঠে আছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তÍুতি চলছে বলেও জানান তিনি।

মৌলভীবাজার থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, ফেসবুকে আইডি খোলাকে কেন্দ্র করে মৌলভীবাজার শহরতলীর বর্ষিজোড়ায় যুবক হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

এদিকে, নিহতের পরিবারে চলছে আহাজারি। খুনীদের ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত মুখে দানা (খাবার) নেবেন না বলে বিলাপ করছেন পরিবারের সদস্যরা।
গত মঙ্গলবার রাতে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের পাহাড় বর্ষিজোড়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। নিহত রেজাউল করিম নাঈম (২১) পাহাড় বর্ষিজোড়া এলাকার ডেকেরেটার্স ব্যবসায়ী চেরাগ মিয়ার ছেলে। তিনি এ বছর মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন।
পুলিশ, নিহতের পরিবার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সূত্রে জানা যায়, ফেসবুকে আইডি খোলা ও লেখালেখি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির কারণে ঘটনাটি ঘটেছে। আকস্মিক এমন ঘটনায় হতবিহ্বল এলাকাবাসী।
নাঈমের ছোট বোন বলেন- ‘মঙ্গলবার রাতে পাশের বাড়ির নূরুল তাদের বাড়িতে এসে ফেসবুকে আইডি খোলা নিয়ে গালাগালি ও ধমক দিতে থাকে। আমার বাবাসহ সবাই তাদের পা ধরে মাফ চেয়েও রক্ষা হয়নি। এক পর্যায়ে নাঈমকে প্রচ- মারধর করতে থাকে। হামলায় সহযোগিতা করে পাশের বাড়ির আরও কয়েকজন। তখন তাকে স্টেপিং করে মারাত্মকভাবে রক্তাক্ত করে। ক্ষতবিক্ষত নাঈমকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
স্থানীয় চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আখতার উদ্দিন বলেন, রাত ৪টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নাঈম মারা যান। সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা করেন। ফুসফুসে অপারেশন করেন। শেষ পর্যন্ত আর তাকে বাঁচানো যায়নি।
মৌলভীবাজার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আজমল হোসেন বলেন- এ ঘটনায় সোহান নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ঘটনার মূল অভিযুক্তদের আটকের চেষ্টা চলছে। পুলিশ ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে। তিনি আরও বলেন, নিহত যুবকের ময়না তদন্ত সিলেটে সম্পন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। স্বজনরা লাশ দাফন করা নিয়ে ব্যস্ত আছেন। এজাহার দিলে মামলা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।