চতুর্থ দফা অবরোধের প্রথম দিন
বিভিন্ন স্থানে পিকেটিং স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আটক
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ নভেম্বর ২০২৩, ১২:৩৭:২৮ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপির ডাকা চতুর্থ দফা অবরোধের প্রথম দিন গতকাল রোববার পালিত হয়েছে। সকালে সিলেটে সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে, আগুন জ্বালিয়ে পিকেটিং করে অবরোধ সমর্থকরা। পিকেটিংকালে নগরীর জিতু মিয়ার পয়েন্ট এলাকা থেকে মামুনুর রশীদ নামের স্বেচ্ছাসেবকদলের এক নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক। অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ রুটে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও দিনে ছেড়ে যায়নি দূরপাল্লার কোন বাস।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের দক্ষিণ সুরমা সংযোগ সড়ক এলাকায় গতকাল রোববার সকাল আটটার দিকে সড়কে গাছের গুঁড়ি, বাঁশ ফেলে যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করেন অবরোধ সমর্থনকারীরা। এ সময় তারা স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেন। অবরোধকারী একাধিক নেতা-কর্মীর মাথায় ছিল হেলমেট। অবরোধের খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হলে তারা সেখান থেকে চলে যান।
সকাল সাড়ে আটটার দিকে নগরীর জিতু মিয়ার মোড় ও কাজিরবাজার ব্রিজ এলাকায় অবরোধের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের একদল নেতা-কর্মী। এ সময় তারা ওই এলাকার পিকেটিং করেন। এক পর্যায়ে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মামুনুর রশীদকে আটক করে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চতুর্থ দফায় অবরোধে সিলেট শহরে যানবাহনের চলাচল আগের অবরোধগুলোর তুলনায় বেড়েছে। নগরীর কিছু কিছু পয়েন্টে যানজটও ছিল। যদিও সিলেট থেকে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। শহরের ভেতরে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যক্তিগত যানবাহন, লেগুনা ও মোটরসাইকেলে মানুষকে চলাচল করতে দেখা গেছে। শহর থেকে বিভিন্ন প্রান্তের উদ্দেশ্যে সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করছে। অবরোধের কারণে যাত্রীদের বেশি ভাড়া গুণতে হচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ।
নগরীর কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে বাসের কাউন্টারগুলো খোলা থাকলেও কোনো বাস ছেড়ে যাচ্ছে না। এতে যাত্রীরা টার্মিনাল এলাকায় গিয়ে দূরপাল্লার যানবাহন না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন ভুক্তভোগীরা। সেখান থেকে মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারে করে দূরপাল্লার যাত্রী পরিবহন করতে দেখা গেছে। সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে একটু পর পর পুলিশকে টহল দিতে দেখা গেছে। নগরীর অভ্যন্তরেও বিভিন্ন মোড়ে পুলিশের অবস্থান দেখা গেছে।
দূরপাল্লার বাস না চালানোর বিষয়ে যাত্রী না থাকার যুক্তি দিচ্ছেন সিলেট জেলা পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. জিয়াউল কবির। গতকাল রোববার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, যাত্রী থাকলে তারা অবশ্যই গাড়ি বের করবেন। অবরোধের দিনেও সিলেট থেকে ঢাকাগামী বাস ছাড়া হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। তবে সেটি যাত্রী উপস্থিতির ওপর নির্ভর করছে। তবে যাত্রী কম।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আজবাহার আলী শেখ বলেন, শেখঘাট এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টাকালে একজনকে আটক করা হয়েছে। বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশ তৎপর আছে। পুলিশ জ্বালাও পোড়াও সহ্য করবে না।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, জনগণের সমর্থনে তারা এক দফা আন্দোলনে আছেন। ভাত ও ভোটের অধিকারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। আন্দোলন সফল না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছেড়ে যাবেন না।
অপরদিকে অবরোধ চলাকালে দুপুরে নগরীর বন্দরবাজার সংলগ্ন জেলরোড এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে সিলেট মহানগর বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী।
মিছিলে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন- মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সৈয়দ মঈন উদ্দিন সুহেল, নজিবুর রহমান নজিব, বিএনপি নেতা নাদির খান, মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু, মিজানুর রহমান মিজান প্রমুখ।
অপরদিকে, চতুর্থ ধাপের টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের ১ম দিনে নগরীর দক্ষিণ সুরমা কদমতলী এলাকায় সড়ক অবরোধ ও মিছিল করেছে সিলেট মহানগর জামায়াত। অবরোধ ও মিছিলে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারী মোহাম্মদ শাহজাহান আলী, দক্ষিণ সুরমা থানা আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারী ফয়জুল ইসলাম জায়গীরদার ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির সিলেট মহানগরী সেক্রেটারী শরীফ মাহমুদ প্রমুখ।