টিলাগড়ের গ্রুপিং রাজনীতির বলি হলো আরেক তরুণ, কুপিয়ে খুন
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২১ নভেম্বর ২০২৩, ২:১২:০৪ অপরাহ্ন
![টিলাগড়ের গ্রুপিং রাজনীতির বলি হলো আরেক তরুণ, কুপিয়ে খুন টিলাগড়ের গ্রুপিং রাজনীতির বলি হলো আরেক তরুণ, কুপিয়ে খুন](https://sylheterdak.com.bd/wp-content/uploads/2023/11/Another-killing-in-Tilagor-Sylheter-Dak.jpg)
অনলাইন ডেস্ক : ছাত্রলীগের ‘কিলিং জোন’ খ্যাত টিলাগড়ের গ্রুপিং রাজনীতির বলি হয়ে প্রাণ গেলো আরেকটি তরুণের । এবার সিলেট নগরীর টিলাগড়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের গ্রুপিংয়ের বলি হলেন আরিফ হাসান (১৯) নামের এক তরুণ। পূর্ববিরোধের জেরে রাতের আধারে তাকে কুপিয়ে খুন করে দুবৃত্তরা।
সোমবার দিবাগত (২০ নভেম্বর) রাত পৌনে ১২টার দিকে নগরীর শাহী ঈদগাহ টিভি গেইটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আরিফ হাসান সিলেট সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ও নগরীর শাহী ঈদগাহ টিভি গেইট এলাকার ফটিক মিয়ার ছেলে। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রঞ্জিত সরকার গ্রুপের সক্রিয় কর্মী ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাকে একা পেয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের ৩৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিরণ মাহমুদ নিপু গ্রুপের কর্মীরা কুপিয়ে খুন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, পূর্ববিরোধের জের ধরে হিরণ মাহমুদ নিপু গ্রুপের কর্মী জুনায়েদ (২০), আনাস (২০), রবি (২১), হেলাল (২৭), সাকিব (২০), মামুন (২৮)সহ কয়েকজন মিলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আরিফের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এ সময় আরিফকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে সড়কে ফেলে রেখে যায় তারা। তার পা, বাম হাত, বাম উরুসহ দেহের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ১২টি আঘাত করে হামলাকারীরা।
পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসকরা তাকে বাঁচাতে প্রাণান্তর চেষ্টা করেন। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে রাত ১টার দিকে আরিফ মারা যান।
ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্য বলরাম একটি গণমাধ্যমকে আরিফ হাসানের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তার লাশ মর্গে রাখা হয়েছে।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) উপকমিশনার আজবাহার আলী শেখ জানান, যতদূর জেনেছি, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বেই আরিফ হাসান খুন হয়েছে। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে তার লাশের ময়না তদন্ত হবে। এ বিষয়ে মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানান তিনি।
এদিকে আরিফের মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে ভীড় করেন জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। খবর পেয়ে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ পদস্থরা হাসপাতালে উপস্থিত হন। তবে এ ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি বলে পুলিশ জানায়।
প্রসঙ্গত, ক্ষমতাসীন দলের টিলাগড় কেন্দ্রিক গ্রুপিংয়ের কারণে বছর বছরই কারও না কারও লাশ পড়ে। গ্রুপিং রাজনীতির কারণে একের পর এক বলি হয় শিক্ষার্থীরা। খালি হয় মায়ের বুক। সোমবার আবারও এর পূণরাবৃত্তি ঘটলো। ২০২০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ছাত্রলীগের ‘কিলিং জোন’ হিসেবে খ্যাত টিলাগড়ে খুন হয় ছাত্রলীগ কর্মী অভিষেক দে দ্বীপ। এর আগে ২০১৮ সালের ৯ জানুয়ারি তানিম খান , ২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর জাকারিয়া মোহাম্মদ মাসুম, ১৬ অক্টোবর ওমর আহমদ মিয়াদ, ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট করিম বক্স মামুন, ২০১০ সালের ১২ জুলাই উদয়েন্দু সিংহ পলাশ, ২০০৩ সালের ৭ জানুয়ারি আকবর সুলতান ও ৯ অক্টোবর মিজান কামালী খুন হন। এরা ছাত্রলীগের নেতা, কর্মী অথবা অনুসারী ছিলেন। গ্রুপিং রাজনীতির কারণে বলি হওয়া এই হত্যাকাণ্ডগুলোর ঘটনায় মামলা হলেও খুনিদের সাজা হয়নি।