প্রচার শেষ, এখন অপেক্ষার পালা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ৫:২৪:৪৬ অপরাহ্ন
অনলইন ডেস্ক : দ্বারে দ্বারে গিয়ে প্রার্থীরা চেয়েছেন ভোট। বিভিন্ন রকমের ব্যানার-পোস্টারের সঙ্গে মিছিল, গণসংযোগ, সমাবেশ, সভা, মতবিনিময়সহ নানা উপায়ে ভোটারদের আকর্ষণ ও ভরসা আদায়ের চেষ্টা করেছেন। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণার সময়। এখন শুধু ভোটারদের রায় প্রয়োগের অপেক্ষা।
৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে সামনে রেখে শুক্রবার সকাল ৮টায় শেষ হয়েছে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা। মূলত ইসির নিয়মানুযায়ী— ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে শেষ করতে হয় প্রচার-প্রচারণা। সেই নিয়ম মেনেই সারা দেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সকল ধরনের প্রচার-প্রচারণার সমাপ্তি হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আজ শুক্রবার সকাল ৮টায় প্রচারের সময় শেষ হয়েছে। এক্ষেত্রে কেউ আইন না মানলে ছয় মাসের জেল অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডিত হতে পারে। কমিশন চাইলে শুনানি করে কারো প্রার্থিতাও বাতিল করতে পারে।
দেশের জাতীয় সংসদে আসনসংখ্যা ৩০০ থাকলেও এবার ২৯৯ আসনে নির্বাচন হচ্ছে। নওগাঁ-২ আসনের এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর মৃত্যু হলে বিধি অনুযায়ী আসনটির ভোট স্থগিত করেছে ইসি। এর ফলে ২৯৯ আসনে ভোটাররা জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ পাবেন। একদিন পরই শুরু হবে জাতীয় সংসদের জন্য জনপ্রতিনিধি বাছাইয়ের পর্ব। ৭ জানুয়ারি (রোববার) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে এসব আসনে।
এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি প্রার্থী রয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের। হাইকোর্ট থেকে ৩ জন প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ায় দলটির প্রার্থীর সংখ্যা ২৬৬ জন।
এ ছাড়া, জাতীয় পাটির ২৬৫ জন, তৃণমূল বিএনপির ১৩৫ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ১২২ জন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ৯৬ জন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ৫৬ জনসহ ২৮টি রাজনৈতিক দলের মোট প্রার্থী সংখ্যা এক হাজার ৫৩৪ জন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী ৪৩৬ জন। নির্বাচনে ৯০ জন নারী প্রার্থী ও ৭৯ জন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রার্থীও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৮টি এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। তবে দেশের বড় রাজনৈতিক দল হওয়া সত্ত্বেও এ নির্বাচন বয়কট করেছে বিএনপি। দলটি নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ একাধিক দাবিতে নির্বাচনে অংশ নেয়নি।
নির্বাচনে ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণ ফোরাম, গণফ্রন্ট, জাকের পার্টি, জাতীয় পাটি, জাতীয় পার্টি-জেপি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, তৃণমূল বিএনপি, ন্যাশনাল পিপলস পাটি, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পাটি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম.এল) ও গণতন্ত্রী পার্টি প্রার্থী দিয়েছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে ৭২ ঘণ্টা মোটরসাইকেল ও ২৪ ঘণ্টা সর্বসাধারণের যান চলাচলের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এ সময় কেবল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী, প্রশাসনের সদস্য ও অনুমোদিত পর্যবেক্ষক, জরুরি সেবার যানবাহন, ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও অভিন্ন কাজে ব্যবহৃত জিনিসপত্র এবং সংবাদপত্র বহনকারী সব ধরনের যানবাহন, দূরপাল্লার যানবাহন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাদের এজেন্টদের ক্ষেত্রে এই বিধিনিষেধ শিথিল করা হবে। সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক, নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী, জাতীয় মহাসড়ক, প্রধান আন্তঃজেলা রুট, মহাসড়ক এবং প্রধান মহাসড়কের সংযোগ সড়কের ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ শিথিল করা হবে।
ভোটগ্রহণের আগের দিন ৬ জানুয়ারি (শনিবার) দুই হাজার ৯৬৪ কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ছাড়া, ভোটের দিন সকালে ৩৯ হাজার ৬১ কেন্দ্রে ব্যালট পেপার যাবে। এবার মোট কেন্দ্র রয়েছে ৪২ হাজার ২৫।
এবারের জাতীয় নির্বাচনে ২৮টি রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলে মোট ১ হাজার ৯৭০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সারা দেশে দলীয় প্রতীক ও স্বতন্ত্র থেকে মহিলা ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রার্থীরাও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ইসির দেওয়া তথ্যানুযায়ী, সারা দেশে দলীয় ও স্বতন্ত্র থেকে মোট ৯০ মহিলা প্রার্থী ভোটে অংশগ্রহণ করছেন। অন্যদিকে, দেশের বিভিন্ন সংসদীয় আসন থেকে ৭৯ জন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রার্থী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটে লড়াই করবেন। মহিলা ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী মিলে মোট ১৬৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।