আল-আকসা ফ্লাড ও থার্ড টেম্পল
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ৫:১১:১২ অপরাহ্ন

ওলীউর রহমান :
ফিলিস্তিনের রামাল্লা ও পশ্চীম তীর থেকে বিচ্ছিন্ন একটি ভূ-খন্ড গাজা উপত্যকা। উপত্যকাটি নিয়ন্ত্রণ করে ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন ‘হামাস’। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাঈলের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে এক নজীরবিহীন অভিযান পরিচালনা করে হামাস। হামাস এ অভিযানের নাম দেয় ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’। বিভিন্নœ কারণে এ অভিযানটি ছিল নজীরবিহীন। ২০ মিনিটে ৫ হাজার রকেট নিক্ষেপে করেছিল রাজধানী তেলাবীবসহ ইসরাঈলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরে। বুলডোজার দিয়ে সীমান্ত বেষ্টনী ভেঙ্গে এবং প্যারাগ্লাইডারে উড়ে হামাসের যোদ্ধারা ইসরাঈলের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে যে সুপরিকল্পিত অভিযান পরিচালনা করেছিল এতে কিংকর্তব্যভিমুঢ় হয়ে পড়েছিল ইসরাঈল এবং তার মিত্ররা। সে দিনের অভিযানে যেভাবে হামাস যোদ্ধারা ইসরাঈলের দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের চোখ ফাকি দিতে সক্ষম হয়েছিল তেমনিভাবে বিশে^র অত্যাধুনিক প্রযুক্তিধর এই দেশের সীমান্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘আয়রণ ডোম’ কেও বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখাতে সক্ষম হয়েছে। এ হামলার ফলে ইসরাঈল জোড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, বহু ইয়াহুদী দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে শুরু করে। এ অভিযানে প্রায় এক হাজার ইসরাঈলী প্রাণ হারায় এবং হামাস যোদ্ধারা কয়েকজন সামরিক অফিসার সহ দু’শতাধিক ইসরাঈলীকে বন্দী করে গাজায় নিয়ে আসে।
ইয়াহুদীবাদী রাষ্ট্রটি ফিলিস্তিনীদের জায়গা জমি জবর দখল করে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৪৮ সালে। এক ঘন্টার মধ্যে এই অবৈধ রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছিল আমেরিকা। এই অবৈধ ইসরাঈল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে ফিলিস্তিনীদের উপর নানাভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছে। লক্ষ লক্ষ ফিলিস্তিনী নিজেদের ঘর-বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়ে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছে। বাবার সামনে থেকে মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়া, সন্তানদের সামনে বাবাকে গুলি করে হত্যা করা, শিশুদেরকে বন্দী করে যৌন নির্যাতন চালানো, বোমার আঘাতে বাড়ি-ঘর, ভবন নিমিষে ধ্বংস্তুপে পরিণত হওয়া, জন্মভূমি থেকে উচ্ছেদ হয়ে কোনো শরণার্থী ক্যাম্পে কিংবা পাশর্^বর্তী কোনো দেশে আশ্রয় নেওয়া, আশ্রয় শিবিরে বোমা মেরে শরণার্থীদের দেহ ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া ইয়াহুদীবাদী ইসরাঈলের এসব অমানবিক ও পৈশাচিক জুলুম অত্যাচারের দৃশ্য দেখে ফিলিস্তিনী শিশুরা বড় হয়। অথচ দ্বিতীয় বিশ^ যুদ্ধের সময় যখন জার্মান চ্যান্সলর এডলফ হিটলার ষাট লক্ষ ইয়াহুদী হত্যা করেছিল তখন বিশে^র কোনো রাষ্ট্রই ইয়াহুদীদের আশ্রয় দেয়নি তখন এই ফিলিস্তিনীরাই তাদের আশ্রয় দিয়েছিল। ইসরাঈলের সকল জুলুম-অত্যাচারের মোকাবেলা ফিলিস্তিনীরা এতোদিন ইট পাটকেল দিয়েই করেছিল। ৭ অক্টোবরের ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ এর মত অভিযান ইসরাঈলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনীদের নতুনই বলতে হবে।
নিজ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠন হামাস ৭ অক্টোবর যে অভিযান চালিয়েছিল এতে কেবল ইসরাঈলের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়েনি বরং এতে ইসরাঈল রাষ্ট্রের চরমভাবে আত্মমর্যাদায় আঘাত লাগে। যার দরুন গাজা উপত্যকাকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে এবং হামাসকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেন ইসরাঈলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং তার মিত্ররা। গাজা উপত্যকাকে চার দিক থেকে ঘিরে পানি, বিদ্যুৎ, জ¦ালানী, ইন্টারনেট এমনকি খাদ্যসরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে এক পৈশাচিক কায়দায় উপত্যটিকে অবরুদ্ধ করে আকাশ, স্থল ও জল পথ তিন দিক থেকে আক্রমন চালিয়ে গাজা উপত্যকার সাধারণ মানুষকে পিঁপড়ার মত পিষে মারা শুরু করে নেতানিয়াহুর সরকার।
এই হত্যাযজ্ঞে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করেন আমেরিকা এবং ইউরোপের অধিকাংশ দেশ। দু’মাসের মাথায় বিশ হাজারের বেশি বেসামরিক ফিলিস্তিনীকে হত্যা করে গাজা উপত্যকাকে দুমড়ে মুচড়ে দেওয়া হয়। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশ হচ্ছেন নারী ও শিশু। দখলদার ইসরাঈলীদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি হাসপাতালের মুমূর্ষু রোগী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সাংবাদিক এবং জরুরী সেবায় নিয়োজিত জাতিসংঘের কর্মীরাও। দখলদারদের বোমা হামলায় গাজা এখন বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে। ধ্বংস্তুপের নীচে আটকে থাকা মানুষগুলোর আর্তচিৎকার হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। তবে হামাসকে নির্মূল করাতো দূরের কথা উল্টো ইসরাঈলের ‘ছেড়েদে মা কেঁদে বাচি’ অবস্থা। মনে হচ্ছে ইসরাঈল অন্ধ কুপে পা দিয়েছে। না পারছে হামাসকে নির্মূল করতে আর না পারছে এখান থেকে সরে আসতে। এ পর্যন্ত দখলদার ইসরাঈলের উঁচ্চ পদস্থ বহু সামরিক কর্মতাকে জীবন দিতে হয়েছে এবং প্রচুর পরিমাাণে সামরিক যান ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে হামাস।
গাজায় ইসরাঈলী গণ হত্যা এবং মানবাধিকার লঙ্গনের প্রতিবাদে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ইউরোপ আমেরিকা সহ বিশে^র প্রায় প্রতিটি দেশেই সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। এমনকি খোদ ইসরাঈলের ইয়াহুদীরাও রাস্তায় নেমে গাজায় যুদ্ধ বিরতীর জন্য বিক্ষোভ করেছে। তবে বিশে^র কোনো মুসলিস দেশ সরাসরি ফিলিস্তিনীদের পক্ষে মাঠে না নামলেও লেবাননের ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ এবং ইয়েমেনের হুতি বিদ্্েরাহীরা ইসরাঈলের উপর মিজাইল ছোড়ে তাদের শক্তি ও সাহসিকতার স্বাক্ষর রেখেছে। ইসরাঈলকে আমেরিকা সহ ইউরোপের বহু দেশ সরাসরি সহযোগিতা করলেও আরব বিশ^ সহ ওআইসিভূক্ত দেশগুলো ফিলিস্তিনের পক্ষ্যে কেবল বক্তব্য ও নিন্দা জানানোর মধ্যেই তাদের কর্মসুচি সীমাবদ্ধ রেখেছে। অবশ্য কাতার এবং তুরস্ক সহ আরো কিছু দেশ গাজায় ত্রাণ সামগ্রি প্রেরণ করেছে। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে ১০ নভেম্বর গাজায় ইসরাঈলী আগ্রাসনের বিষয়ে আরবলীগ ও ওআইসিভূক্ত ৫৭টি দেশের নেতারা এক জরুরী বৈঠকে বসেছিলেন, কিন্তু এই বৈঠকে মুসলিম বিশে^র নেতারা ইসরাঈলের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিতে সক্ষম হননি।
মুসলিম বিশে^র নেতারা ইসরাঈলকে কেন এতো ভয় করেন? দিনে দিনে পুরো ফিলিস্তিনকে গিলে ফেলতে চাইছে ইসরাঈল, পবিত্র আল-আকসাকে ভেঙ্গে তারা থার্ড টেম্পল নির্মাণের পরিকল্পনা করছে অথচ মুসলিম বিশে^র নেতারা এ ব্যাপারে একেবারে নির্বিকার। তবে কিছুটা পরিবর্তনের সু বাতাস পরিলক্ষিত হচ্ছে সৌদি আরব সহ মুসলিম বিশে^। এই বিষয়গুলোকে আমরা এক পাশে রেখে এখন পর্যালোচনা করব যে, হামাস কেন আগ বাড়িয়ে এই হামলা করতে গেল। অথচ তারা ভাল করে জানত যে, এই হামলার পরিণতি কতটুকু ভয়াবহ হতে পারে। এই প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য আন্তর্জাতিক গণ মাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রবন্ধ, নিবন্ধ ও প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে গা’ শিউরে উঠার মত কিছু ভয়াবহ তথ্য জানা যায়।
পবিত্র আল-আকসা ভেঙ্গে ইয়াহুদীবাদী ইসরাঈল ‘থার্ড টেম্পল’ বা তৃতীয় সুলেমানী মন্দির নির্মাণ করার পরিকল্পনা প্রায় চুড়ান্ত করেছে। তাদের ধর্মীয় গ্রন্থ তাওরাত (ওল্টটেস্টমেন্ট) এবং তালমুদের নির্দেশনা অনুযায়ী অর্থোডক্স বা গোড়া ইয়াহুদীদের বিশ^াস যে, সারা বিশে^র ইয়াহুদীদের ত্রাণ কর্তা মাসিহা (ইসলামে যাকে মাসিহে দাজ্জাল বলা হয়) পৃথিবীতে আত্মপ্রকাশের সময় হয়ে গেছে। তিনি পৃথিবীতে এসে গোটা পৃথিবীর নেতৃত্ব গ্রহণ করবেন এবং সারা পৃথিবীতে ইয়াহুদীদের একচ্ছত্র শাসন প্রতিষ্ঠা করবেন। তবে তিনি পৃথিবীতে আসার আগে ইয়াহুদীদেরকে কিছু শর্ত পুরণ করতে হবে। সেই শর্তগুলো হলো- ১. সারা বিশে^ ছড়িয়ে থাকা ইয়াহুদীরা একত্রিত হতে হবে। ২. ইয়াহুদীদের একটি স্বাধীন ভূ-খন্ড থাকতে হবে। ৩. থার্ড টেম্পল বা তৃতীয় সুলেমানী মন্দির নির্মাণ করতে হবে। আল-আকসা হরমের ভিতরে মূলত তিনটি স্থাপনা রয়েছে।
কিবলা মসজিদ, কুব্বাতুস সাখরা (ডোম অব দ্য রক) ও বুরাক মসজিদ। মিডিয়ায় সোনালী গম্বুজের যে স্থাপনা দেখা যায় এর নাম হলো কুব্বাতুস সাখরা। ইয়াহুদীরা এটাকে টেম্পল মাউন্ড বলে। এই কুব্বাতুস সাখরা বা সোনালী গম্বুজের মসজিদই ইয়াহুদীবাদী ইসরাঈলের টার্গেট। এখানে হযরত সুলাইমান আ. (যাকে ইয়াহুদীরা কিং সালোমন বলে ডাকে) প্রথম মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। এ মসজিদকে ইয়াহুদীরা ফার্ষ্ট টেম্পল বলে। ইরাকের ব্যাবিলনের শাসক বুখতে নসর এই মসজিদকে ধ্বংস করে। এরপর পারস্য শাসকেরা এখানে আরেকটি উপাসনালয় নির্মাণ করেন। অতঃপর রোমান শাসকরা আবার সেই উপাসনালয় বা সেকেন্ড টেম্পলকে ধ্বংস করে। অতঃপর উমাইয়া খলীফা আব্দুল মালিক ইবনে মারওয়ান এখানে মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু করেন এবং ৭০৫ খ্রিষ্টাব্দে তার ছেলে খলিফা প্রথম আল ওয়ালিদের শাসনামলে এর কাজ সম্পন্ন হয়। ইসরাঈলী ইয়াহুদীরা এই সোনালী গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ ভেঙ্গে যেখানে তাদের সেকেন্ড টেম্পল ছিল থার্ড টেম্পল নির্মাণ করতে চায়। আর এটা তাদের ত্রাণ কর্তা মাসীহা তথা দাজ্জাল পৃথিবীতে আত্মপ্রকাশের তৃতীয় শর্ত।
ইয়াহুদীরা মনে করে দ্বিতীয় বিশ^ যুদ্ধের পর বিশে^র বিভিন্ন দেশ থেকে ইয়াহুদীরা ইসরাঈলে এসে জড়ো হয়েছে এবং ১৯৪৮ সালে ইসরাঈল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় শর্ত পুরণ হয়েছে। এখন বাকি শুধু তৃতীয় শর্ত অর্থাৎ থার্ড টেম্পল নির্মাণ। আর এই টেম্পল বা মন্দির তারা নির্মাণ করতে চায় আল-আকসা মসজিদের জায়গায়। এর আগে তাদের ধর্মীয় গ্রন্থের নির্দেশনা অনুযায়ী একটি বিশেষ রকমের লাল গরু জবাই করে তাদেরকে পুত পবিত্র হতে হবে। ইয়াহুদীবাদী ইসরাঈল এই ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সকল প্রস্তুতি চুড়ান্ত করেছে। এমনকি এই বিশেষ রকমের লাল বর্ণের কয়েকটি গরুও গত করোনার সময় আমেরিকার একটি খামার থেকে তারা সংগ্রহ করে রেখেছে। এই গুরুগুলো আল-আকসার পাশেই মাউন্ট অলিভ বা জাবালে জায়তুন এলাকায় একটি খামারে রাখা হয়েছে।
২০২৪ সালের ২২ থেকে ২৯ এপ্রিল ইয়াহুদীদের পেসাখ উৎসব নামক জাতীয় উৎসবের কোনো এক দিনে এই মাউন্ট অলিভ এলাকায় এই লাল গরুগুলোকে তারা বলি দেবে। এর পর পবিত্র আল-আকসা ভেঙ্গে তার জায়গায় কথিত থার্ড টেম্পল নির্মাণ করতে আর কোনো বাঁধা থাকবে না। ‘মিডল ইষ্ট আই’ জানিয়েছে যে, হামাস যখন ইসরাঈলের এই দূরভিসন্ধির কথা জানতে পেরেছে তখনই তারা ‘অপারেশন আল আকসা ফ্লাড’ এর পরিকল্পনা করে এবং ৭ অক্টোবর অভিযান পরিচালনা করে। ইসরাঈল এখনো সেই লক্ষ্য সামনে রেখেই অগ্রসর হচ্ছে, যার দরুন পশ্চীম তীরেও ফিলিস্তিনীদের উপর অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে এবং পবিত্র আল আকসায় মুসলমানদের প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে। অন্য দিকে হামাস সহ ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী গোষ্ঠীগুলো ইমাম মাহদির অপেক্ষা করছে। যিনি কেয়ামতের আগে পৃথিবীতে আগমন করবেন। মুক্তিকামীরা ‘সালাম ইয়া মাহদি’ নামক আরবী সংগীত গেয়ে সেই মহান ইমামকে আগাম স্বাগতম জানাচ্ছে। আসলে পৃথিবী কোন দিকে এগুচ্ছে তা কেবল আল্লাহ রাব্বুল আলামীনই ভাল জানেন।
লেখক : প্রাবন্ধিক।