৬ লাখ টাকা ঘুষ কেলেংকারি
সাদেককে প্রধান আসামী করে ৩ নার্সের বিরুদ্ধে ওসমানী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মামলা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১১ জানুয়ারি ২০২৪, ৩:২৩:১৬ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ঘুষ কেলেংকারির মূল হোতা বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএনএ) সাধারণ সম্পাদক ইসরাইল আলী সাদেকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গত মঙ্গলবার রাতে সিলেট কতোয়ালি থানায় এ মামলা করেন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ হানিফ। মামলায় প্রধান আসামি হলেন ইসরাইল আলী সাদেক। সে হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স (পুরুষ) ও বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএনএ) সাধারণ সম্পাদক। অপর দুই আসামি সিনিয়র স্টাফ নার্স মো. আমিনুল ইসলাম ও সিনিয়র স্টাফ নার্স সুমন চন্দ্র দেব।
এরআগে ৯ জানুয়ারি দুপুর ১২টার দিকে ঘুষের ৬ লাখ টাকাসহ মামলার অপর দুই আসামিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে আটক করেন ডিজিএফআই সদস্যরা। ওসমানী হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এই তিনজনের বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়া, বদলি করানো, আউটসোর্সিং নিয়োগ দেওয়া, সরকারি ওষুধ বাইরে পাচারসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকা-ের মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করে মামলা করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত সিনিয়র স্টাফ নার্স গীতা রানী হালদারের গত আট বছরের প্রাপ্য ৩৪ লাখ টাকা বকেয়া বিল করে দেওয়ার বিনিময়ে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন সাদেক। পরে গীতাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ও চাপ দিয়ে ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিতে রাজি করান। এরপরে গীতা তাকে অগ্রিম ৫০ হাজার টাকা দেন। পরে ৯ জানুয়ারি দুপুর ১২টার সময় সাদেকের দাবি করা বাকি ৬ লাখ টাকা আমিনুলের কাছে জমা দেন গীতা। তখন একটি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা আমিনুলকে নগদ ৬ লাখ টাকাসহ আটক করেন। পরে আমিনুলের দেওয়া তথ্যমতে সুমনকে আটক করা হয়।
আটকদের পুলিশে সোপর্দ করা হলে তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সাদেকের নির্দেশনায় ও অজ্ঞাত আরও কয়েকজনের যোগসাজসে দীর্ঘদিন যাবত এসব অবৈধ কাজ করে আসছেন তারা।
মামলার বাদী হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ হানিফ বলেন, ‘সাদেক বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি, দালালি, অর্থ আত্মসাৎ করে বিপুল অর্থ-সম্পদ অর্জন করেছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনসহ অন্যান্য দপ্তরে তার বিরুদ্ধে একাধিক তদন্ত চলছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে আমরা সিলেট কতোয়ালি থানায় এজাহার করেছি।’
কতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন বলেন, ‘সাদেকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে মামলা করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর আগে ডিজিএফআই সদস্যরা এই হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্সদের (পুরুষ) অর্থসহ আটক করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করে। মামলার প্রধান আসামি ইসরাইল আলী সাদেক পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।