বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আবদুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদীর ইন্তেকাল
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২০ জানুয়ারি ২০২৪, ১:০০:৪৭ অপরাহ্ন

অনলাইন ডেস্ক : সিলেটের কৃতি সন্তান, দেশের প্রবীণ আলেম লেখক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আবদুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহধন্য ছিলেন। দীর্ঘদিন গণভবন ও সচিবালয় মসজিদে ইমাম ও খতিবের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ জমিয়াতুল মুদাররেসিনের সাবেক সভাপতি ছিলেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের লেখক, গবেষক ও সম্পাদক ছিলেন। তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড পুনর্গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখেন।
গত ১২ জানুয়ারি রাতে তিনি স্ট্রোক করলে তাকে আগারগাঁও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।
মাওলানা আবদুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী ১৯৪২ সালের ২৯ মে সিলেটের সদর উপজেলার টুকেরবাজার এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সিলেট সরকারি আলিয়ায় পড়াশোনা করেন। পরে ঢাকায় এসে ঢাকা সরকারি আলিয়া মাদরাসায় পড়াশোনা সম্পন্ন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তিনি উচ্চতর ডিগ্রি নেন।
লেখক ও গবেষক হিসেবে তিনি দেশে-বিদেশে পরিচিত ছিলেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে তার লিখিত, অনূদিত ও সম্পাদিত অনেক বই প্রকাশিত হয়েছে। সব মিলিয়ে তার বইয়ের সংখ্যা শতাধিক। এছাড়াও তিনি দীর্ঘদিন মহানবী সা.-এর জীবনীর ওপর প্রতি বছর ধারাবাহিকভাবে স্মরণিকা প্রকাশিত করেছেন।
তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকে তার স্মৃতিচারণ করে শোক জানিয়েছেন।
মাওলানা আবদুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী আল-আযহারী দুই মেয়ে, তিন ছেলের জনক । বিভিন্ন দৈনিক ও মাসিক পত্রিকায় তার শত শত প্রবন্ধ ছাপা হয়েছে। তার লিখিত, অনূদিত, সম্পাদিত পুস্তকাদির সংখ্যা শতাধিক। ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ সরকার ১৯৮৬ সালে উচ্চতর ইমাম ট্রেনিংয়ের জন্য সর্বপ্রথম যে দলকে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছিল, তিনি ছিলেন ওই দলের অন্যতম সদস্য।
সদালাপী হিসেবে তার ব্যাপক সুনাম রয়েছে। আলেম সমাজে তার গ্রহণযোগ্যতা ছিল প্রশ্নাতীত। দীর্ঘ জীবনে তিনি আল্লামা যফর আহমদ উসমানি (রহ.) ও মুজাহেদে আজম আল্লামা শামছুল হক ফরিদপুরী (রহ.)-সহ অসংখ্যা আলেমের সান্নিধ্য পেয়েছিলেন।
তার লিখিত গ্রন্থের অন্যতম হলো- বঙ্গবন্ধুর মহানুভবতা ও ইসলামপ্রীতি, রাসুলুল্লাহর পত্রাবলি সন্ধি চুক্তি ও ফরমানসমূহ, মাওলানা আজাদের তাফসির ২ খণ্ড (১০০০ পৃ.), রাসুলুল্লাহর হজ ও উমরা অন্যতম। তিনি ১৯৭৮-২০১৬ পর্যন্ত দীর্ঘ ৩৮ বছর মহানবী স্মরণিকার সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন।