বালু উত্তোলনের প্রস্তুতি নেয়ায় ক্ষোভ
রাজনগরে কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গন রোধে অর্ধ কোটি টাকার প্রকল্প
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৩৬:১১ অপরাহ্ন
রাজনগর (মৌলভীবাজার) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা: রাজনগরে কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গন এলাকা মেরামতের টেন্ডার হলেও একই স্থানে নদী খনন করে বালু উত্তোলনের প্রস্তুতি চলছে। বঙ্গ ড্রেজার লি. কো. নামের এক প্রভাবশালী চক্র ইতিমধ্যে বালু তোলার যন্ত্রপাতি নিয়ে এলে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্য ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, ঐ এলাকায় ভাঙ্গন মেরামতের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রায় অর্ধ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সুযোগ বুঝে এই এলাকায় বালু উত্তোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বালু খেকোরা। কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলন করলে সরকারের অর্ধ কোটি টাকা জলে যাবে। বাড়বে নদীর ভাঙ্গন। এমনটাই মনে করছেন এলাকাবাসী। ইতিমধ্যে শতশত বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগিরা।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাজনগর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের বেড়কুড়ি, হামিদপুর শাহাপুর, আব্দুল্লাহপুর, জাহিদপুর, কাশিমপুরসহ নদী পারের ১২-১৬টি গ্রামে ভাঙন রয়েছে। গত বছর হঠাৎ করে বেড়কুড়ি এলাকায় বিরাট ভাঙ্গন দেখা দেয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালকের কাছে ৩শ’ মিটার মেরামতের জন্য এক কোটি ৪৮ লক্ষ টাকার একটি মেরামত প্রকল্প পাঠায় মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে, ৪২ লক্ষ টাকার প্রকল্প পাস হয়। সম্প্রতি টেন্ডার আহ্বান করলেও তা ১২ ফেব্রুয়ারী ওপেন করা হবে। কিন্তু এরই মাঝে ওই এলাকায় হাজির হয়েছে নদী খননের জন্য ড্রেজার। বঙ্গ ড্রেজার লি: কোম্পানি নদী থেকে বালু উত্তোলন করবে বলে জানা গেছে।
ওই কোম্পানির স্থানীয় ইঞ্জিনিয়ার হাসানুর রহমান জানান, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ৭ বছরের জন্যে নদী খননের চুক্তি করেছে। এর আওতায় তারা এখানে খনন কাজে এসেছেন। তিনি বলেন, নদী খনন করে বালু তারা বিক্রি করবেন না। ওই বালু নিচু এলাকা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দেয়া হবে।
এদিকে, ঐ এলাকায় প্রতি বছরই একটি চক্র বিভিন্ন অজুহাতে নদী থেকে বালু তুলে বিক্রি করে থাকে। উপজেলা প্রশাসন বেশ কয়েকবার এদের আটক করে আইনি ব্যবস্থা নেন। এরপরও থেমে থাকেনি ওই চক্রটি। সুযোগ বুঝে বিভিন্ন অজুহাতে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে তারা। এতে কুশিয়ারা নদী পারের ১২-১৬টি গ্রামে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়।
এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল বলেন, ঐ এলাকায় ভাঙ্গন প্রতিরোধে ৪২ লক্ষ টাকার টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। আগামী ১২ তারিখ তা ওপেন করা হবে। ওই এলাকায় বালু উত্তোলন করা হলে মেরামত কাজ দুর্বল হয়ে পড়বে। খননের কোন কাগজ আমার কাছে এখনো আসেনি।
রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুপ্রভাত চাকমা বলেন, নদী ভাঙ্গন মেরামত করার জন্য পাউবো টেন্ডার দিয়েছে। কাজের সঠিক মান নিশ্চিত করা হবে। আর নদী খননের বিষয়টিতে বাধা দেয়া হয়েছে। এসিল্যান্ডকে বলা হয়েছে বিষয়টির সার্বক্ষণিক নজর রাখার জন্য। অবৈধ বালু উত্তোলন করা হলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।