চালের দাম বাড়ায় বিপাকে স্বল্প আয়ের মানুষ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:৪৫:৩৪ অপরাহ্ন
সুনীল সিংহ :
সিলেটের বাজারে চালের দর স্থিতিশীল রয়েছে। বেশ কিছুদিন থেকে চালের অধিক মূল্যের কারণে স্বল্প আয়ের লোকজন সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। দাম কমার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছেনা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মৌসুমের শুরুতে মিল মালিকেরা চালের দাম বাড়িয়েছেন। তবে মিল মালিক ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, বাজারে ধানের সরবরাহ কমায় বেড়েছে চালের দাম।
ব্যবসায়ীরা জানান, দেশীয় চালের উপর নির্ভর করলে দর বাড়তে পারে। কারণ, চাষের সামগ্রী যেমন-সার, কীটনাশক ও শ্রমিক মজুরি বেশি, ফলে ধান চাষে খরচও বেশি পড়ে। তাই ধানের দরও তুলনামূলক বেশি হচ্ছে। শিগগির চাল আমদানি শুরু হলে চালের দর সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে।
বাজারে চাল কিনতে আসা স্বর্ণকার ও ব্যবসায়ী জুয়েল বণিক জানান, চালের দাম বেশি থাকায় আর ব্যবসা-বাণিজ্য না থাকায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। চালের পাশাপাশি অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসেরও দর বেশি।
চালের ক্রেতা রব্বানী আহমদ জানান, চালের দর না কমায় দিশেহারা স্বল্প আয়ের মানুষ। সম্প্রতি আমন ধানের মৌসুম গেলেও চালের দর কমছে না চাল সিন্ডিকেটের কারণে। দেশে সকল নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য এখন সিন্ডিকেটের হাতে। সিন্ডিকেট এসব পণ্যের দর নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
তিনি আরো জানান, দর না কমার অন্যতম কারণ হলো সিলেটের বাজার এখন চাঁদাবাজদের দখলে। পত্রপত্রিকায় দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
কালিঘাটের চাল ব্যবসায়ী বাবুল দেব জানান, মোটা সিদ্ধ ৫০ কেজি বস্তা ২২০০ টাকা, জিরা সিদ্ধ ৫০ কেজি বস্তা ৩৩৫০ টাকা, মিনিকেট সিদ্ধ ৫০ কেজি বস্তা ২৬০০ টাকা, নাজিরশাইল ২৫ কেজি বস্তা ১৬০০ টাকা, নতুন রনজিত ৫০ কেজি বস্তা ২২০০ টাকা, ২৮ মালা বৈশাখী ৫০ কেজি বস্তা ২৯৫০ টাকা, ২৯ মালা ৫০ কেজি বস্তা ২৬৫০ থেকে ২৭০০ টাকা, মিনিকেট আতপ ৫০ কেজি বস্তা ২৭৯০ টাকা, নরমাল কাটারি ৫০ কেজি বস্তা ২৫৫০ টাকা, কাটারিভোগ ২৫ কেজি বস্তা ১৫৫০ থেকে ১৬০০ টাকা, লোকাল চিনিগুঁড়া ২৫ কেজি বস্তা ১৬০০ টাকা ও ১ নম্বর চিনিগুঁড়া ৫০ কেজি বস্তা ৬৫০০ থেকে ৬৬০০ টাকায় বিক্রি করছেন।
সোনার বাংলা অটো রাইস মিল এর কালিঘাটস্থ দোকানের ম্যানেজার রুমন দেব জানান, তাদের দোকানে মুক্তা ৫০ কেজি বস্তা ২০৫০ থেকে ২০৬০ টাকা, ৫০ কেজি বস্তা হীরা মোটা সিদ্ধ ২১৮০ থেকে ২২০০ টাকা, কাজল লতা সিদ্ধ (পুরান) ২৮০০ টাকা, স্বর্ণা পারিজা সিদ্ধ ৫০ কেজি বস্তা ২৪০০ থেকে ২৪৫০ টাকা, জিরা সিদ্ধ ৫০ কেজি বস্তা ৩০৫০ থেকে ৩১০০ টাকা, এস আলম কোম্পানির নতুন মিনিকেট ২৫২০ টাকা, রনজিত (নতুন) ২২২০ টাকা, নতুন ৪৯ লোকাল ৫০ কেজি বস্তা ২২৭০ টাকা, পুরান মালা-(২৯) লোকাল সুনামগঞ্জী ২৫৫০ থেকে ২৬০০ টাকা, পুরান মালা-২৮ (ময়মনসিংহ) ২৭৫০ থেকে ২৮২০ টাকা, ৫০ কেজি বস্তা প্রতি আতব স্বর্ণা কাটারি ২৫৫০ টাকা, কাটারিভোগ ৩৩০০ থেকে ৩৪০০ টাকা, ৯০ চিনিগুঁড়া ৫০ কেজি বস্তা ৩৪০০ টাকা, ১ নম্বর চিনিগুঁড়া ৬০০০ টাকায় বিক্রি করছেন।
ব্যবসায়ীরা মনে করেন, চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে সরকারকে দ্রুত বাজার তদারকিতে নামতে হবে। এই তদারকি হতে হবে সরবরাহ ব্যবস্থার একেবারে গোড়া থেকে শুরু করে সব পর্যায়ে।