সিলেটে পরিবহন ধর্মঘটে পথে পথে জনদুর্ভোগ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ৩:৩৬:৩৬ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার : গ্যাসের সংকট নিরসনসহ ৫ দফা দাবিতে সিলেটে আজ বুধবার ভোর ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছে পরিবহন শ্রমিকরা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীসহ এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীরা।
সিলেট নগরীসহ সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক প্রায় যানবাহন শুন্য রয়েছে। মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে যাত্রীরা যানবাহনের অপেক্ষা করেও পাচ্ছেন না। সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদ এই কর্মসূচী পালন করছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সসম্পাদক মো: জাকারিয়া জানিয়েছেন, পরীক্ষার্থী ও বিদেশযাত্রী, রোগীবাহী গাড়ি এই কর্মসূচীর বাইরে রয়েছে। তিনি চলমান এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থী পরিবহনের গাড়ি চলাচলে বাধা না দেয়ার জন্য শ্রমিকদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
সরেজমিনে সিলেট কুমারগাও বাসস্ট্যান্ডে দেখাযায়, সকাল থেকে দূরপাল্লার কোন বাসা ছেড়ে যায়নি। যাত্রীদের অপেক্ষা করতে দেখা যায়। সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালেও একই পরিস্থিতি। এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার্থীদের পায়ে হেটে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে দেখা যায়।
নগরীর মদীনা মার্কেটে কথা হয় আরিফ আহমদ নামের এক ব্যক্তির সাথে। তিনি বলেন, শ্রমিকরা যে কতটা বিবেকহীন, আজকের দৃশ্য না দেখলে বুঝতেই পারতাম না। তিনি জানান, অনেক পরীক্ষার্থী সময় মতো কেন্দ্রে পৌছতে পারবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। কারন সড়কে গণ পরিবহন নেই।
পরীক্ষার্থীদের বহনকারী সিএনজি অটোরিকশা চালক রফিক বলেন, আপন বোন ছিলো পরীক্ষার্থী। এর জন্য ঝুঁকি নিয়েই গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছি। সাথে বোনের সহপাঠী পরীক্ষার্থীদেরও নিয়ে এসেছি। এখন খালি গাড়ি নিয়ে বাড়ি ফেরার নিশ্চয়তা পাচ্ছিনা। পথে পথে বাধা রয়েছে। এরজন্য পরীক্ষা শেষ হলে পুনরায় ওদের নিয়েই বাড়ি ফিরবো। অন্যদিকে কর্মজীবী বিশেষ করে স্কুল কলেজের শিক্ষকদের কর্মস্থলে পৌঁছাতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এর আগে রোববার সিলেট কোর্ট পয়েন্টে মানববন্ধন কর্মসূচিতে আজ বুধবার থেকে কর্মবিরতি ঘোষণা করে ঐক্য পরিষদ। সিলেট জেলা বাস—মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন ধরে সিলেটে প্রতি মাসের ১৮—২০ তারিখের পর থেকেই ‘লিমিট’ শেষ হয়ে যায় সিলেটের সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোর। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন সিএনজিচালিত গাড়ির চালকরা। এছাড়া সড়কের যানবাহন কম চলাচল করায় ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী সাধারণরাও।
ময়নুল ইসলাম বলেন, সিলেটে বর্তমানে গ্যাসের তীব্র সংকট চলছে। প্রতিদিন বিভিন্ন সিএনজি পাম্পে গ্যাস নেয়ার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও গ্যাস পাচ্ছে না পরিবহন শ্রমিকরা। গত কয়েক বছরে গ্যাস সংকট সমাধানের লক্ষ্যে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, স্থানীয় মন্ত্রী ও এমপিদের কাছে বার বার ধর্ণা দিয়েও সমাধান মিলছে না। বেশ কয়েকবার আন্দোলনও করা হয়েছে। কিন্তু কাজে আসেনি। ফলে বাধ্য হয়েই তারা এবার আন্দোলনে নেমেছি।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সসম্পাদক মো: জাকারিয়া বলেন, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ‘মিথ্যা’ মামলায় শ্রমিকদের জড়িয়ে হয়রানি করে যাচ্ছে প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা। এ দুটি প্রধান দাবিসহ ৫ দাবিতে বাধ্য হয়েই আজ বুধবার থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে গিয়েছি। তিনি বলেন, শ্রমিকরা যাতে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে যাওয়া নিশ্চিত করে, তার নির্দেশনা দেয়া রয়েছে। দাবি না মানলে প্রয়োজনে পুরো বিভাগ অচল করে দেয়া হবে বলেও তিনি হুমকি দেন।