রাজনগর চা বাগানে আন্তর্জাতিক ভাষা, সাহিত্য উৎসবে এমপি জিল্লুর
‘চা শ্রমিকদের ভাষা, সংস্কৃতি রক্ষায় কমপ্লেক্স স্থাপন করা হবে’
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ মার্চ ২০২৪, ৫:৪৫:৫১ অপরাহ্ন
চা শিল্পের উন্নয়নে নির্ভরশীল শ্রমিকদের জীবনমান : দানবীর ড. রাগীব আলী
রাজনগর (মৌলভীবাজার) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান বলেছেন, চা শ্রমিকদের জীবন মান উন্নয়নের জন্য আমি সংসদে প্রতিটি বাগানে একটি করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের কথা তুলে ধরবো। চা বাগান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে যদি ভূমি পাওয়া যায়, তা হলে তাদের ভাষা, সংস্কৃতি রক্ষার জন্য কমপ্লেক্স স্থাপন করা হবে। তাদের দক্ষতা অর্জনের জন্য সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন সংসদ সদস্য। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারই চা শ্রমিকদের ভোটের অধিকার দিয়েছিল। বর্তমান চা শ্রমিক বান্ধব সরকার সব সময় চা শ্রমিকদের পাশে আছে এবং থাকবে।
গতকাল রোববার মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার রাজনগর চা বাগানে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় চা জনগোষ্ঠির ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সংরক্ষণ বিকাশের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক ভাষা,সাহিত্য উৎসব পালন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন।
রাজনগর চা-বাগানের বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে চা-জনগোষ্ঠী উন্নয়ন ফোরাম এই উৎসবের আয়োজন করে। উৎসব পরিচালনা কমিটির সভাপতি মহেশ রাম যাদবের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন
সিলেটের প্রথম বেসরকারি মেডিকেল কলেজ জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ এবং লিডিং ইউনিভার্সিটিসহ অসংখ্য শিক্ষা ও সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, দৈনিক সিলেটের ডাক-এর সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি দানবীর ড. রাগীব আলী। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেটস্থ সহকারী ভারতীয় হাই কমিশন-এর দ্বিতীয় সচিব মানস কুমার মুস্তাফী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দানবীর ড. রাগীব আলী বলেন, বাজারে চায়ের দর পতনের কারণে আমরা বাগান পরিচালনায় হিমসিম খাচ্ছি। চায়ের বাজার দর না বাড়লে শ্রমিকদের জীবনমান উন্নত করা সম্ভব নয়। তারপরও আমরা শ্রমিকদের সুখে দুখে পাশে আছি,পাশে থাকবো। তাদের শিক্ষা চিকিৎসা বাসস্থানের ব্যাপারে আমরা খুবই যতœশীল। চা শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধি না হলে টার্গেট অনুযায়ী চা উৎপাদন এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।
আমন্ত্রিত অতিথি মানস কুমার মুস্তাফী বলেন, বাংলাদেশের সাথে আমাদের বহু দিনের সম্পর্ক রয়েছে। এ দেশের চা জনগোষ্ঠীর ভাষার সাথে ভারতের অনেক প্রদেশের বাসিন্দাদের ভাষার মিল রয়েছে। তাই চা শ্রমিকদের ভাষার সাথে আমরা পরিচিত। উনারা যে ভাষায় কথা বলছেন আমরা সব গুলোই জানি। তেলি ভাষা, ভারতের অন্দ্র প্রদেশের নাইডুসহ আরো অনেক ভাষাভাষির মানুষ আছেন। আমি আনন্দিত ও গর্বিত যে বাংলা ভাষার পাশাপাশি চা জনগোষ্ঠীর ভাষার চর্চা চলছে। চা জনগোষ্ঠীর ভাষা সংরক্ষণের বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার সব সময় তাদের পাশে আছে। সরকারের সহযোগিতায় তা সংরক্ষণ হবে। সংস্কৃতি নিয়ে দু’দেশে আমরা এক সাথে যৌথভাবে সেমিনার প্রোগ্রাম করে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি।
সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত যাদবের সঞ্চালনায় অতিথিবৃন্দের মধ্যে আরো ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজমল হোসেন, রাজনগর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তি চক্রবর্তী ও টেংরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ টিপু খান। আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন নেপাল সরকারের প্রাক্তন বিদ্যুৎমন্ত্রী সত্য নারায়ন ভাগবত বিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুস সালাম, ভারতের রামপুরহাট কলেজের অধ্যাপক প্রদীপ অধিকারী, গবেষক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা শরীফুল ইসলাম, কলামিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মীর আব্দুল আলীম, নেপালের বুদ্ধি বাহাদুর বিশ্বকর্মা, ভিম বাহাদুর থিমিরে ও অভিযান বাংলাদেশের সভাপতি বনানী বিশ্বাস।