নদীভাঙ্গনের হুমকিতে ফসলরক্ষা বাঁধ
আজমিরীগঞ্জে নদী থেকে ড্রেজারে বালু উত্তোলন
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৪৯:৪৩ অপরাহ্ন
মো. আবু হেনা, আজমিরীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) থেকে : আজমিরীগঞ্জে ফের শুরু হয়েছে বালুখেকোদের তান্ডব। তবে এবার কোন ব্যক্তি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নয় সরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজের দোহাই দিয়ে চলছে অবৈধ ড্রেজারে বালু উত্তোলনের কাজ। কিছুদিন পূর্বে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এই সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের পর উত্তোলন বন্ধ থাকলেও গত তিন দিন যাবত পুনরায় শুরু হয়েছে বালু উত্তোলন।
সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ অংশের কুশিয়ারা নদী থেকে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের মেঘনা নদী পর্যন্ত নৌপথে কোন সরকারি ইজারাকৃত বালু মহাল না থাকলেও আজমিরীগঞ্জ এবং কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামের মধ্যাঞ্চলের নদী থেকে অবৈধভাবে তোলা হচ্ছে এই বালু। এতে করে পুনরায় কাকাইলছেও এর বদরপুর, বদলপুরের পিরোজপুর গ্রামসহ সরকারি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কৃষকের ফসলরক্ষা বাঁধ নদীভাঙ্গনের হুমকিতে পড়বে বলে আশঙ্কা করেছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে পৌরসদরের ভাটি সমীপুর এলাকা সংলগ্ন কাকাইলছেও সড়কে গিয়ে দেখা গেছে, নদীর পাড় থেকে কৃষি জমি ও সড়কের উপর দিয়ে প্রায় ১ হাজার মিটার মোটা পাইপ বসিয়ে ড্যাম্পিং স্টেশনে ফেলা হচ্ছে বালু।
জানা গেছে, কিছুদিন পূর্বে পৌরসভার ডাম্পিং স্টেশনের ভবন ও ভবনে যাবার রাস্তা নির্মাণ কাজের দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে কাজ শুরু হয়। কাজটি পায় এবিএম নামের ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান যার তত্ত্বাবধানে রয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
এবিএম প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে উপজেলার কাকাইলছেও ইউনিয়নের সৌলরীর বাসিন্দা মোসাব্বির চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি বালু সরবরাহ ও ভরাটের দায়িত্ব নেন। এরই প্রেক্ষিতে গত ৪ এপ্রিল সন্ধ্যা থেকে নদীতে আনলোড মেশিন বসিয়ে বালু ভরাটের কাজ শুরু করেন মোসাব্বির।
গত ৫ এপ্রিল বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে স্থানীয়দের বাধার মুখে বালু ভরাটের কাজ বন্ধ করে সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু গত মঙ্গলবার সকালে পুনরায় বালু ভরাটের কাজ শুরু হয় ।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলাটি নিচু ভূমিতে অবস্থিত। যদি বালু ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করতে পারে, তাহলে তাদেরকে বালু তোলার অনুমোদন দেয়া হোক। তবে, উপজেলা প্রশাসন বলছে, অনুমতি নিতে হলে সরকারের নিকট আবেদন করতে হবে। সরকারি কাজের জন্য কোন ধরনের অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন পড়ে না।
স্থানীয় বাসিন্দা আক্তার মিয়া, আকবর মিয়াসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, নদীভাঙ্গনে এমনিতেই বসতবাড়ি সহ ফসলি জমি হুমকির মুখে। এখন বালুখেকোদের দৌরাত্ম্য পুনরায় শুরু হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে নদী পাড়ের কৃষকসহ সাধারণ মানুষ। এসময় অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে অভিযানের জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন তারা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুয়েল ভৌমিক জানান, পৌরসভার ড্যাম্পিং স্টেশনের রাস্তা নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। তবে বালু তোলা বা আনলোড করতে কাউকে অনুমতি দেয়া হয়নি বলেও জানান তিনি। সরকারি কাজের জন্য কোন অনুমতি নিতে হয় না।