দিরাইয়ে কৃষকের মুখে নেই আনন্দ
খরচের তুলনায় ধানের দাম কম
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ মে ২০২৪, ১২:৪৭:৪০ অপরাহ্ন
উবাইদুল হক, দিরাই (সুনামগঞ্জ) থেকে : সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে একমাত্র কৃষি ফসল সোনালী ধান কাটা শেষ হয়েছে। ধান ও গবাদিপশুর খাদ্য তোলা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। প্রখর রোদে পুড়ে ধান শুকানোর পাশাপাশি গবাদিপশুর খাদ্য খড় সংগ্রহে দিনরাত ব্যস্ত হাওরের কৃষক পরিবারের লোকজন।
এ বছরে বোরো মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন পেয়েও তাদের মুখে নেই আনন্দের হাসি। ফলন ভালো হলেও সার, কীটনাশক, ধান কাটা শ্রমিকসহ অন্যান্য খাতে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হয়েছে। খরচের তুলনায় ধানের দাম কম। ফলে ধানের দাম না বাড়লে লাভ তো দূরের কথা-এ দামে উৎপাদন খরচ উঠবে কি না তা নিয়ে এখন শঙ্কায় কৃষক। ইতোমধ্যে অনেক কৃষক সুদী মহাজন ও বিভিন্ন এনজিওর টাকা পরিশোধ করতে বাজার দর ৮-৯’শ টাকায় ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নের ১৬টি হাওর ঘুরে দেখা গেছে, ধান কাটা শেষ, রোদে শুকিয়ে ধান ঘরে তোলার পাশাপাশি গবাদি পশুর খাদ্য খড় তোলায় ব্যস্ত কৃষকরা। প্রচন্ড তাপদাহ উপেক্ষা করে দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছেন। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত মাঠেই ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
উপজেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৩০ হাজার ১৯২ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। ইতোমধ্যে হাওরের শতভাগ জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে, চলছে ধান শুকানো ও গবাদিপশুর জন্য খড় সংগ্রহের কাজ।
উপজেলার রফিনগরের সামন্ত দাস, ভাটিপাড়ার নাজমুল হক, রাজানগরের তাপস দাস, করিমপুরের মোহন, কুলঞ্জ ইউনিয়নের পাবেল সহ বিভিন্ন গ্রামের কৃষক জানান, এ বছর উফশী ও হাইব্রিড ধানের চাষ বেশি হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন হয়েছে। তবে ধানের উপযুক্ত দাম পেলে কৃষকের মুখে হাসি ফুটবে।
পৌর শহর এলাকার কৃষক মুরাদ মিয়া জানান, ধানের ফলন ভালো হয়েছে। খরচের তুলনায় ধানের দাম কম। দাম বাড়ানো উচিত। দাম না বাড়ালে কৃষক বাঁচবে না।
উপজেলা খাদ্য গুদামের ওসি এলএসডি মফিজুর ইসলাম জানান, এবারে ধানের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১২৮০ টাকা। ৭ মে আবেদনের উদ্বোধন ১৬ মে শেষ ও ১৭ মে থেকে ক্রয় শুরু হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনোরঞ্জন অধিকারী জানান, এবার আবহাওয়া বোরো ধান চাষের উপযোগী ছিল। উপজেলায় হাওর ও নন-হাওরে ৯৯ দশমিক ১০ ভাগ জমি কর্তন শেষ হয়েছে।