সিলেট প্রেসক্লাবে ব্যারিস্টার নাজির আহমদ
‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি জটিলতায় ভোগান্তিতে কয়েক লাখ প্রবাসী’
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ মে ২০২৪, ৫:২১:১৮ অপরাহ্ন
ডাক ডেস্ক : বাংলাদেশ সরকারের নতুন আইনি জটিলতায় পাওয়ার অব অ্যাটর্নি ইস্যু করতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা কয়েক লাখ প্রবাসী। এ সমস্যার সমাধান না হলে দেশে প্রবাসীদের ব্যবসা-বিনিয়োগসহ নানা ক্ষেত্রে স্থবিরতা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার নাজির আহমদ।
তিনি বলেন, ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি ইস্যুর ক্ষেত্রে বাংলাদেশি পাসপোর্ট থাকার বাধ্যবাধকতা ও সশরীরে উপস্থিত হওয়ার যে নিয়ম করা হয়েছে তাতে ব্রিটেনে বসবাসরত বাংলাদেশিরা চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন। বিশেষত বয়ো:জ্যেষ্ঠ ও শারীরিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তিরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার। এ নিয়ে প্রবাসী বাঙালিদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।’
তিনি জানান, ‘সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়, হস্তান্তর, বণ্টন, মামলা দায়ের ও মামলা পরিচালনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি প্রয়োজন পড়ে। আগে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি ইস্যুর ক্ষেত্রে সশরীরে দূতাবাসে উপস্থিত হওয়ার বিধান ছিল না। বৃটেন থেকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিতে আইডিসহ যে কোনো ব্যারিস্টার বা সলিসিটরের সামনে গিয়ে দস্তখত করতে হতো। পরে ফরেন এন্ড কমনওয়েলথ অফিস থেকে লিগেলাইজেশন করে ব্যারিস্টার বা সলিসিটরের উপস্থিতিতে হাইকমিশন থেকে অ্যাটাস্টেশন করা হতো। গত কয়েকবছর ধরে এটি বাধ্যতামূলক ও গত ২ বছর থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
প্রবাসী বাঙালিদের বরাত দিয়ে ব্যারিস্টার নাজির আরও বলেন, ‘ব্রিটিশ পাসপোর্ট থাকার পরও বাংলাদেশি পাসপোর্ট থাকা বাধ্যবাধকতা করায় প্রবাসীরা আবার পাসপোর্ট করতে করতে গিয়েও অনেকে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। পাসপোর্টের জন্য আবেদন করলে ৬ থেকে ৮ মাস বা তার চেয়ে বেশি সময় অপেক্ষা করেও পাওয়া যাচ্ছে না। অসুস্থ অনেকে সশরীরে উপস্থিত হতে অক্ষম হলে তার কাজ সম্পাদন করার সুযোগ থাকে না।’
যে কোনো স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের ইস্যুকৃত পাসপোর্টই সর্বোচ্চ আইডি উল্লেখ করে ব্যারিস্টার নাজির বলেন, ‘ব্রিটিশ পাসপোর্টে যাদের ‘নো ভিসা রিকয়ার্ড’ স্টিকার আছে-তাদেরকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি করতে আলাদা পাসপোর্ট করার বাধ্যবাধকতা অমূলক। বাংলাদেশি নাগরিকত্ব বা পিতামাতার নাগরিকত্ব বা বাংলাদেশের সাথে যথাযথ যোগাযোগের প্রকৃত প্রমাণপত্রের ভিত্তিতেই এ স্টিকার ইস্যু করা হয়। এতকিছুর পরও কেনো পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিতে বাংলাদেশি পাসপোর্ট বাধ্যতামূলক তার ব্যাখ্যা আজও পাওয়া যায়নি। এটা বাংলাদেশি প্রবাসীদের সম্পত্তি রক্ষা ও অধিকার দিন দিন সংকুচিত করে দিচ্ছে।’
জটিলতা তৈরি করায় বাংলাদেশে বিনিয়োগে প্রবাসীরা আগ্রহ হারাচ্ছেন বলে মনে করেন ব্যারিস্টার নাজির। তিনি বলেন, ‘নতুন নিয়ম করে প্রবাসীদেরকে বিড়ম্বনায় ফেলে, তাদের সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ ও ক্রয়-বিক্রয়ে অচলাবস্থায় প্রবাসীরা বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছেন। অন্যান্য দেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এসব জটিলতা নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন। ব্যারিস্টার নাজির আহমদ এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রবাসীদের ভোগান্তি থেকে মুক্তি দিতে প্রধানমন্ত্রীর একটি সিদ্ধান্তই যথেষ্ট বলে মনে করেন।