পুলিশের পাশাপাশি অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে ॥ আইজিপি
সিলেটে কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে চাই জোরালো পদক্ষেপ, সিসিকের সুধী সমাবেশে বক্তারা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ মে ২০২৪, ৪:০২:৪৮ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার ॥ সিলেট নগরীতে কিশোর গ্যাংয়ের অপতৎপরতার বিষয়টি আইজিপি’র (ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ) নজরে আনলেন সিলেট বিশিষ্টজনেরা। জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা বলেন, সিলেটে কিশোর গ্যাং সদস্যরা নানামুখী অপকর্ম করে যাচ্ছে। তাদের কারণে সরকারি বিভিন্ন অর্জনও ম্লান হতে চলেছে। কাজেই, তাদেরকে নিয়ন্ত্রণের এখনই মোক্ষম সময়। জবাবে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বলেন, কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে। আপনার সন্তান কার সাথে মিশছে এবং নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছে কী না-সেদিকে নিয়মিত তদারকি করতে হবে।
গতকাল শনিবার রাত আটটায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অডিটোরিয়ামে সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) এর উদ্যোগে মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন-আইজিপি আব্দুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার) পিপিএম। এ অনুষ্ঠানে কিশোর গ্যাং প্রসঙ্গে অবতারণা করেন সিলেট নগরীর সচেতন মহল।
স্বাগত বক্তব্যে প্রথমেই কিশোর গ্যাংয়ের বিষয়ে আলোকপাত করেন সিসিকের প্যানেল মেয়র ও ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মখলিছুর রহমান। এরপর এ বিষয়ে বক্তব্য রাখেন সিলেট চেম্বার সভাপতি তাহমিন আহমদ এবং সিলেট সদর উপজেলার নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিকও। মখলিছুর রহমান কামরান বলেন, নগরীতে কিশোর গ্যাং এখন অপ্রতিরোধ্য। এরা নানা ধরনের অপকর্মের সাথে জড়িত। তাদের কারণে উন্নয়নও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এদেরকে নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে তিনি আইজিপি’র সহযোগিতা কামনা করেন।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আইজিপি কিশোর গ্যাং নির্মূলে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতির কারণে দেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ এখন প্রায় নির্মূল হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশের অনেক অক্লান্ত পরিশ্রম ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে এটি নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে। ভবিষ্যতেও যাতে এ অপশক্তি মাথাচাড়া দিয়ে না উঠতে পারে সেদিকেও নজর রাখছে পুলিশ। তিনি বলেন, সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা সম্ভব।
সিসিক মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর সভাপতিত্বে আয়োজিত এ সুধী সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছা হক, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট রনজিত চন্দ্র সরকার, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি শাহ মিজান শাফিউর রহমান, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার জাকির হোসেন খান, জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান, পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন, শিক্ষানুরাগী ও অর্থনীতিবিদ ড. আহমদ আল কবির।
সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সভাপতি রজত কান্তি গুপ্ত ও জান্নাতুল আশার যৌথ সঞ্চালনায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে সমাবেশ শুরু হয়। পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন সিসিক মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মুফতি জসিম উদ্দিন ও গীতা থেকে পাঠ করেন পাঠানটুলা দ্বিপাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ঈষি দাস।
সমাবেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ ১৫ আগস্টে সকল শহীদ, জাতীয় চার নেতা এবং শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি অডিও ভিজ্যুয়ালের মাধ্যমে প্রদর্শন ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ‘বদলে যাওয়া সিলেট’ প্রদর্শন করা হয়।
এসময় সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী ও প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান, বিভিন্ন ওয়ার্ড কাউন্সিলরবৃন্দ, সিসিক কর্মকর্তাবৃন্দসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ, বাংলাদেশ পুলিশের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ও শাবিপ্রবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীগণসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।