২৪ ঘণ্টায় ২৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড
সিলেটে বন্যার আশংকা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ মে ২০২৪, ৪:১৮:৫০ অপরাহ্ন
ডাক ডেস্ক : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি ঘূর্ণিঝড় রেমাল স্থল নিম্নচাপে দীর্ঘ সময় অবস্থানের পর অবশেষে লঘুচাপে রূপ নিয়ে সিলেট ছেড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সিলেট অঞ্চলে অবস্থান করা ঘূর্ণিঝড়টি পূর্বদিকে অগ্রসর ও ক্রমশ দুর্বল হয়ে লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বৃষ্টি ঝরিয়ে দুর্বল হয়ে যাওয়ার কথা জানায় আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে দেশের অভ্যন্তরে ও উজানে ভারতের রাজ্যগুলোতে বৃষ্টিপাত বেড়ে যাওয়ায় সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজারসহ ছয় জেলায় স্বল্পমেয়াদি বন্যার আভাস দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, রেমাল দেশের উপকূলে আঘাত হানার পর থেকে প্রায় ৫০ ঘণ্টা পর্যন্ত অবস্থান করে। শক্তি অনেকটা কম হলেও নিম্নচাপ আকারে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত এটি ছিল সিলেট অঞ্চলে। ঘূর্ণিঝড়টি স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়ে সিলেটে অবস্থান করায় সোমবার রাত থেকে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রবল মাত্রায় বৃষ্টিপাত ঘটায়। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত ৮৮ দশমিক ১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। এর আগে সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২৪৯ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়, সিলেট ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত স্থল নিম্নচাপটি পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ক্রমশ দুর্বল হয়ে সিলেট ও তৎসংলগ্ন আসাম এলাকায় লঘুচাপে পরিণত হয়। এটি আরো উত্তর-পূর্বদিকে অগ্রসর হয়ে বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমশ দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে আগামী দুই দিন বৃষ্টিপাত ও ঝড়ো হাওয়া অব্যাহত থাকতে পারে। পরবর্তী সময়ে সিলেট অঞ্চল দিয়ে ঘূর্ণিঝড় রেমাল বিলীন হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
এর মাঝেই সিলেটের জন্য আসলো আরেকটি দুঃসংবাদ। ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে ভারতের মেঘালয় পর্বতের চেরাপুঞ্জি এলাকায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। যার ফলে সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর জন্য বন্যা আশঙ্কা করা হচ্ছে। সিলেটের ওপর দিয়ে বয়ে চলা নদ-নদীর পানি ইতোমধ্যে বাড়তে শুরু করেছে।
ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে মেঘালয় রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে গত ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টি হয়েছে। গত দুইদিনে মেঘালয় পর্বতের চেরাপুঞ্জি এলাকায় ১ হাজার মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের ধারণা করা হচ্ছে। যার কারণে সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক ও সিলেট জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নদীগুলোতে পাহাড়ি ঢল নেমে আসার প্রবল আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গত ২২ মে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় সৃষ্ট লঘুচাপটি ধীরে ধীরে শক্তি সঞ্চয় করে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, নিম্নচাপ ও গভীর নিম্নচাপ হিসেবে অবস্থান করছিল। গত শনিবার সন্ধ্যায় গভীর নিম্নচাপটি পরিণত হয় ঘূর্ণিঝড় রেমালে। পরদিন রোববার সকালে ঘূর্ণিঝড়টি পরিণত হয় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে। ওইদিন বিকেলে ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগ স্থলভাগ স্পর্শ করে বাংলাদেশ উপকূল।