সিলেটের কুশিঘাটে ডুবে গেছে সড়ক, পানিবন্দি শতাধিক পরিবার
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ মে ২০২৪, ৪:৪১:০২ অপরাহ্ন
ইউনুছ চৌধুরী : সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৩২নং ওয়ার্ডের পূর্ব কুশিঘাট সড়কের প্রায় অর্ধ কিলোমিটার অংশে ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে ‘ডোবা-পুকুরে’ পরিণত হয়েছে। পানি ঠেলে রিকশা ও যানবাহন চলাচল দেখে এটিকে সড়ক বলে বোঝার উপায় নেই। জলে ডোবা সড়কের কারণে পানিবন্দি হয়ে আছেন স্থানীয় শতাধিক পরিবার। বছরের পর বছর এই অবস্থা চলতে থাকলেও সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয়রা। তারা সড়কটি দ্রুত মেরামতের দাবি জানান।
খানাখন্দ আর বড় বড় গর্তে দীর্ঘদিন ধরে বেহাল পূর্ব কুশিঘাট সড়ক দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন ব্যবসায়ী, চাকুরিজীবী, শিক্ষার্থী, নারী-শিশুসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষ। সংস্কারের অভাবে ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় ময়লা পানিতে হাঁটু সমান ডুবে থাকে সড়কটি। বর্ষায় এই দুর্ভোগ আরো বাড়ে বলে জানান স্থানীয়রা। পানি ঠেলে মোটরসাইকেল, ইজিবাইক ও অন্যান্য ছোট-বড় যানবাহনগুলো চলছে হেলেদুলে। অনেক সময় যানবাহন উল্টে অথবা হেলে গিয়ে যাত্রীরা পানিতে পড়ে বিব্রতকর অবস্থার পড়েন। পানিতে ভিজে মোবাইলসহ অনেক মূল্যবান পণ্য নষ্ট হয়ে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। অনেক সময় গাড়ির ইঞ্জিনে পানি প্রবেশ করে গাড়ি রাস্তায়ই বন্ধ হয়ে আটকে যাচ্ছে।
সরেজমিনে খোঁজ নিতে গেলে এলাকার চা স্টলের ব্যবসায়ী আমির হোসেন জানান, শুরুতে সড়কটি কার্পেটিংয়ের পাকা সড়ক থাকলেও, পরে সংস্কার করে ইটের সলিং করা হয়। এতে ভারি যানবাহন চলাচলের কারণে দ্রুত ইট উঠে গিয়ে সড়কের বিভিন্ন স্থানে তৈরি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। তিনি বলেন, রাস্তার পাশে ড্রেন কালভার্ট না থাকার কারণে পূর্ব কুশিঘাট এলাকার ১১০ পরিবার সবসময় পানিবন্দি রয়েছেন। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে সংস্কার না হওয়ায় এই পথে চলাচল করতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
একাধিক স্কুল শিক্ষার্থী জানায়, সড়কটি দিয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করতে তাদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। পানির নিচে থাকা গর্তে রিকশার চাকা পড়ে রিকশা উল্টে যাচ্ছে। বাসা থেকে বের হয়েই সড়কের পানিতে ড্রেস নষ্ট হয়ে যায়। এই অবস্থায় তাদের প্রতিদিন বিদ্যালয়ে যেতে হচ্ছে। খানা খন্দে ভরা সড়কটি দিয়ে কোন ধরনের যানবাহন যেতে চায় না। আর গেলেও অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হয় উল্লেখ করে ব্যবসায়ী হাজী দেলওয়ার হোসেন বলেন, রাস্তার পাশে ড্রেন কালভার্ট না থাকার কারণে পানিতে ডুবে থাকে সড়কটি। গর্ভবতী মা ও অসুস্থ রোগীদের এই রাস্তা দিয়ে নিয়ে যেতে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। তিনি সড়কটি দ্রুত সংস্কারে সিটি কর্পোরেশনের মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৩২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ রুহেল আহমদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সড়কটির বেহাল অবস্থার কথা তিনি জানেন। সড়কটি দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন। সড়কটি সংস্কারের জন্য সিটি কর্পোরেশনে আবেদন করা হয়েছে। যদি দ্রুত বরাদ্দ না পাওয়া যায় তবে অন্য স্থান থেকে বরাদ্দ এনেও সড়কটি সংস্কার করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলী আকবর জানান, নগরীর উন্নয়ন কাজের একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত অধিকাংশ উন্নয়ন কাজ নবগঠিত ওয়ার্ডের। প্রকল্প অনুমোদন হলেই কাজ শুরু হবে।