সিলেটে তিন লাখ মানুষ পানিবন্দি, ৪৭০ আশ্রয়কেন্দ্র চালু
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ মে ২০২৪, ১২:২৮:২৪ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক : ভারত থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা বৃষ্টিতে সিলেট জেলার পাঁচটি উপজেলায় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে জেলার ৫ হাজার ৬০১ হেক্টর জমির ফসল। এমন পরিস্থিতিতে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সিলেটের সব পর্যটন কেন্দ্র।
সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ বন্যাকবলিত হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে সিলেট-তামাবিল সড়ক। জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ অনেকটা বন্ধ হয়ে পড়েছে গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরের সঙ্গে।
সিলেট নগরীর বেশকিছু এলাকাতে ও বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। নগরীর মাছিমপুর, মেন্দিবাগ, আলমপুরে গতকালই বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। ঝুঁকিতে আছে নগরীর কালিঘাট, শেখঘাট, কাজির বাজারসহ বাণিজ্যিক এলাকাসমূহ।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসেন জানান, চলতি মাসে সিলেটে বৃষ্টিপাত হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। গত বছরের মে মাসে ৩৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। এবার মে মাসে হয়েছে ৭০৫ মিলিমিটার। এর আগে ২০২২ সালের প্রলয়ঙ্করী বন্যার সময়ে মে মাসে সিলেটে ৮৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল।
পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ জানান, সুরমা, কুশিয়ারা, সারি ও গোয়াইন নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে অন্যান্য নদ-নদীর পানিও বাড়ছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম জানান, উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের প্রায় ৪২ হাজার ৯০০টি পরিবার দুর্যোগ কবলিত। প্রায় আড়াই লাখ মানুষ দুর্ভোগে। এরমধ্যে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ২ হাজার ৩৫৬ জন আশ্রয় নিয়েছেন।
তিনি জানান, মানুষের পাশাপাশি ৬৪৫টি গবাদিপশুর আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। উপজেলায় ১০টি মেডিকেল টিম চালু করা হয়েছে। কৃষি জমি তলিয়ে গেছে ১ হাজার ৬৬০ হেক্টর।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান জানান, পানিবন্দি মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে ও নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে। জেলার পাঁচটি উপজেলায় জরুরি ভিত্তিতে প্রায় ৪৭০টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। প্রয়োজনে তা বাড়ানো হবে।
জেলা প্রশাসন জানায়, জেলায় জরুরি ভিত্তিতে ৪৭০টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এরমধ্যে গোয়াইনঘাটে ৫৬টি, জৈন্তাপুরে ৪৮টি, কানাইঘাটে ১৮টি, কোম্পানীগঞ্জে ৩৫টি, জকিগঞ্জে ৫৮টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। বাকি আশ্রয়কেন্দ্রগুলো অন্যান্য উপজেলায় রয়েছে।
গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন জানায়, আকস্মিক বন্যায় আটকে পড়াদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, ফায়ারসার্ভিস, আনসার ভিডিপি ছাড়াও জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক কর্মী, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, সামাজিক সংগঠন কাজ করছে।
জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালিক রুমাইয়া জানান, সেনাবাহিনী বিজিবি ফায়ার সার্ভিস পুলিশ উদ্ধার কাজ করছে, আমি সার্বক্ষণিক বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।