শাবি অর্থনীতি এলামনাই এসোসিয়েশনের প্রাক বাজেট আলোচনা
‘জাতীয় অর্থনীতির পালে হাওয়া লাগাতে পারে সিলেটের সম্ভাবনাময় অর্থনীতি’
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ মে ২০২৪, ২:৪২:৫৮ অপরাহ্ন
ডাক ডেস্ক : সিলেটের অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারলে তা জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। কিন্তু এজন্য সিলেটের অবকাঠামো উন্নয়ন জরুরি। গতকাল বৃহস্পতিবার সিলেটে অর্থনীতি এলামনাই এসোসিয়েশন শাবিপ্রবি আয়োজিত প্রাক বাজেট আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা এমন বক্তব্য তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সংসদ সদস্য শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, সিলেটে অনেক অলস অর্থ পড়ে আছে। এসব অর্থ বিনিয়োগ হলে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়বে। তিনি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার ওপর জোর দেন। প্রবাসী উদ্যোক্তা গ্রুপগুলোকে সংশ্লিষ্ট করে জনকল্যাণমূলক যৌথ প্রকল্প উন্নয়নে সুফল মিলবে বলেও তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, সিলেটের প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল, কয়লা, চুনাপাথর, সিলিকা বালি, পাথরের পাশাপাশি হাওরে উৎপাদিত মাছ ও ধান, চা শিল্প এবং প্রবাসী আয় দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখছে। সিলেটের এই আকাশচুম্বী সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। সরকারের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও দায়িত্বশীল হতে হবে। আওয়ামীলীগ বিরোধী দলে যখন ছিল ছায়া বাজেট ঘোষণা করতো। বিএনপি সংসদে এলে সংসদ আরও প্রাণবন্ত হতো বলে তিনি মন্তব্য করেন।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও অর্থনীতি এলামনাই এসোসিয়েশন শাবিপ্রবি’র সাধারণ সম্পাদক কাসমির রেজার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব ও সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি তাহমিন আহমদ।
হাবিবুর রহমান হাবিব এমপি বলেন, সিলেটে আয় বৈষম্য সবচেয়ে বেশি। সিলেটের মোট জনসংখ্যার ৮৩ ভাগ গ্রামে বাস করেন। সিলেট কে নিয়ে ভাবতে হলে এই গ্রামের জনগোষ্ঠীকে নিয়ে ভাবতে হবে। এদের অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করেই পরিকল্পনা প্রণয়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। তিনি সিলেটে একটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার উপর জোর দেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি তাহমিন আহমদ সেবা খাতে দক্ষতা অর্জনে তরুণদের আগ্রহী করা এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের বিষয়ে কার্যকর উপায় খুঁজে বের করতে পরামর্শ দেন। সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া সামগ্রিক পরিবর্তন আনা অসম্ভব বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
মূল প্রবন্ধে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ড সাদিকুন্নবী চৌধুরী বলেন, সিলেটে পর্যটনের সম্ভাবনা আকাশচুম্বী। পর্যটন হলো এমন এক খাত, যাতে কম বিনিয়োগে, প্রকৃতি ও পরিবেশকে অক্ষত রেখে দ্রুততম সময়ে ফল পাওয়া সম্ভব। প্রতি বছর দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ ছাড়াই লক্ষাধিক মানুষ এ অঞ্চলে ভ্রমণ করতে আসছে। অথচ তাদের দেখভালের জন্য সত্যিকার অর্থে কোনো অভিভাবক নেই। তাই আমার প্রস্তাব হলো, বৃহত্তর সিলেটের পর্যটন উন্নয়নে একটি স্বতন্ত্র সংস্থা (হতে পারে ‘সিলেট পর্যটন উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’) গঠন করা হোক।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, সিলেটের উন্নয়নে প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো কী কী এবং সেগুলো থেকে উত্তরণে করণীয় কি কি তা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ কিছু মতামত উঠে এসেছে। এসব বিষয়ে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে।
উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপক ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ, সাংবাদিক হাসিনা বেগম, অধ্যক্ষ ভাস্কর রঞ্জন দাস, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেট এর সভাপতি রজত কান্তি গুপ্ত, সুনামগঞ্জ সমিতি সিলেট’র সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ, সাংবাদিক মুক্তাদির আহমদ মুক্তা, পর্যটন ব্যবসায়ী হুমায়ূন কবির লিটন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রবাসী কল্যাণ কর্মকর্তা মাসুমা চৌধুরী রুমি, নারী উদ্যোক্তা সানজিদা আক্তার, সেলিনা চৌধুরী, শাবি শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান, গবেষক ড. শরিফ আহমদ, শাবিপ্রবি অর্থনীতি এলামনাই এসোসিয়েশনের প্রকাশনা সম্পাদক শেখ জিহান আসিফ, জেলা সমবায় কর্মকর্তা মোহাম্মদ রহিম উদ্দিন তালুকদার, সজীব দে রনি, ব্যাংক কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ, শতাব্দী পাল সুইটি, অধ্যাপক মোঃ জুলহাস আহমদ, দিদারুল ইসলাম, সাস্ট বিজনেস ক্লাবের সভাপতি রাকিব আহমেদ প্রমুখ।