সিলেটে জলাবদ্ধ এলাকায় খাবার পানির সংকট
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০২ জুন ২০২৪, ১:৩৩:০৯ অপরাহ্ন
![সিলেটে জলাবদ্ধ এলাকায় খাবার পানির সংকট সিলেটে জলাবদ্ধ এলাকায় খাবার পানির সংকট](https://sylheterdak.com.bd/wp-content/uploads/2024/06/syl-768x453.jpg)
অনলাইন ডেস্ক : জলাবদ্ধতার কারণে সিলেট নগরবাসী বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়েছে। তবে নদ-নদীর পানি ধীরে ধীরে কমতে থাকায় বন্যাকবলিত উপজেলাগুলোতে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
নগরের উপশহর, তের রতন, সোবহানীঘাট, মেন্দিবাগ, কাজিরবাজার এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। জলাবদ্ধ নগরের সোবহানীঘাট এলাকার মাধবী রানী নাথ শনিবার বিকেলে বলেন, ‘পানির মাঝে ভাসতাছি। না আছে খাওয়ার পানি, না আছে নাওয়ার (গোসলের) পানি, না আছে ব্যবহারের পানি। আমরা কিভাবে চলমু। সারা শরীরে চুলকাচ্ছে।’
বিশুদ্ধ পানি কিভাবে জোগাড় করছেন—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশন মাঝেমধ্যে ছাড়ে একটু পানি। তখন কোমর পানি ভেঙে গিয়ে খাওয়ার জন্য এক ফোঁটা পানি নিয়ে আসি। চার দিন ধরে এমন চলছে।’
দূরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে পানি সংগ্রহ করে বাসায় ফিরছিলেন এলাকার আরেক বাসিন্দা লায়েছ আহমদ। তিনি বলেন, ‘তিন দিন ধরে পানি নাই। সাপ্লাইয়ের পানি আধাঘণ্টা দিয়ে এরপর বন্ধ করে দেয়। এখানে ৩০০ থেকে ৪০০ পরিবার আছে। সবাই খাবার পানির সংকটে। গোসল করিনি তিন দিন হয়।’
এ বিষয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, ‘সিসিকের পানির লাইন অনেক এলাকায় ডুবে থাকায় পানি সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তবে আজকে (শনিবার) থেকে আমরা জলাবদ্ধ এলাকাগুলোর মানুষের মাঝে শুকনা খাবারের পাশাপাশি দুই লিটার করে পানি সরবরাহ শুরু করেছি।’
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীর পানি ধীরগতিতে কমতে পারে। এতে ধীরগতিতে হলেও সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার সকালে সিলেট জেলার দুটি নদীর পানি বিপত্সীমার ওপরে ছিল। সকাল ৯টায় কুশিয়ারা নদীর পানি জকিগঞ্জের অমলসীদ পয়েন্টে বিপত্সীমার ১৯৪ সেন্টিমিটার ও বিয়ানীবাজারের শেওলা পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ সময় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপত্সীমার ৮৫ সেন্টিমিটার ও সিলেট পয়েন্টে বিপত্সীমার সাত সেন্টিমিটার ওপরে ছিল।
এদিকে আজ বিকেলে জেলার নদ-নদীর পানি আরো খানিকটা কমেছে। বিকেল ৩টায় কুশিয়ারার পানি অমলসীদে ১৮৯ সেন্টিমিটার ও শেওলা পয়েন্টে সাত সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সুরমা নদীর পানিও কমে বিকেলে কানাইঘাট পয়েন্টে ৮২ সেন্টিমিটার ও সিলেট পয়েন্টে ছয় সেন্টিমিটার ওপরে ছিল।
জেলার গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এসব এলাকার নিম্নাঞ্চলে পানি এখনো থাকলেও তা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমছে। গোলাপগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণ সুরমা ও বিয়ানীবাজারে নদীর পানি নেমে গেছে।