শাবি ছাত্রলীগের দুই নেতা, কানাইঘাট আ’লীগের প্রচার সম্পাদক ও জুড়ীতে গ্রেফতার যুবলীগের লিজন
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ৬:১৯:৫০ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার: বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে হতাহত ও ছাত্র জনতার উপর হামলকারীদের গ্রেফতারে জোর তৎপরতা চলছে। বিভিন্নস্থানে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর অংশ হিসেবে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আশিকুর রহমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক অমিত শাহকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। অপর এক অভিযানে কানাইঘাট উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদককেও গ্রেফতার করা হয়েছে। জুড়ী উপজেলায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। র্যাব ৯ সূত্র জানায়, গতকাল মঙ্গলবার সকালে ময়মনসিংহ জেলার সদর থানা এলাকায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আশিকুর রহমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক অমিত শাহকে গ্রেফতার করা হয়। র্যাব-৯ এর মিডিয়া অফিসার সহকারী পুলিশ সুপার মো. মশিহুর রহমান সোহেল জানান, গ্রেফতার শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের দুই নেতাকে সিলেট কতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে। আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ১৮ জুলাই শাবি এলাকায় পুলিশের ধাওয়ায় পানিতে পড়ে মারা যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়টির ছাত্র রুদ্র সেন হত্যা মামলার আসামি তারা। এছাড়া আন্দোলনের সময় সিলেটে আরও কয়েকটি সহিংস ঘটনার অন্যতম আসামি এই দুই ছাত্রলীগ নেতা। অপরদিকে, সিলেট নগরীতে অভিযান চালিয়ে মীর আবদুল্লাহ (৩৭) নামের কানাইঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতাকে গ্রেফতার করে র্যাব। তিনি কানাইঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও কানাইঘাট উপজেলার বড়চতুল গ্রামের মঈন উদ্দিনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে কানাইঘাট থানায় আইনশৃঙ্খলা বিঘœকারী অপরাধ (দ্রæত বিচার) আইনে মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাব-৯ এর মিডিয়া অফিসার সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. মশিহুর রহমান সোহেল। মীর আবদুল্লাহকে কানাইঘাট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। অপরদিকে, মৌলভীবাজারের জুড়ীতে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় যুবলীগ নেতা নাজমুল আলম লিজনকে গ্রেফতার করেছে জুড়ী থানা পুলিশ। আমাদের জুড়ি প্রতিনিধি পুলিশের বরাত দিয়ে জানান, সোমবার রাতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম যুবলীগ নেতা লিজনকে উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের ফুলতলা বাজারের নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। মামলা সূত্রে জানা যায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ১৬ জুলাই এবং ৩ ও ৪ আগস্ট জুড়ী শহরে কর্মসূচি পালনকালে তিনদিনই সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে ৩ আগস্ট একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদেরকে বাঁধা দেয়। একপর্যায়ের হামলা চালিয়ে শিক্ষার্থীদের মারধর করা হয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। পরে এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ৬৩ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে গত (২৬ আগস্ট) বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমম্বয়কারী তারেক মিয়া বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। এ মামলার অজ্ঞাত আসামি হিসেবে যুবলীগ নেতা নাজমুল আলম লিজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এছাড়া গত ১৬ সেপ্টেম্বর জুড়ী উপজেলার ফুলতলা সীমান্তে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক ভারতে যেতে অবস্থান করছেন এমন খবরে যুবলীগ নেতা নাজমুল আলম লিজনের বাড়িতে কয়েকঘণ্টা অভিযান চালায় পুলিশ ও বিজিবি। এরপর থেকে তিনি নজরদারিতে ছিলেন।
গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সিরাজুল ইসলাম।