সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন
অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ।। বিলীন হওয়ার পথে জৈন্তাপুরের বড় গাং নদী তীরের কয়েকটি গ্রাম
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৫:২৬:৫১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে জৈন্তাপুর উপজেলার বড় গাং নদী তীরের কয়েকটি গ্রামের ঘরবাড়ি বিলীন হওয়ার পথে। এতে করে অস্তিত্ব হারাতে বসেছেন নিজপাট ইউনিয়নের অন্তর্গত নিজপাট (ময়নাহাটি), নিজপাট (জাঙ্গালঘাট), পূর্বলক্ষীপ্রসাদ, রূপচেং, গোয়াবাড়ী এবং বড়গাং নদীর তীরবর্তী ভ‚মিতে বসবাসকারী লোকজন।
গতকাল শনিবার সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্তরা এমন অভিযোগ করেন। এতে এলাকাবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কবীর আহমদ।
তিনি বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের দৌরাত্ম্যে তারা অসহায় অবস্থায় দিন যাপন করছেন। প্রতিকারের আশায় ২০১৬ সাল থেকে বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ করেও কোন সুফল পাননি।
অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের কারণে নদীতে বিলীন হতে চলেছে ঘরবাড়ি, টিলা, ফিশারি, ফসলি জমিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ও বাঁশঝাড়। তাই, নিরুপায় হয়ে এলাকাবাসী গত ২০ মে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন।
এ প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট সিলেটের জেলা প্রশাসককে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। রিট পিটিশন নং-৬৭৯৮/২০২৪ইং এর বাদী মো. আলাউদ্দীন ও আব্দুস সালামের আবেদনের প্রেক্ষিতে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০১১ অনুযায়ী সরজমিন তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) বরাবরে কপি প্রেরণ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, গত ৫ নভেম্বর জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) এর কার্যালয়ে হাইকোর্ট কর্তৃক জারীকৃত আদেশের অনুলিপি নিয়ে গেলে ওই দুই কর্মকর্তার কাছ থেকে তারা কোন প্রকার সহযোগিতা পাননি। বরং ওই দুই কর্মকর্তা জনগণের পক্ষ অবলম্বন না করে উল্টো তাদের হুমকির সুরে বলেন, এ ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করলে তোমাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুস সালাম আরো জানান, আমরা জানতে পেরেছি ২০১২ সালে সারী ও বড়গাং নদী থেকে বালু উত্তোলনের ক্ষেত্রে হাইকোর্ট কর্তৃক স্টে অর্ডার (স্থগিতাদেশ) জারি করেন।
সেই আদেশে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সারী ও বড়গাং নদী থেকে সব ধরনের বালু ও খনিজসম্পদ উত্তোলন বন্ধ রাখার নির্দেশনা রয়েছে। ভুক্তভোগীরা বলেন, আমরা আমাদের ভিটেমাটি রক্ষায় প্রভাবশালী লিজ গ্রহীতাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে চলেছি।
অথচ, ২০১২ সাল থেকে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্তে¡ও কি কারণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না-তা বোধগম্য নয়।
তারা ভিটে মাটি রক্ষায় সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-হর্নী গ্রামের মো. আলাউদ্দীন, নিজপাট গ্রামের গিয়াস উদ্দীন, রূপচেং গ্রামের সেলিম আহমদ, গোয়াবাড়ী গ্রামের চন্দন দাস, নিজপাট গ্রামের রুহুল আমিন, গোয়াবাড়ী গ্রামের অখছোছ মিয়া, নিজপাট গ্রামের মানিক মিয়া ও নজমুল ইসলাম, গোয়াবাড়ী গ্রামের আব্দুস সালাম।