মাধবপুরে সুগন্ধি জাতের ধান চাষ বেড়েছে
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ৫:০১:১০ অপরাহ্ন
মাধবপুর (হবিগঞ্জ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : মাধবপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে সুগন্ধি জাতের ধান চাষের দেখা মিলেছে । কৃষকরা নিজ উদ্যোগে সুগন্ধি ধানের বীজ সংগ্রহ করে এ জাতের ধান চাষে এগিয়ে এসেছেন। এর ফলে তারা বাজারে সুগন্ধি জাতের চাল উচ্চ ম‚ল্যে বিক্রি করতে পারছেন। এছাড়া, অনেক ব্যবসায়ী সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে এ ধান কিনে নিচ্ছেন।
এক সময় কৃষকরা স্বল্প পরিসরে নিজের চাহিদা মেটাতে সুগন্ধা ও বিরুণ ধান চাষ করতেন। কিন্তু কালের বিবর্তনে ধান চাষে কৃষকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলায় দেশি জাতের বীজ বিলুপ্ত হতে থাকে।
এখন আবার সুগন্ধি জাতের চালের চাহিদা বাড়ায় গ্রামের কৃষকরা বড় পরিসরে ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। আগে কৃষকরা এ ধান চাষ করতে আলাদা জমি রেখে দিতেন। নিজেই বীজ সযত্নে সংগ্রহ করে রাখতেন। কিন্তু হাইব্রিড জাতের ধানের আধিক্যের কারণে দেশি জাতের বীজ বিপন্ন হতে চলছিল।
মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের গোপিনাথপুর গ্রামের কৃষক বধু মিয়া জানান, গত ৫/৬ বছর ধরে কৃষকরা চিনিগুড়া, কালোজিরা, কাটারিভোগ, তুলশীমালা, বাঁশফুল, বেগুনবিচি, চিনিশাইল, গোবিন্দভোগ, দুধশাইলসহ বিভিন্ন জাতের ধান চাষ করেছেন। স্থানীয় বাজার থেকে সুগন্ধি জাতের ধান বীজ সংগ্রহ করে চাষাবাদ করেছেন।
আগে কৃষকরা তাদের নিজেদের জন্য সুগন্ধি জাতের ধান চাষ করতেন। সারাবছর নিজেরা আয়েশ করে বিভিন্ন মাছ দিয়ে সেই সুগন্ধি ভাত খেতেন, বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানে মেহমানদারি করতেন। কিন্তু এখন বাজারে এ জাতের চাল ব্যবসায়ীরা প্যাকেট করে প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি করেন। বাজারে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দেশি জাতের সুগন্ধি ধান চাষ বেড়েছে।
আন্দিউড়া ইউনিয়নের কৃষক মুর্শেদ মিয়া বলেন, ধানের জমি বিভিন্ন কারণে কমে যাওয়ায় কৃষকরা এখন জমি কম পাচ্ছেন। তবে আশার কথা হচ্ছে, এবার আমন মৌসুমে কৃষকরা প্রচুর পরিমাণ সুগন্ধি জাতের ধান চাষ করেছেন। এ চালের চাহিদা দেশে-বিদেশে অনেক বেড়েছে। তাই, কৃষকরা দিন দিন সুগন্ধি ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
মাধবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সজিব সরকার জানান, ভোক্তা পর্যায়ে সুগন্ধি জাতের ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হওয়ায় কৃষকরা এখন সুগন্ধি জাতের ধান চাষ করতে প্রচুর উৎসাহী হয়েছেন। এবার আমন মৌসুমে উচ্চফলনশীল ধানের পাশাপাশি প্রচুর সুগন্ধি জাতের ধান চাষ করেছেন তারা। কৃষকরা যাতে দেশি জাতের বীজ নিরাপদে সংরক্ষণ করতে পারে আমরা তাদের মৌলিক ও কারিগরি প্রশিক্ষণ দিচ্ছি।