বালাগঞ্জে ব্যবসায়ী হাসান মিয়া হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদন্ড
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ৫:৩৫:০৭ অপরাহ্ন

ডাক ডেস্ক : বালাগঞ্জে চাঞ্চল্যকর ব্যবসায়ী যুবক হাসান মিয়া হত্যা মামলার ৩ আসামীর মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি রায়ে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সিলেট জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক সৈয়দা আমিনা ফারহিন এ রায় ঘোষণা করেন। ওই আদালতের পেশকার মো. সোহেল রানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বালাগঞ্জ উপজেলার হাসামপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মবশ্বিরের ছেলে আব্দুস সবুর পুতুল, তার ছেলে ফাহাদ আহমদ রাহী ও আব্দুল মোমিন রণি। তাদের মধ্যে আব্দুস সবুর পুতুল কারাগারে থাকলেও দন্ডিত তার দুই ছেলে ফাহাদ আহমদ রাহী ও আব্দুল মোমিন রণি পলাতক রয়েছেন।
মামলার বরাত দিয়ে আদালত সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ২২ মে রাত ১০ টা ৪০ মিনিটের দিকে উপজেলার একই হাসামপুর হাফিজিয়া মাদরাসার নিজ মালিকানা হাসান ফার্মেসি অ্যান্ড ভ্যারাইটিজ স্টোরে হাসান মিয়াকে (২৮) ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। নিহত হাসান মিয়া হাসামপুর গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে।
এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই হোসাইন আহমদ সাহান (২৪) বাদী হয়ে পরদিন ২৩ মে বালাগঞ্জ থানায় ৪ জনের নামোল্লেখপূর্বক অজ্ঞাত আরও ২ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা করেন। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, হাসামপুর বায়তুননুর জামে মসজিদে তারাবির নামাজের পর মুসল্লিদের মধ্যে লিচুর জুস সরবরাহ করতেন হাসান মিয়া। সরবরাহকৃত জুসের মূল্য পরিশোধ করতেন মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা ফারুক মিয়া।
হত্যাকান্ড সংগঠিত হওয়ার রাত ১০টা ১০ মিনিটে ফারুক মিয়া লিচুর জুসের মূল্য বাবদ ২৫০০ টাকাসহ অগ্রিম আরও ২৫০০ টাকা বিবাদী রাহীর মাধ্যমে হাসানের কাছে পাঠান। কিছুক্ষণ পর রাহী লিচুর জুস সরবরাহ করা লাগবে না বলে টাকা ফেরত নিতে আসে। কিন্তু টাকা ফেরত নিতে ফারুক মিয়াকে ফোন করতে বলে ব্যবসায়ী হাসান।
তখন রাহি গালিগালাজ করে। রাহীর পক্ষ নিয়ে অন্য আসামীরাও কিলঘুষি মারে। একপর্যায়ে রাহি তার হাতে থাকা ছোরা দিয়ে হাসানের ডান কনুইয়ের নিচে, ডান বগলের নিচে, কোমরে, পেটের বামপাশ সহ দেহের অন্যান্য স্থানে ছুরিকাঘাত করে। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরে সিলেট এমএমজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মামলাটি পিবিআইয়ের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুদীপ দাস তদন্ত করে ২০১৯ সালের ১৩ ফেব্রæয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলাটি ওই আদালতে দায়রা মূলে রেকর্ডের পর বিচার কার্য শুরু হয়। এরপর ২০১৯ সালের ১১ জুন আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর ২৪ সাক্ষীর মধ্যে ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন।