অত্যাধুনিক কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল উদ্বোধন শনিবার
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ৫:৪২:২০ অপরাহ্ন
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন দুই উপদেষ্টাসহ দেশি-বিদেশী বিশিষ্টজনেরা : বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় এটি মাইলফলক-বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা
স্টাফ রিপোর্টার: আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষায় অত্যাধুনিক সিলেট কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল।
আগামী শনিবার অন্তর্বতী সরকারের দুই জন উপদেষ্টাসহ বরেণ্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে হাসপাতালটির উদ্বোধন করা হবে। এ উপলক্ষে একটি বাণী দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূস।
বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা এই হাসপাতালটি বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় একটি মাইলফলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গণ্য হবে বলে মন্তব্য করেন।
একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকবাহিনীর হাতে নৃশংস হত্যার শিকার সিলেট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের তৎকালীন স্বনামধন্য চিকিৎসক শহীদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদের ছেলে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী কিডনি বিশেষজ্ঞ বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. জিয়াউদ্দিন আহমদ এ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার মূল উদ্যোক্তাদের একজন।
ঢাকাস্থ ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশন এন্ড রিসার্চ হসপিটাল-এর মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপ(পিপিপি)-এর আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা যা বলেন: অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সোমবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ অধিদপ্তর ও কিডনী ফাউন্ডেশন সিলেটের যৌথ উদ্যোগে ১৫০ শয্যার নির্মিত এই হাসপাতালের উদ্বোধন উপলক্ষে একটি বাণী দেন।
বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমি আশা করি কিডনি রোগীর সেবায় এই হাসপাতালটি নিয়োজিত থাকবে। বিশেষ করে সুবিধাবঞ্চিত রোগীর জন্য।
২০১৮ সাল থেকে এই হাসপাতালটি সিলেটে একটি ভাড়া করা ভবনে কিডনি রোগীদের ৫০ শতাংশ ছাড়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে। পাশাপাশি অন্য রোগীদেরও স্বল্পমূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছে। এ প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা সবাই আমার ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত।
প্রফেসর জিয়াউদ্দিন আহমদ, স্যার ফজলে হোসেন আবেদ, জেহিন আহমেদ, রাশেদা কে চৌধুরী এবং কর্ণেল মো. আব্দুস সালাম বীর প্রতীক ও অন্যদের প্রতি যারা এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ইতিমধ্যে কিডনি ফাউন্ডেশন সিলেটের মানুষের কাছে একটি নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে সর্বজন সমাদৃত। নির্মিত এই অত্যাধুনিক হাসপাতালটি সমাজের উপেক্ষিত মানুষের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান হবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
তিনি আরও বলেন, আমি জানতে পারলাম গত করোনা মহামারীর সময় দুটো উপজেলা সরকারি হাসপাতাল নিজ অর্থায়নে এই উদ্যোগটি নিয়েছিল।
তারা ৪০ জন অস্থায়ী কর্মীদের নিয়ে অসংখ্য রোগীদের সেবা দিয়েছে। যেকোনো দুর্যোগে বিশেষ করে সিলেটে বন্যার সময় বন্যাকবলিত এলাকায় সামরিক বাহিনীর সঙ্গে তারাও চিকিৎসাসেবায় অংশগ্রহণ করেছে এবং জনসেবায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। সবার জন্য চিকিৎসাসেবার অঙ্গীকার নিয়ে সাশ্রয়ী ও আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসাসেবা দেওয়া এবং রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকারের জন্য মাঠ পর্যায়ে তারা কাজ করে যাচ্ছে। এজন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরবরাহের সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
আমি আশা করি এসকল প্রস্তুতি সফলভাবে বাস্তবায়ন হবে। দেশ-বিদেশের নামকরা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, হৃদয়বান মানুষের আর্থিক অনুদানে ও বøাড ব্যাংকের সক্রিয় অংশগ্রহণে এই হাসপাতালটি বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় একটি মাইলফলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গণ্য করা হবে। ব্যস্ততার কারণে আমি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারলাম না। আশা করি ভবিষ্যতে আপনাদের হাসপাতালটি পরিদর্শন করার সুযোগ পাবো।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যারা থাকছেন: সিলেট শহরতলীর টুকেরবাজারস্থ সিলেট-বাদাঘাট সড়কে তেমুখিতে নাজিরেরগাঁও নামক এলাকায় নির্মিত এ হাসপাতালের শনিবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মোরশিদ এবং পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত থাকবেন- ঢাকাস্থ ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশন এন্ড রিসার্চ হসপিটালের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. হারুনুর রশীদ, ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতাল ট্রাস্টের চেয়ারম্যান প্রফেসর কাজী কামরুজ্জামান, ব্র্যাক এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তামারা হাসান আবেদ, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি চেয়ারপার্সন মেহেরিয়ার এম হাসান। কিডনি ফাউন্ডেশন সিলেট এর প্রেসিডেন্ট ডা: জিয়া উদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক কর্নেল মোহাম্মদ আব্দুস সালাম বীর প্রতীক এতে সংশ্লিষ্ট সকলের উপস্থিতি কামনা করেছেন।
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক মানের স্বয়ংসম্পূর্ণ হাসপাতালটি স্থাপনের লক্ষ্যে সিলেটের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী লায়ন জুবায়ের আহমদ চৌধুরী ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ১২০ শতক ভ‚মি বিনামূল্যে এবং বিনাশর্তে দান করেছেন।