শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা, সাবেক বিমান সচিবসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
ওসমানী বিমানবন্দরে কাজ না করেই ২১২ কোটি টাকা ছাড়
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৫৩:২৬ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের কাজ না করেই অগ্রিম বিল হিসেবে ২১২ কোটি টাকা ছাড়ের অভিযোগে পতিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক ও বিমান মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মো. মুহিবুল হকসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার এজাহারে আসামিদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইনের ১৮৬০ এর ১২০/১৬১/১৬৩/১৬৪/৪০৯/ ৪২০/১০৯ ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক এ কে এম মর্তুজা আলী সাগর বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন গতকাল সোমবার দুপুরে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, এ চক্রের বিরুদ্ধে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরসহ তিন বিমানবন্দরের উন্নয়ন প্রকল্পের ৮১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আরও তিনটি পৃথক মামলা দায়ের করেছে দুদক।
দুদক সূত্র জানায়, মামলায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্ম সচিব জনেন্দ্রনাথ সরকার, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সাবেক চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান, বেবিচকের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল মালেক, সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. হাবিবুর রহমান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এরোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুবুল আনাম, পরিচালক লুৎফুল্লাহ মাজেদ, প্রকল্প পরিচালক মইদুর রহমান মো. মওদুদ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপসচিব (বর্তমানে উপ-সচিব, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়) শাহ জুলফিকার হায়দার, বর্তমানে অতিরিক্ত সচিব মো. আনিছুর রহমানকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রকল্পের কাজে প্রচলিত ক্রয় প্রক্রিয়ার বিদ্যমান বিধান লঙ্ঘন করে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি করেন। এছাড়া বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের আর্থিক ও প্রশাসনিক এখতিয়ার লংঘনপূর্বক ব্যয় বৃদ্ধি, ব্যয় মঞ্জুরি, পরিদর্শন, অর্থ ছাড়করণ সংক্রান্ত বিধান ও অনুমোদন প্রক্রিয়ার ব্যত্যয় ঘটিয়ে অবৈধ সুবিধা দেওয়া ও নেওয়া হয়েছে। আইন, চুক্তি ও প্রচলিত বিধি-বিধান লঙ্ঘন করে পরস্পর যোগসাজশে এরোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডকে সম্পৃক্ত করে প্রকল্পের কাজে ২১২ কোটি টাকা অগ্রিম বিল নেওয়া হয়। অগ্রিম বিল নেওয়ার পর এরোনেস ইন্টারন্যাশনাল কাজ বন্ধ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীলরা আত্মগোপনে রয়েছেন বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিগত সরকারের আমলে ২ হাজার ১১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ওসমানী বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো ও দেশি-বিদেশি ফ্লাইট চালুর জন্য একটি উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া হয়। ২০২০ সালের ২৭ আগস্ট কাজ শুরু হয়ে ২০২৩ সালের ২৭ মের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, আজো শেষ হয়নি প্রকল্পের কাজ। উপরন্তু প্রকল্পের কাজ নিয়ে উঠেছে দুর্নীতির অভিযোগ।