জগন্নাথপুরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সেতুর পিলার দেবে গেছে, হেলে পড়ছে সেতু
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ মে ২০২৫, ৫:১৮:০৫ অপরাহ্ন

জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : জগন্নাথপুর উপজেলার জগদীশপুর বড়খালের ক্ষতিগ্রস্ত সেতু তিন বছরেও সংস্কার হয়নি। ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ২৫ গ্রামের মানুষকে।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, সেতুটি মারাত্মক ঝুঁকিতে থাকায় সবধরনের ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে ছোট ছোট যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সেতুর দুইটি পিলার দেবে গিয়ে অনেকটা হেলে পড়েছে। মাঝের দুইটি পিলারের অংশ ফেটে গেছে। ভেঙে পড়েছে সেতুর একাংশের রেলিং।
এছাড়া, সেতুর প‚র্বাংশে ধসেপড়া সংযোগ সড়ক মাটি দিয়ে ভরাট করে চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর স‚ত্র জানায়, উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের জগদীশপুর গ্রামের বড়খালের ওপর এলজিইডির আওতাধীন নির্মিত পুরোনো সেতুটি ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যায় মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বন্যার পানির স্রোতে সেতুর মাঝের দুইটি পিলার নিচের দিকে দেবে যায় এবং সেতুর একাংশের অ্যাপ্রোচ ধসে পড়ে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ফলে ওই সেতু দিয়ে তেলিকোনা-চন্ডিচর সড়কে বছরখানেক সরাসরি যান চলাচল বন্ধ থাকার পর স্থানীয় এলাকাবাসী ও প্রবাসীদের উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে মাটি ভরাট ও কিছু সংস্কার কাজ করে যান চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়। তবে সেতুটি ঝুঁকিপ‚র্ণ থাকায় সব ধরনের ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ সেতু দিয়ে উপজেলা সদরের পাশাপাশি জেলা শহরে যোগাযোগ করে আসছেন ইউনিয়নের জগদীশপুর, শ্রীধরপাশা, গলাখাই, কামারখাল, কান্দারগাঁও, কাদিপুর, নোয়াগাঁও, তেলিকোণা গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলার দিরাই ও শান্তিগঞ্জের কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ গ্রামের লোকজন।
কান্দারগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বলেন, ৩ বছরেও সেতু মেরামত না হওয়ায় এলাকাবাসী খুবই দুর্ভোগে চলাফেলো করছেন। বন্যার স্রোতে সেতুর পিলার নিচের দিকে দেবে যায় এবং সংযোগ সড়ক ভেঙে চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। বছরখানিক বন্ধ থাকার পর স্থানীয় উদ্যোগে কিছু সংস্কার করে যানচলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়েছে।
জগদীশপুর গ্রামের ফয়সল মিয়া বলেন, হেলে যাওয়া জরাজীর্ন সেতু দিয়ে আমরা কষ্ট করে যাতায়াত করছি। বর্ষায় খালে পানি বৃদ্ধি পেলে সেতুটি আরো ঝুঁকির মুখে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনাও।
কলকলিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা রসরাজ বৈদ্য বলেন, জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়ন, দিরাই ও শান্তিগঞ্জ উপজেলার কমপক্ষে ৩০ গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ জগদীশপুর সেতু দিয়ে যাতায়াত করে আসছেন। জনদুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত সেতুটি সংস্কারের জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হোসনা বেগম বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ সেতু দিয়ে আমাদের ইউনিয়নের কমপক্ষে ১০ গ্রামের লোকজনের পাশাপাশি পাশের দিরাই ও শান্তিগঞ্জ উপজেলার আরো ১৫ গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে আসছেন। সেতু সংস্কারের জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট বিভাগে বারবার দাবি জানিয়ে আসছি কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না।
কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক মিয়া বলেন, ঝুঁকিপ‚র্ণ সেতুর জায়গায় নতুন সেতু নির্মাণের জন্য আমি সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে আসছি।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের জগন্নাথপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) সোহরাব হোসেন বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সেতু নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সাইট পরিদর্শন করে পাথর, বালুসহ আনুষঙ্গিক মালামাল নিয়ে আসা হচ্ছে। কাজ দ্রুত শুরু হবে।’