সাংবাদিক গোপেন দেব এবং রোদমাখা স্মৃতি
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৪৬:৫৯ অপরাহ্ন

আহমাদ সেলিম :
বিশ্বের উন্নত কয়েকটি দেশের মধ্যে একটি কানাডা। বর্তমানে পরিবার পরিজন নিয়ে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ শহর মন্ট্রিয়েলে বসবাস করছেন দৈনিক সিলেটের ডাক’র সাবেক সিনিয়র সাব এডিটর গোপেন দেব। সেখানে কেটে গেছে একে একে সাতাশ বছর। তাঁর জীবন থেকে চলে যাওয়া সেই দিনগুলোর সাথে রোদ দিয়ে মোড়ানো একটি প্রতিষ্ঠান দৈনিক সিলেটের ডাক। তাই সাতাশ বছরেও ভুলেননি সেই দিনগুলোকে, প্রিয় প্রতিষ্ঠানকে। দেশে এসে সেই সময় কুড়াতে ডাক পরিবারে এসেছেন, স্মৃতি রোমন্থন করেছেন। ছোট্ট একটি অনুষ্ঠান ঘিরে হারিয়ে গেলেন পুরনো দিনে। যে সময়কে তিনি তার জীবনের শ্রেষ্ঠ এবং দামি সময় বলতেও কার্পণ্য করেননি।
দৈনিক সিলেটের ডাকের সভাকক্ষে সাবেক এবং বর্তমান সহকর্মীদের এই আড্ডা কিংবা মতবিনিময় সভাটি হয় গতকাল শুক্রবার রাতে। সেটির আয়োজনে এগিয়ে আসে সিলেটের ডাকের ‘সোনালী অতীত’ নামে একটি ফেইসবুক গ্রুপ।
সেই সোনালী অতীতের ডাকে সাড়া দিয়ে বর্তমান সহকর্মীরাও মন বাড়িয়ে দেন। সবার সম্মিলিত প্রয়াসে মতবিনিময় অনুষ্ঠানটি স্মৃতির সোনালী অতীত অনুষ্ঠানে রূপ নেয়। রাত নয়টায় স্মৃতি রোমন্থন শুরু হলেও সন্ধ্যার পর থেকে প্রাক্তন সহকর্মীরা সংবাদ কক্ষে জড়ো হতে থাকেন। কিছু সময়ের জন্যে প্রাক্তন সহকর্মীরা হারিয়ে যান তাদের ফেলে আসা জীবনে। নিউজ নির্মাণ, অনুসন্ধানী প্রতিবেদন, কাজ শেষে গভীর রাতে বাড়ি ফেরা, সকাল হলে আবার সংবাদের জন্য অন্তহীন ছুটে চলার গল্পে তন্ময় হন বর্তমান সহকর্মীরা।
সহকর্মীদের ভালোবাসায় অভিভুত গোপেন দেব। প্রবলভাবে আঁকড়ে ধরে মধুবন সুপার মার্কেটের সেই সাদাকালো পত্রিকার এক একটি মুহূর্ত। যেগুলো ভুলতে পারেননি সাতসাগর, তেরো নদীর ওপারে, সুখের ভিড়ে। তিনি বলেন, সিলেটের ডাক কখনো কোনো দল কিংবা মতের ছিলো না। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে জনমানুষের বিশ্বাসের জায়গায়, সংকট থেকে উত্তরণের জায়গায় পরিণত হয়েছিলো এই পত্রিকা। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সেসময় সিলেটের প্রথিতযশা মন্ত্রী, এমপিদের আস্থার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিলো পত্রিকাটি। সেই পত্রিকা চিরদিন যাতে অমর থাকে সেই দায়িত্ব বর্তমানের ওপর, সিলেটবাসীর উপর। তিনি সিলেটের ডাক-এর সাবেক সম্পাদক মরহুমা রাবেয়া খাতুন চৌধুরীর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং সিলেটের ডাক-এর প্রাণপুরুষ, উপমহাদেশের প্রখ্যাত দানবীর ড. রাগীব আলীর ভুয়শী প্রশংসা করে তারঁ সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।
একজন গোপেন দেবকে পেয়ে সংবাদকর্মীরা তাদের অতীতকে যেন ফিরে পেয়েছিলেন। তাই সবাই অন্যরকম আবেগে, অন্য অনুভূতিতে হারিয়ে গিয়েছিলেন। প্রিয় সহকর্মীর উদ্দেশে পত্রিকার বর্তমান প্রধান বার্তা সম্পাদক এনামুল হক জুবের বলেন, যারা মেধাবী সিলেটের ডাক তাদের মূল্যায়ন করে। সাংবাদিক গোপেন দেব ছিলেন প্রখর মেধাবী সাংবাদিক। তার জীবনের সর্বোচ্চ মেধা তিনি ডাক পরিবারকে উপহার দিয়েছেন। একইভাবে বলেছেন বর্তমান বার্তা সম্পাদক সমরেন্দ্র বিশ্বাস। তিনি বলেছেন, গোপেন দেবের মতো সাংবাদিকদের জন্যই আজকের সিলেটের ডাক। এই পত্রিকার উন্নয়নে তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে গেছেন।
দৈনিক সিলেটের ডাকের সাবেক সহকর্মী বাংলাদেশ ব্যাংক সিলেটের অতিরিক্ত পরিচালক জাবেদ আহমদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অনুভূতি প্রকাশ করেন, দৈনিক সিলেটের ডাকের প্রাক্তন সহকর্মী ভানুজ ভট্টাচার্য, সাংবাদিক খালেদ আহমদ, সাংবাদিক শামসুল আলম, সাংবাদিক মুহাম্মদ তাজ উদ্দিন, সাংবাদিক পুলিন রায়, সাংবাদিক ডা. আসাদুজ্জামান জুয়েল, সাংবাদিক শাব্বির আহমদ, সাংবাদিক রাজু আহমেদ, সাবেক কম্পিউটার ইনচার্জ লুৎফুর রহমান। বর্তমান চীফ রিপোর্টার মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, সিনিয়র রিপোর্টার ও সিলেট প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আহমাদ সেলিম, সিনিয়র রিপোর্টার কাউসার চৌধুরী, প্রধান আলোকচিত্রী আব্দুল বাতেন ফয়সল, সিনিয়র রিপোর্টার এনামুল হক রেনু, সিনিয়র রিপোর্টার আনাস হাবিব কলিন্স ও স্টাফ রিপোর্টার সাদেক আহমদ আজাদ, আলোকচিত্রী জাবেদ আহমদ, সম্পাদনা সহকারী বনবীর রায় প্রমুখ। পরে সোনালী অতীতের পক্ষ থেকে ক্রেস্ট গ্রহণ করেন সাংবাদিক গোপেন দেব। অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য থেকে ভার্চুয়ালী যোগ দেন সাবেক সাব এডিটর মাহবুব রহমান।