সুনামগঞ্জে বেড়েছে ভুট্টা চাষ, লাভজনক বলছেন চাষীরা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ মার্চ ২০২৪, ৩:৩৯:১৮ অপরাহ্ন

শহীদনূর আহমেদ, সুনামগঞ্জ থেকে : ধান চাষের চেয়ে লাভজনক হওয়ায় সুনামগঞ্জে বেড়েছে ভুট্টার আবাদ। কম খরচে বেশি উৎপাদন করতে পেরে ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষকরা। অনেকেই ভুট্টা চাষ করে সফলতা পাওয়ায় ভুট্টা চাষের দিকে ঝুঁকছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। পাশাপাশি সার ও বীজ দিয়ে চাষিদের সহযোগিতা করছে কৃষি বিভাগ। বোরো চাষের বিকল্প ফসল হিসেবে ভুট্টা চাষে কৃষকদের আগ্রহী করে তোলা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের বেরীগাঁও, পার্বতীপুর, বাঘমারা, ভৈষারপাড়, সাহেবনগর, মুসলিমপুর, সৈয়দপুর, জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের ডলুরা, আমপাড়া, ফেনিবিল গ্রামসহ সুরমা নদীর উত্তর পাড়ের অন্তত ৩০টি গ্রাম ঘিরে যতদূর চোখ যায় এখন শুধু ভুট্টার সমারোহ। চারপাশ ঘিরে আছে ছোট-বড় ভুট্টাক্ষেত। এসব এলাকায় ভুট্টা গাছে ফসল আসা শুরু করেছে। আর মাস খানেক সময়ের মধ্যে ভুট্টা সংগ্রহ করতে পারবেন চাষীরা। কৃষকরা জানিয়েছেন, দিন দিন এলাকায় ভুট্টা চাষের কদর বেড়েছে। ধান চাষের চেয়ে ভুট্টা চাষে শ্রম ও অর্থ কম হওয়ার পাশাপাশি সেচ, সার ও কীটনাশক কম লাগায় এবং বাজারে দাম ধানের চেয়ে বেশি থাকায় ভুট্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন চাষিরা। এতে সবাই এখন ভুট্টা চাষের দিকে ঝুঁকছে।
জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের ফেনিবল গ্রামের মুজিবুর রহমান জানান, আমাদের এলাকায় সব সময় ধান চাষ হতো। এখন এইসব জমিতে ভুট্টা চাষ হচ্ছে। এলাকায় প্রথম আমি ভুট্টা চাষ করি। সে বার ভালো ফলন হওয়ায় এর পর থেকে ভুট্টা চাষ বাড়িয়ে দেই। এখন এলাকার সকল ক্ষেতে ভুট্টা আর ভুট্টা।
চাষি মুজিবুর আরো জানান, ধান চাষে খাটুনি বেশি। ফসলেরও ঝুঁকি থাকে। দিন দিন খরচ বাড়ছে। খরচ কর্তন করে তেমন কিছু থাকেনা। এই তুলনায় ভুট্টা চাষে সুবিধা বেশি ও লাভজনক।
স্থানীয় সমাজকর্মী আবুল হায়াত জানান, ভুট্টা চাষে সফলতা পাওয়ায় এলাকায় ভুট্টা চাষের দিকে ঝুঁকছেন চাষীরা। উৎপাদন ভালো হলেও ফসলের ন্যায্য দাম পান না কৃষকরা। সরকারিভাবে চাষিদের কাছ থেকে ভুট্টা ক্রয় করতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর সুনামগঞ্জ জেলায় ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৫৪০ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে এবার ৬১৮ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার মেট্রিক টন। যার বাজারমূল্য ১০ কোটি টাকা ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালকের দায়িত্বে থাকা মোস্তফা ইকবাল আজাদ জানান, গত মৌসুমের চেয়ে এবার ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। দিন দিন ভুট্টা চাষের আগ্রহ বাড়ছে। আমরা কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে আসছি। কৃষকরা যাতে তাদের উৎপাদিত ফসল ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করতে পারেন সেই ক্ষেত্রে বিভিন্ন কোম্পানির সাথে কৃষকদের সমন্বয় করেন বলে জানান তিনি।