মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির আক্ষেপ
‘ছাত্রলীগ নিয়ে অনেক কথা শুনি, শহরে হাঁটতে পারি না’
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ জুন ২০২৪, ১:২১:৩৫ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: ‘ছাত্রলীগ, তোমাদের নিয়ে অনেক কথা শুনি। কিন্তু তোমাদের বলার সাহস আমাদের নেই! ইজ্জত থাকবে না আমাদের! অনেক কথা সিলেট শহরে শুনি, সিলেট শহরে হাঁটতে পারি না..’
কথাগুলো সিলেটের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদের। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে এভাবেই নিজের অভিমত তুলে ধরেন তিনি। গত সোমবার রাতে সার্কিট হাউসে আওয়ামী লীগের এক মতবিনিময় সভায় তার এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। দলের অভ্যন্তরের নেতা-কর্মীরাও বর্ষীয়ান এই নেতার বক্তব্যে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
ভিডিওতে দেখা গেছে, বন্যা পরিস্থিতিতে সিলেট সফরে আসা আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছা হক, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সদস্য আজিজুস সামাদ ডন এবং সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীসহ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ছাত্রলীগ আমাদের ছোট ভাই। আমরাও ছাত্রলীগ করেছি। আমরা কোনো বদনাম নিয়ে আসিনি। ছাত্রলীগ থেকেই আজকের এই পর্যায়ে এসেছি। তোমরা রাতে বালিশে মাথা রেখে চিন্তা করো। বুঝতে পারবে। সব দিক চিন্তা করে চলাফেরা করবে তাহলে সংগঠনের লাভ হবে। আমরাওতো ছাত্রলীগ করেছি। ছাত্রলীগ করে আমারও ৫৫ বছর রাজনীতি হয়ে গেছে। ছাত্রলীগ থেকেই আমরা আজকে আওয়ামী লীগের এই পর্যায়ে এসেছি। সুতরাং আমরা কোনো বদনামের পথে চলিনি।’
তিনি বলেন, আশা করি, ‘তোমাদের উপযুক্ত হতে হবে। নেতৃত্বের গুণাবলী থাকতে হবে। গ্রুপ গ্রুপ নেতা নিয়ে রাজনীতি করি না। আমার কোনো গ্রুপ নেই। সবাইকে নিয়ে রাজনীতি করি। এই জিনিসটা মনে রাখতে হবে। আমার গ্রুপ, এই ভাইয়ের গ্রুপ, সেই ভাইয়ের গ্রুপ করলে হবে না।’
ছাত্রলীগকে উদ্দেশ্য করে মাসুক উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘তোমরা আমার ছোট ভাই। তোমাদের শাসন করতে পারি, করিও। কেউ আমাকে কিছু বলে না। সুতরাং আমার কথায় কেউ মন খারাপ করো না। তোমাদের ভবিষ্যতের জন্য বলছি। সব সময় ভালো চিন্তা করবে। খারাপ কিছু চিন্তা করবে না। তাহলে আমরা সংগঠনকেও এগিয়ে নিয়ে যাব।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন যখন এই বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তখন সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম ও মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাইম আহমদ। তবে তাদের পক্ষ থেকে এ বক্তব্যের কোনো প্রতিক্রিয়া ছিল না।
প্রসঙ্গত, সিলেটে সাম্প্রতিক সময়ে চোরাই চিনির ‘লাইনে’ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের জড়িত থাকার বিষয়টি রাজনৈতিক অঙ্গনসহ বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। এর মধ্যে চোরাই চিনি জব্দ করে সরকারি নিলাম ডাকে বিক্রি হওয়া চিনি লুটের ঘটনা ঘটে বিয়ানীবাজারে। এ ঘটনায় উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এরপর জকিগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জে চিনি লুটের একাধিক ঘটনা প্রকাশ পায়। বিয়ানীবাজারে চিনি লুটের ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক তাহমিদ ও পৌর শাখার সাবেক সভাপতি আশরাফুল আলম সাকেলকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।