নারী-শিশুসহ আহত ১৫
চিকনাগুলে মাইকে ঘোষণা দিয়ে বসতবাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ জুলাই ২০২৪, ১২:১৬:৫১ অপরাহ্ন
জৈন্তাপুর (সিলেট) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : জৈন্তাপুর উপজেলার চিকনাগুল ইউনিয়নের উমনপুর গ্রামে মাইকে ঘোষণা দিয়ে প্রতিপক্ষের বসতবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। হামলায় একই পরিবারের শিশু, নারীসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এসময় দু’টি বসতঘরে অগ্নিসংযোগ, ৩টি বসতঘর ভাঙচুর এবং একটি মোটরসাইকল পুড়িয়ে দিয়েছে হামলাকারীরা।
গতকাল শুক্রবার বাদ জুম্মা এই হামলার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে জৈন্তাপুর থানা পুলিশ অতিরিক্ত ফোর্স সহ ঘটনাস্থালে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় ৩ বছরের শিশু রিহান আহমেদ (৩) ও পরিবারের নারী-পুরুষসহ অন্তত ১৫জন গুরুত্বর আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মরম আলী (৭০), জুহরা বেগম (৬৫), পারভীন বেগম (৪০), আলবেলা বেগম (৩৮), ফাহিমা বেগম (৩৮), হাসিনা বেগম (৪৫), কুলছুমা বেগম (৪০), তানজিনা বেগম (১২), মারজানা বেগম (১৯), আবিদা বেগম (০৪), রীয়ান আহমদ (১.৫), সোহাগ আহমদ (৭), হাম্মাদ (১৭), সাকিব হাসান (১৪), সাইদ আহমদ (১৫)।
জানা গেছে, সিলেট গ্যাস ফিল্ডের কর্মকর্তা মঈনুল হোসেন গত ১৩ জুন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের ঘটনায় সম্প্রতি পরিবারের পক্ষ থেকে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় একই গ্রামের সিদ্দেক আলী, মরম আলী, তাহির আলীসহ তাদের পরিবারের লোকজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার বাদ জুম্মা উমনপুর গ্রামের জামে মসজিদে মামলা দায়ের এবং ঘটনায় বিষয়ে গ্রাম্য বৈঠকে বসে গ্রামবাসী। বৈঠকে গ্রামের লোকজনের মধ্যে এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে নিহত মঈনুল হোসেন পরিবারের পক্ষে গ্রামের কিছু উত্তেজিত জনতা মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে গ্রামের সিদ্দেক আলী, মরম আলী, তাহির আলীদের পরিবারের বসতবাড়িতে দল বেঁধে হামলা চালায়। হঠাৎ করে গ্রামের শত শত লোক বাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ভাঙচুর ও হামলায় পরিবারের নারী-শিশুরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অনেক মহিলা ও শিশু আর্তচিৎকার করে প্রাণ ভয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য দিগি¦দিক ছুটতে থাকেন। হামলায় বাড়ির নারী শিশুসহ ১৫ জন আহত হন।
খবর পেয়ে জৈন্তাপুর মডেল থানার এসআই আশরাফুল ইসলামের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ এবং পাশের গ্রামগুলো থেকে লোকজন এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম লিয়াকত আলী, ভাইস-চেয়ারম্যান সাহাদ উদ্দিন (সাদ্দাম), জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার (ইনচার্জ) মো: তাজুল ইসলাম (পিপিএম), স্থানীয় চিকনাগুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান চৌধুরী, ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রফিক আহমদ সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ হামলার শিকার হওয়া সিদ্দেক আলী, মরম আলী, তাহির আলীর পরিবারের বসতবাড়ি পরিদর্শন করেছেন।
জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার (ইনচার্জ) মো: তাজুল ইসলাম (পিপিএম) জানিয়েছেন, বসতবাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় আহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনায় মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন হয়েছে।