অসহযোগ আন্দোলনে সংঘর্ষ : দেশের বিভিন্ন স্থানে ১২ জন নিহত
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ আগস্ট ২০২৪, ৩:২৮:০০ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের দেশের বিভিন্ন জায়গায় ১২ জন নিহত হয়েছেন।
আজ রোববার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩ টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মুন্সিগঞ্জে ২ জন, রংপুরে ৩ জন, পাবনায় ৩ জন, মাগুরায় একজন, বগুড়ায় ২ জন ও কুমিল্লায় একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
মুন্সীগঞ্জে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ২
মুন্সীগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।
রোববার (৪ আগস্ট) সকাল পৌনে ১০টা থেকে দুপুর পৌনে ১২টা পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছিল।
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার মো. আবু হেনা জামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সকাল দশটা থেকে সাড়ে দশটার মধ্যে ২৫ থেকে ৩০ জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। এদের মধ্যে দু’জন মৃত ছিল। তাদের বয়স ২২-২৫ বছর। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী সকাল ১০টার দিকে শহরের থানারপুল এলাকায় অসহযোগ আন্দোলনের অংশ হিসেবে আন্দোলনকারীরা জড়ো হলে সেখানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এ সময় বেশ কয়েকজন ছাত্রকে মারধর করা হয়। এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। এরপরই আন্দোলনকারীরা সেখানে পাল্টা হামলা চালালে উভয় পক্ষের মধ্যে গুলাগুলি শুরু হয়। দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই পরিস্থিতি চলমান থাকে। এ সময় আন্দোলনকারীরা ৫/৬টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়।
আন্দোলনকারী কয়েকজন শিক্ষার্থীরা বলেন, সকালে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে শহরের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করছিলাম। সে সময় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের বন্ধুদের মারধর শুরু করে। পরবর্তীতে আমরা সবাই একত্রিত হয়ে মিছিল শুরু করি। মিছিলের মধ্য পুলিশের উপস্থিতিতে আমাদের ওপর গুলি করতে করতে হামলা চালায়। এতে আমাদের ৪০-৫০ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। কয়েকজন মারা গেছে বলে শুনেছি।
পাবনায় গুলিতে ৩ শিক্ষার্থী নিহত
পাবনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে গুলিবর্ষণের ঘটনায় তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এছাড়া কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন।
রোববার দুপুরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া তত্ত্বাবধানে সহস্রাধিক শিক্ষার্থীরা পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের আব্দুল হামিদ সড়কের জেবি মোড়ে অবস্থান নিয়ে নানা স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় শিক্ষার্থীদের সমাবেশে পেছন থেকে অতর্কিত গুলি বর্ষণ করা করা হয়। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী জাহিদু ইসলাম (১৯), মাহবুুবুল হোসেন (১৬), ফাহিম (১৭) নামের তিন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. রফিকুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনার পর থেকে শিক্ষার্থীরা আব্দুল হামিদ সড়কে অবস্থান করছে।
এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়লে কিছু সময়ের জন্য বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। মৃত্যুর খবর শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছালে শিক্ষার্থীরা বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও জ্বালাময়ী স্লোগানে তাদের দাবি প্রকাশ করে। দফায় দফায় বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের ঘোষিত কর্মসূচি পালন করছিল। এ সময় পেছন থেকে পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ ও জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শিবলী সাদিক পৃথক পৃথক হামলা চালায়। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য নেতা আবু সাঈদ এলোপাথারী গুলি ছোঁড়ে। পুলিশ ধাওয়া দিলে তারা পিছু হটে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
বিক্ষোভকারী একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের ৩৫ জন ভাই আহত হয়। তাদেরকে আমরা দ্রুত পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় হাসপাতালে তিনজন মারা গেছে।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শিবলী সাদিক ও তার লোকজন শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালালে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাদের ধাওয়া করে। এ সময় তারা পিছু হটলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা যুবলীগের ওই নেতার অফিস ভাঙচুর করে। এছাড়া তারা শহরের বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর করে। এ ঘটনার পর দ্বিতীয় দফায় আওয়ামী লীগ নেতা সাঈদ চেয়ারম্যান ও তার লোকজন সশস্ত্র অবস্থায় হামলা চালালে পুলিশ ও শিক্ষার্থীরা ধাওয়া দিলে তারা পিছু হটে। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সাঈদ চেয়ারম্যানের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এ আগুন একটি ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
রংপুরে সংঘর্ষে নিহত ৩
রংপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় রংপুরের সিটি করপোরেশনের অফিসের সামনে সংঘর্ষে ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারাধন নিহত হন। এছাড়া সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন আরও দুই জন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
রোববার (৪ আগস্ট) সকালে এ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে নিহতের ঘটনা ঘটে। নিহত হারাধান রংপুর সিটির ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর।
দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে রংপুর মেডিকেল কলেজের সর্দার আব্দুল জলিল ও মিজানুর রহমান মিজান জানিয়েছেন, দুজনের লাশ তারা পেয়েছেন, তবে করো নাম পরিচয় জানা যায়নি।
সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে রংপুরে পাবলিক লাইব্রেরির মাঠে জমায়েত হয় আন্দোলনকারীরা। জাহাজ কোম্পানি মোড়ে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা মিছিল করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তারা সিঁথি বাজার পৌঁছালে আন্দোলনকারীরা ধাওয়া করে। এতে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। শহরের সিটি বাজার এলাকার কাছাকাছি সংঘর্ষে ওই দুজন নিহত হন।
এ খবর লেখা পর্যন্ত মহানগরীতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সদস্যদের উপস্থিতি দেখা গেছে।
মাগুরায় জেলা ছাত্রদল নেতা নিহত
মাগুরায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জেলা ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান (রাব্বি) নিহত হয়েছেন। তার বাড়ি পৌরসভার পারনান্দুয়ালী এলাকায়।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পারনান্দুয়ালী এলাকায় সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের পরিচালক মহসিন উদ্দিন জানান, দুপুর আনুমানিক ১২টার সময় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওই যুবককে হাসপাতালে আনা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মারা যান। তার শরীরে গুলির চিহ্ন রয়েছে। তিনি জানান, এ পর্যন্ত অন্তত ১০ জন আহত অবস্থায় হাসপাতালে এসেছেন।
কুমিল্লায় দফায় দফায় সংঘর্ষ, একজন নিহত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে কুমিল্লার দেবিদ্বারে আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়েছে। এতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে দেবিদ্বার। এ সময় সংঘর্ষে মো. রুবেল (৩৪) নামের এক বাসচালক নিহত হয়েছেন।
রোববার (৪ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে দেবিদ্বার উপজেলা চত্বরে সংঘর্ষের সময় তিনি নিহত হন। রুবেল উপজেলার বারেক এলাকার বাসিন্দা ও প্রান্তি বাসের চালক ছিলেন। দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এহসান আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আন্দোলনের নামে দেবিদ্বার উপজেলার শিক্ষার্থীরা। এ সময় পৌরসভা ছাত্রলীগ-যুবলীগ এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে এক দুর্বৃত্তের দায়ের কোপে আহত হন রুবেল। তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দেবিদ্বার) সার্কেল শাহ মোস্তফা মো. তারিকুজামান বলেন, দুষ্কৃতিকারীরা উপজেলা পরিষদে হামলা চালায়। এ সময় তারা ইউএনও’র কার্যালয়সহ বেশ কিছু স্থাপনায় হামলা চালানোর চেষ্টা করেন। একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। পরে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে। পরিস্থিতি বর্তমানে পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এহসান আলী বলেন, সহিংসতায় আহত ১১ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়েছিল। তাদের মধ্যে একজন মারা গেছে। দুইজন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছেন।
বগুড়ায় নিহত ২
বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘সর্বাত্মক অসহযোগ’ কর্মসূচি ঘিরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় সংঘর্ষে দুজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
আন্দোলনকারীরা বগুড়া টি অ্যান্ড টি অফিস, আওয়ামী লীগ, ছাত্র ইউনিয়ন ও জাসদ অফিস, টাউন ক্লাব, সদর ভূমি অফিস ও আওয়ামী লীগ নেতার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে আগুন লাগিয়ে দেন। পরে আন্দোলনকারী ও আওয়ামী লীগকর্মীদের উপর্যুপরি ককটেল বিস্ফোরণ এবং পুলিশের টিয়ার শেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় শহরের কেন্দ্রস্থল সাতমাথা এলাকা। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করায় ধোঁয়াচ্ছন্ন হয়ে পড়ে পুরো শহর।
আজ রবিবার (৪ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের সাতমাথা এলাকায় সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী সাতমাথা চত্বরে অবস্থান নেন। এ সময় আন্দোলনের সমর্থকরা সাতমাথায় প্রবেশের চেষ্টা করলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সাতমাথা চত্বর আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পরে তা আন্দোলনকারীরা দখলে নেন।
এ সময় আওয়ামী লীগকর্মীরা ধাওয়া খেয়ে সাতমাথা ত্যাগ করেন। সাতমাথা চত্বর দখলে নেওয়ার পরপরই বিভিন্ন স্থাপনা এবং সড়কে থাকা মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ওই সময় পুলিশ সার্কিট হাউস রোডে পুলিশ প্লাজার সামনে অবস্থান নিয়েছিল। আন্দোলন সমর্থকরা সাতমাথায় অগ্নিসংযোগ শেষে পিডিবি রোড হয়ে শহীদ খোকন পার্কের ভেতরে এবং সার্কিট হাউস রোড হয়ে ফুল মার্কেটের সামনে গিয়ে পুলিশের ওপর ককটেল নিক্ষেপ শুরু করেন।
এ সয়ম পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে টিয়ার শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছুড়ে আন্দোলনকারীদের হটিয়ে দেয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাতমাথা থেকে তাদের হটিয়ে দিয়ে বিভিন্ন সড়কের মুখে অবস্থান নেয়। থেমে থেমে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলতে থাকে। আন্দোলনকারীরা স্টেশন রোড, শেরপুর রোড, কবি নজরুল ইসলাম সড়ক ও গোহাইল রোড থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ তাদের নিবৃত্ত করতে ফাঁকা গুলি অব্যাহত রাখে। দুপুর পৌনে ২টার দিকে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি সদস্যরাও সাতমাথা চত্বরে অবস্থান নেন।
এদিকে কবি নজরুল ইসলাম সড়কে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষকালে গুলিবিদ্ধ একজনকে গুরুতর অবস্থায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। শজিমেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ বিষয়টি কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন।
একই সময় বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থানা ও উপজেলা পরিষদে হামলা চালান আন্দোলন সমর্থকরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। সেখানে গুলিবিদ্ধ একজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইএমও ডা. আওফী খান এই তথ্য নিশ্চিত করেন।