সুন্দরবনে তিনদিন
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ৬:৪৯:৪০ অপরাহ্ন
জাবেদ আহমদ :
চারদিনের সুন্দরবন ট্যুর ঢাকা থেকে শুরু হয়েছিল ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ সকাল সাড়ে ৭টায়। সোহাগ পরিবহনের এসি বাস চড়ে পদ্মা সেতু প্রথম পাড়ি দিলাম। সাথে ছিল বড় মেয়ে স্থপতি চৌধুরী নায়িমা বুশরা ও ছেলে সামিন। ভাঙ্গা মোড়ের নয়নাভিরাম সড়কগুলো দেখে ইউরোপের কোন সিটি মনে হলো। খুলনায় পৌঁছে আমরা রূপসা গ্র্যান্ড রোডের বাংলাদেশ ব্যাংক গেস্ট হাউস ‘সুন্দরবন’ এ বিশ্রাম নেই। নান্দনিক চারতলা অতিথি ভবনে লিফট না থাকায় বয়স্ক অতিথিদের কষ্ট পোহাতে হয়। সন্ধ্যায় সুন্দরবন যাবার জন্য লঞ্চ ঘাটে যাই।
রূপসার বিডব্লিউটিআই খুলনা নদী বন্দরের চার নম্বর ঘাট থেকে ভৈরব নদীতে জাহাজ এমবি মিরাজ-৭ যাত্রা শুরু করে। তিন রাত ও তিন দিনের সফরে সুন্দরবনের আটটি স্পট দেখার পরিকল্পনা ছিল, যা শেষ পর্যন্ত সফলভাবে সম্পন্ন হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক ঢাকার কর্মকর্তা ও তাঁদের স্বজন ৭৬ জন পর্যটক এবং সাপোর্টিং স্টাফ মিলে শতাধিক লোক ছিলেন জাহাজে। একজন পর্যটকের ৮০ ও ৯০ বছরের মা ও শ্বাশুড়ি ছিলেন জাহাজে আমাদের সহযাত্রি, বেশ কয়েক শিশুও ছিল।
২৫ ডিসেম্বর রাত ৯টায় জাহাজ ছেড়ে পরদিন ২৬ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৬টায় পৌঁছে সুন্দরবনের হিরন পয়েন্ট এলাকায়। জাহাজের সাথে বাঁধা ইঞ্জিন চালিত ট্রলারযোগে দুদফায় যাত্রিদের হিরন পয়েন্ট স্পটে নিয়ে যাওয়া হয়। বন বিভাগের সশস্ত্র নিরাপত্তা কর্মী মোহাম্মদ মিজান সামনে থেকে পাকা করা ছোট পথ ধরে হেঁটে আমাদের নিয়ে যান। সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ারে ওঠে আমরা পুরো হিরন পয়েন্টের সৌন্দর্য্য উপভোগ করি। হিরণ পয়েন্ট থেকে ফিরে নাস্তা করে আমরা নদীর অন্য পারে ট্রলার চড়ে দুবলারচরে যাই। সেখানে দেখা হয়
আশরাফ আলী শুঁটকি ব্যবসায়ীর সাথে, তাঁর বাড়ি সাতক্ষীরা জেলায়। ডিসেম্বর – এপ্রিল ৫ মাস এখানে জেলেরা মৎস্য আহরণ ও বিক্রি, শুঁটকি দেয়া ও বিক্রি করেন। বছরের ৭ মাস তাঁরা নিজেদের এলাকায় বসবাস করেন।২০ হাজারের অধিক লোক এ পেশায় জড়িত, যাদের বেশিরভাগই সাতক্ষীরার লোক। এসব মানুষদের কেন্দ্র করে বাজারও গড়ে ওঠেছে। নিউ মার্কেট বা নয়া বাজার নামে পরিচিত। মুদি, সবজি, রেস্টুরেন্ট, সেলুনসহ নিত্যপণ্যের অস্থায়ী দোকান গড়ে ওঠেছে এ বাজারে। বেশ কয়েকটি পাঞ্জেগানা অস্থায়ী মসজিদ রয়েছে দুবলরচরে। সব স্থাপনাই বাঁশের অস্থায়ীভাবে তৈরি, সময় শেষে স্থাপনা ভেঙ্গে সবাই নিয়ে যান। ফি বছর আবার নতুন করে গড়েন। দুবলারচরে ৪ ঘন্টা (সকাল ৯টা – দুপুর ১টা) কাটানো বেশ উপভোগ্য ছিল। নিরিবিলি সমুদ্র সৈকতে ঘুরে ফিরে শুঁটকি বাজার ঘুরে বেশ ভালই লাগলো। বিচটি বড় মেয়ে বুশরা ও বড় ছেলে সামিনের বেশ পছন্দ লেগেছে। বনে এসে সমুদ্র দেখতে পারা যেন বোনাস হয়ে গেল। দুবলারচর যাবার পথে জাহাজে বসে আগুনঝড়া নদীর মোহনায় জেগে ওঠা ত্রিকোণ দ্বীপ দেখা হলো। দ্বীপটি কেবলই কেবলই কেওড়া গাছের বন। এটিতে পর্যটক নামার কোন সুযোগ নেই। জোয়ার ভাটায় পানি ওঠার কারণে চরের মাটি নরম ও কর্দমাক্ত।
বাংলাদেশ ও ভারত দু’দেশের মধ্যে সুন্দরবনের অবস্থান। বাংলাদেশের ৫ জেলা খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী ও বরগুনা এবং ভারতের কলকাতার উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলায় সুন্দরবন বিস্তৃত। দবলারচর থেকে বেলা আড়াইটায় পশুর নদীতে জাহাজ আবার যাত্রা শুরু করে, এবার লক্ষ্য কটকার পথে ছুটে চলা। আমাদের টীম লিডার এম,ডি আবুল কালাম আজাদ জানালেন কটকা পৌঁছাতে রাত ৮টা বেজে যেতে পারে। আজ ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ সকালে পরোটা,সবজি, ডাল, ডিম ভাজা দিয়ে নাস্তা করা হলো। পরে পরিবেশন করা হয় লিকার চা। দুপুরে খাবার মেন্যুতে ছিল সাদা ভাত, রোস্ট, মাছ, সবজি ও ডাল। নিজস্ব শেফের সুস্বাদু রান্না ও পেশাদার ক্যাটারারের পরিবেশনায় সবাই লাইন ধরে বুফে নিয়ে আসছেন। ভোজনরসিক সহকর্মী অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ ইকবাল হাসান খাবারের মান ও পরিমানে সন্তোষ প্রকাশ করেন। কটকার পথে চলা জাহাজটি বেশ কিছু সময় নদীর তীর ঘেঁষে চলে। জাহাজে বসে আমরা শিংওয়ালা হরিণ, বাচ্চা হরিণের চলাচল কাছ থেকে দেখি। সকালেও হিরণ পয়েন্টের কাছাকাছি নির্জন চরে দলবদ্ধ হরিণের চলাচল দেখি। বুশরা ও সামিন বলল তারা বাঘের মতো দুটি প্রাণীকে পানি পান করতে দেখেছে। চলতি পথে কোস্টগার্ড স্টেশন কোকিলমনি চোখে পরলো। হিরণ পয়েন্টে দেখা ও কথা হয়েছিল ফরেস্ট বিভাগের কর্মীদের সাথে। সেখানের লোকজন পুকুরের পানি পান করেন, এজন্য পুকুরে গোসল নিষিদ্ধের সাইনবোর্ড রয়েছে। রাতে জাহাজের ডাইনিং রুমে দুটি ভাগে বিভক্ত করে বাচ্চাদের কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। জি,এম, ছফেদ আলী এটি পরিচালনা করেন। তাঁকে সহায়তা করেন মোঃ আব্দুর রাজ্জাক ও এম,ডি আবুল কালাম আজাদ।
রাত ৯টায় কটকায় পশুর নদীতে এমবি মিরাজ-৭ জাহাজ নোঙর করল। জাহাজের ডাইনিং এ তখন জমজমাট তাস স্প্রেড টাম ও ক্যারম খেলা চলছিল। পরদিন ভোরে সূর্যোদয় দেখতে সুন্দরবনে জামতলা বিচে যেতে হবে, এজন্য সবাইকে ভোর ৫টায় ওঠতে হবে। বাংলাদেশ ও ভারত জুড়ে সুন্দরবনের অবস্থান। বাংলাদেশের ৫ জেলায় সুন্দরবন বিস্তৃত। সুন্দরবন রাতের খাবার খেয়ে আমরা ১১ টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়লাম।
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ভোর ৫ টা বাজার আগেই জাহাজের লোকজন কেবিনে কেবিনে নক করে প্রস্তুতি নিতে বলল। আমরা (আমি, বুশরা ও সামিন) দ্রুত ওঠে ফ্রেশ হয়ে ওজু করে প্রস্তুত হয়ে গেলাম। ফজরের নামাজের ৫.২০ এ সময় হয়ে গেলে আমরা কয়েকজন আবু নাসের মোঃ রফিকের ইমামতিতে জাহাজে নামাজ পড়ে নেই। আজান ও ইকামত আমি দেই। ভোর ৫.৫০ আমাদের ট্রলার ৬২ জন পর্যটক নিয়ে জামতলা বিচ ঘাটে নিয়ে যায়। ঘাট থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে জামতলা বিচে যাওয়া আসা করতে এক ঘন্টা হাঁটতে হয়। পথে বানরের উৎপাত থাকে, পর্যটকদের হাতে থাকা মোবাইল, খাদ্যদ্রব্য ছিনিয়ে নিতে চেষ্টা করে। ঘড়ির কাঁটায় ঠিক ৬.৪০ এ আমরা জামতলা বিচে পৌঁছার সাথে সাথে সূর্য ওঠা শুরু করে। সূর্যোদয় দেখতে পেরে পর্যটকদের কষ্ট স্বার্থক হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ ইকবাল হাসানের সুরেলা কন্ঠে গান সাগরপাড়ে আমরা বেশ উপভোগ করি। বিচে যাওয়া আসার পথে বেশ কয়েকটি ‘সুন্দরী’ গাছের দেখা মিলে। জামতলা বিচ দেখা শেষে ট্রলারে আমরা ‘অফিস পাড়া’ স্পটে যাই। সেখানে অতি কাছে বিচরণ করা অনেক হরিণ দেখতে পাই। হরিণের জন্য গাছের পাতা দেয়া হলেও মানুষের অতি শব্দের কারণে হরিণ আর কাছে আসেনি। অফিসপাড়া থেকে জাহাজে ফিরে সকালের নাস্তা করি। সকাল ১০ টায় কটকা থেকে জাহাজ ছেড়ে ডিমের চরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। জাহাজ সরু চ্যানেল দিয়ে ঢুকে বনের অতি কাছ দিয়ে যায়। আমরা জাহাজে বসে অতি কাছ থেকে সুন্দরবনের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য অবলোকন করি।
দুপুর ১২টার দিকে ডিমের চর পৌঁছে জাহাজ মাঝ নদীতে নোঙর করে। জাহাজের সাথে বাঁধা ট্রলার চড়ে আমরা ডিমের চরের কিনারায় যাই। সেখানে আমরা অনেকেই গোসল করি, সাঁতার কাটি। পানি কিছুটা গোলা ছিল। চরটিতে বাঘের আনাগোনা থাকায় আমরা অনেকটা সতর্কতার সাথে দ্রুত জাহাজে ফিরি। আজ শুক্রবার জুমার পরবর্তীতে জোহরের নামাজ জাহাজে আদায় করি, খুবই খারাপ লাগে।
বিকাল ৩টায় আমরা একই জায়গার বিপরীতে থাকা কচিখালি টাইগার পয়েন্ট এলাকা ঘুরে আসি। আমরা কোস্টগার্ড অফিস, বন বিভাগের অফিস এলাকা দিয়ে ঢুকে বনের ছন ক্ষেতের মাঝ দিয়ে পায়ে হেঁটে আবার কচিখালী বিচে চলে আসি। টাইগার পয়েন্টে বাঘের চলাচল থাকায় বেশ সতর্কতার সাথে আমরা বনের ভিতর দলবেঁধে পাড়ি দেই। এখানে ছন কাটার জন্য অনেক শ্রমিককে পাওয়া যায়। বন বিভাগের পুকুরের পানি এসব কর্মীরা পান করেন। বন বিভাগের কর্মীরা ও মসজিদের ইমাম বৃষ্টির জমানো পানি পান করেন। আসরের নামাজ কচিখালী জামে মসজিদে আদায় করি। সন্ধ্যায় জাহাজ আন্ধারমানিক এর পথে আবার চলতে শুরু করে। তিন রাতের জাহাজবাস শেষ হতে যাচ্ছে আজ। কাল বিকালে খুলনার রূপসা নদী বন্দরে শেষ হবে ৩ দিন ও ৩ রাতের সুন্দরবন সফর।
আজ রাতে পুরুষ পর্যটকদের জন্য তাস স্প্রেড টাম ও মহিলাদের জন্য কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন ছিল। বাচ্চারাও ছাদের ডাইনিং স্পেসে ক্যারম ও তাস খেলায় ব্যস্ত ছিল। সন্ধ্যা থেকে ছাদে চিকেন ও কুড়াল ফিশের বারবিকিউ চলছিল। সুন্দরবন ট্যুরের আয়োজক বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক এম,ডি আবুল কালাম আজাদ। ৩০ বছর ধরে প্রতি বছর তিনি একবার সবাইকে নিয়ে সুন্দরবন যান। তাঁর বাড়ি খুলনায়।
২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ শেষ দিন ট্যুর শুরু হয় ভোর ৬টায়। বাগেরহাটের ভৈরব নদীতে নোঙর করা নৌকা থেকে ট্রলার করে আন্দারমানিকে নিয়ে যাওয়া হয়। এটি একটি ইকো ট্যুরিজম স্পট। গহীন অরণ্যের মাঝ দিয়ে নির্মিত ফুট ওভারপাস দিয়ে আমরা কুয়াশার সকালে বনের সৌন্দর্য্য উপভোগ করি। এখানে বেষ্টনীর ভিতরে থাকা হরিণের দেখা মিলে। আরামের ঘুম পরিত্যাগ করে শিশুরাও ছিল বহরে। আন্ধারমানিকে কোন জনবসতি নেই। ৮ টায় জাহাজে ফিরে আবার রওয়ানা দেই দেই করমজল স্পটে। সুন্দরবনের এটি একটি সমৃদ্ধ ইকো ট্যুরিজম স্পট। এটি বাগেরহাট জেলায় সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের অধীনে। পর্যটকদের এখানে আসলে নির্ধারিত হারে চাঁদা দিতে হয়। খুলনা থেকে মংলা বন্দর হয়ে ট্রলারে সহজেই করমজল আসা যায়। অন্য স্পটগুলোয় একা যাওয়া যায় না। বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে ট্যুর কোম্পানির মাধ্যমে সশস্ত্র সিকিউরিটি গার্ড নিয়ে দলবদ্ধভাবে যেতে হয়। করমজলে বানরের উৎপাত খুবই বেশি। এখানে ভাসমান দোকান রয়েছে। হরিণের ঘাস, কাঠবাদাম, শসা, বাদাম, পেয়ারা, ডাবসহ অনেক কিছু দোকানিরা বিক্রি করে। করমজলে কুমির প্রজনন কেন্দ্রে কাছে থেকে কুমির দেখা হলো। সকাল সাড়ে ১০টায় করমজল থেকে জাহাজ খুলনার পথে ননস্টপ চলতে শুরু করে। সাড়ে ১০টায় সকালের নাস্তার পর বিদায়ী অনুষ্ঠানে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ এবং রেফল ড্র সম্পন্ন হয়। রেফল ড্র তে আমি দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়ে যাই। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা ও তাঁদের স্বজনদের অংশগ্রহণে অতীব সুন্দর এ ট্যুরে অংশ নেয়া সকলকে আয়োজকের পক্ষ থেকে সুন্দরবন ভ্রমনের স্মৃতিস্বরূপ মগ উপহার দেয়া হয়। আয়োজক বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক এমডি আবুল কালাম আজাদ অনুষ্ঠানে বলেন শখের বশে তিনি প্রতিবছর বাংলাদেশ ব্যাংকের লোকদের নিয়ে এ ট্যুরের আয়োজন করেন। এটা তাঁর কোন ব্যবসা নয়।জনাব আজাদ জানান প্রতিবছর বাংলাদেশ ব্যাংক খুলনা অফিসের বেশ কিছু কর্মকর্তার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় বিশ্বের সর্ব বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন ভ্রমণের আয়োজন করা হয়। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক খুলনা অফিসের মরহুম শেখ ওয়াসেলউদ্দিন (প্রাক্তন জয়েন্ট ম্যানেজার ক্যাশ ) একজন অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব। তাঁর একান্ত সান্নিধ্যে থেকেই তিনি সুন্দরবন ভ্রমণ আয়োজনের সাথে যুক্ত হন। তিনি শিখিয়েছেন কিভাবে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য ব্যতিরেকে শুধুমাত্র মানুষকে আনন্দ দেওয়ার জন্য সুন্দরবন ভ্রমণের আয়োজন করা যায়। আল্লাহ তা’আলা যেন এই ভালো মানুষটিকে জান্নাতের সর্বোচ্চ শিখরে আসীন করেন। সুন্দরবন ভ্রমণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক খুলনা অফিসের বেশ কিছু কর্মকর্তা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে থাকেন। তন্মধ্যে জনাব আব্দুল হামিদ শিকদার (প্রাক্তন জয়েন ম্যানেজার ক্যাশ ), মোঃ রুহুল আমিন(প্রাক্তন ডিজিএম ক্যাশ),জনাব কাজী রমজান আলী, মো: মনজুর রহমান,অতিরিক্ত পরিচালক, এস এম আবু ইসা (প্রাক্তন জেডি ) ও গাজী হারুন অর রশিদ( প্রাক্তন জেএম ক্যাশ)।
সুন্দরবন ট্যুরে অংশ নেয়া অনেকেই আয়োজনের প্রশংসা করেন। তিন দিন ও তিন রাতের জাহাজে একসাথে বসবাস পাঁচ ওয়াক্ত জামাতে নামাজ আদায়, খাওয়া দাওয়া, ঘুরাঘুরি করে অনেকের সাথে নতুন পরিচয় ও সম্পর্ক হয়ে ওঠে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকার এডভোকেট আব্দুল হাসিব শিকদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা মাসুদ কামাল, মোঃ হুমায়ুন কবির (মাসুদ), প্রদীপ পাল ও তাঁর পনের জন অতিথি, মোঃ কাজল মিয়া, মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, আবু নাসের মোঃ রফিক, মোঃ ইকবাল হাসান, মোঃ আনোয়ার হোসেন, শামস তিবরিজ ভূঁইয়া, তৌহিদুর রহমান সবুজ, মোঃ হাবিবুর রহমান, জিএম সফেদ আলীর বিয়াই খুলনার প্রকৌশলী এস,এম হাসমত হোসেন, মোঃ হাবিবুল্লাহ, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তা মোঃ ওয়াহিদুল ইসলাম, ঢাকার রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী মাহবুবুল ইসলামসহ অনেকের সাথে। ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ বেলা দুইটায় রাজকীয় বিদায়ী লাঞ্চ পরিবেশন করা হয়। শেষটা সকলেই ভাল করতে চায়, আয়োজকও যেন ছক কষে বিদায়ী লাঞ্চে মেন্যু রেখেছেন পোলাও, রোস্ট, খাসির কারি, মুড়িঘণ্ট, সালাদ ও দই। খাবার চলাকালেই বেলা আড়াইটায় জাহাজ এমভি মিরাজ খুলনা রূপসা নদী বন্দরের চার নম্বর ঘাটে নিরাপদে পৌঁছে। খাবার দাবার শেষে একে অপরের সাথে বিদায় নিয়ে আগে থেকেই গুছিয়ে রাখা মালামালের ব্যাগ নিয়ে জাহাজ থেকে নেমে আসি। সন্ধ্যার বাসে ঢাকার পথে রওয়ানা দিয়ে পরিশ্রান্ত শরীরে মধ্যরাতে ঢাকার বাসায় পৌঁছাই। সাঙ্গ হয় তিনদিনের সফল সুন্দরবন পরিভ্রমণের।
লেখক : বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক