বিমানে নয়, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ মে ২০২৫, ১০:২৪:২৯ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশ বিমানে নয়, কাতারের আমিরের দেওয়া বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে দেশে ফিরবেন। প্রায় চার মাস লন্ডনে চিকিৎসা শেষে আগামী মঙ্গলবার দেশে ফিরছেন তিনি। তাকে বিমানবন্দর থেকে অভ্যর্থনা জানিয়ে তার বাসভবনে পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে আসছেন তার দুই পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান এবং সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি। এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের সময়সূচি চূড়ান্ত হয়নি। এর আগে বিএনপি থেকে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশ বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটে লন্ডন থেকে সিলেট হয়ে সোমবার ঢাকায় পৌঁছুবেন খালেদা জিয়া। এজন্য সিলেট বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিল। সন্ধ্যায় বেগম খালেদা জিয়ার বিমানযোগে আসার সিদ্ধান্ত বাতিল হবার পর সিলেট বিএনপির পক্ষ থেকেও বিমান বন্দরের সব কর্মসূচি বাতিল করা হয় বলে জানিয়েছেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী।
এদিকে, বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় পৌঁছানোর পর বিমানবন্দরে দলের চেয়ারপারসনকে অভ্যর্থনা জানাবে বিএনপি। এনিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন দলটির নেতারা।
খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা নিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে যৌথসভা করে বিএনপি। পরে দলটির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা আশা করছি, আগামী ৫ তারিখে (৫ মে) দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া একটি বিশেষ বিমানে আসবেন। আমরা আশা করেছিলাম যে বিমানে তিনি গেছেন, কাতারের রয়াল অ্যাম্বুলেন্স, সেই অ্যাম্বুলেন্সেই তিনি আবার দেশে ফিরে আসবেন। সময়টা আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। কারণ, এই সময়টা বিভিন্ন বিষয়ের ওপর নির্ভর করবে। যদি গতকাল শনিবার রাতের মধ্যে আমরা নিশ্চিত হই, তখন সেটা জানিয়ে দেব।’
প্রস্তুতির কথা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘নেত্রী ফিরে আসবেন। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের মধ্যে প্রচন্ড আবেগ আছে। প্রতিটি দেশপ্রেমিক মানুষ আজকে উৎসাহিত-উজ্জীবিত যে, তাদের প্রিয় নেত্রী দেশে ফিরে আসবেন। তাকে যথাযথ অভ্যর্থনা জানানো, এটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। শুধু বিএনপি নয়, সারা দেশের মানুষ আজকে তাকে অভ্যর্থনা জানাতে প্রস্তুত হয়ে আছে। এনিয়ে আমরা যৌথসভা করেছি। জনগণ যাতে তাদের নেত্রীকে শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে অভ্যর্থনা জানাতে পারে, আমরা সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।’
বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, অত্যন্ত শৃঙ্খলার সঙ্গে রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে কোনো যানজট সৃষ্টি না করে তারা তাদের নেত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন। আমরা যেটা বলেছি, একহাতে জাতীয় পতাকা এবং আরেক হাতে দলীয় পতাকা নিয়ে আমরা তাকে অভ্যর্থনা জানাব। এটাই হচ্ছে আমাদের সিদ্ধান্ত।
তিনি বলেন, আল্লাহর অশেষ রহমতে চার মাস লন্ডনে একটি হাসপাতালে দেশনেত্রী চিকিৎসা নিয়েছেন। সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি বাসায় (বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায়) গিয়ে চিকিৎসা আবার নিয়মিত করেছেন। প্রতিদিন তার অবস্থার উন্নতি হয়েছে। একদিকে ভালো পরিবেশ, বিশেষ করে পারিবারিক পরিবেশ এবং একইসঙ্গে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যদিয়ে ও উন্নত চিকিৎসার মধ্যদিয়ে আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি আগের চেয়ে অনেক সুস্থবোধ করছেন। সেই কারণে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তিনি এখন দেশে ফিরে আসবেন।
বিমানবন্দরের টারমার্কে বিএনপি মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত থেকে চেয়ারপারসনকে অভ্যর্থনা জানাবেন। বিমানবন্দর থেকে গাড়িতে করে ৮নং গেট দিয়ে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর গুলশানের উদ্দেশে রওনা হবে। বিমানবন্দর মোড় থেকে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’ পর্যন্ত সড়কের দুইপাশে নেতাকর্মীরা দাঁড়িয়ে তাদের নেত্রীকে শুভেচ্ছা জানাবেন।
প্রায় চার মাস লন্ডনে চিকিৎসাধীন থাকার পর সোমবার সন্ধ্যায় হিথ্রো বিমানবন্দর ছাড়বেন খালেদা জিয়া। বিমানবন্দরে মাকে বিদায় জানাবেন ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। লন্ডন ক্লিনিকে টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ২৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে তার ছেলে তারেক রহমানের বাসায় লন্ডনের ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন।