গৌরবের ১৩৪ বছরে মুরারিচাঁদ কলেজ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ জুন ২০২৫, ৯:০৯:২৩ অপরাহ্ন

লবীব আহমদ : গৌরবের ১৩৪ বছরে পা রাখছে বাংলাদেশের অন্যতম শতবর্ষী প্রাচীন বিদ্যাপীঠ সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মুরারিচাঁদ কলেজ। যেটি এমসি কলেজ নামে সমধিক পরিচিত। সিলেট অঞ্চলে প্রতিষ্ঠা হওয়া এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্রিটিশ আমলের তৎকালীন আসাম প্রদেশের প্রথম কলেজ। ১৮৯২ সালের ২৭ জুন কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ৪ জন শিক্ষক ও ১৮ জন ছাত্র নিয়ে এফ.এ (ফার্স্ট আর্টস) কোর্স চালুর মাধ্যমে মুরারিচাঁদ কলেজের সূচনা হয়। এটি এর আগে মুরারিচাঁদ হাইস্কুল নামে ১৮৮৬ সালে সিলেটের রায়নগরের জমিদার মুরারিচাঁদ রায়ের কন্যা ব্রজসুন্দরী দেবীর দত্তক পুত্র রাজা গিরিশচন্দ্র রায় প্রতিষ্ঠা করেন।
পরে ১৯১২ সালের ১ এপ্রিল ৯৮ জন ছাত্র এবং ছয়জন শিক্ষক নিয়ে সরকারি কলেজ হিসেবে মুরারিচাঁদ কলেজের যাত্রা শুরু হয়। আসাম সরকারের শিক্ষামন্ত্রী খান বাহাদুর সৈয়দ আব্দুল মজিদ (কাপ্তান মিয়া) এর উদ্যোগে ১৯২১ সালের ১৯ আগস্ট সিলেট শহর থেকে ৩ মাইল দূরে কলেজটির বর্তমান অবস্থান থ্যাকারে টিলায় আসামের গভর্নর স্যার উইলিয়াম মরিস কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
পরে ১৯২৫ সালের ২৭ জুলাই আসামের গভর্নর স্যার উইলিয়াম রীডের এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মুরারিচাঁদ কলেজ বর্তমান ক্যাম্পাসে রূপান্তরিত হয়। এমসি কলেজ প্রতিষ্ঠার দিক দিয়ে বাংলাদেশের ৯ম প্রাচীন কলেজ। মুরারিচাঁদ কলেজের অগণিত শিক্ষার্থী বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন এবং উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো দ্যুতি ছড়াচ্ছেন। বর্তমানে এই কলেজের অধিকাংশ শিক্ষকই কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। এছাড়াও কলেজে পড়ালেখা করে কলেজের অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষও হয়েছেন বেশ কয়েকজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী। বর্তমানে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে রয়েছেন কলেজেরই প্রাক্তন শিক্ষার্থী প্রফেসর মো. আকমল হোসেন।
এ প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আকমল হোসেন বলেন, বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন এবং বৃহৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মুরারিচাঁদ কলেজ আজ ১৩৪ বছরে পদার্পণ করেছে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তৎকালীন সিলেট অঞ্চলসহ ময়মনসিংহ, ভারতের আসামসহ এই বৃহৎ অঞ্চলের শিক্ষা প্রসারে বড় ভূমিকা রেখেছে। বর্তমানে এই কলেজে আধুনিক শিক্ষা উপকরণ ব্যবহার করে প্রায় ১৪ হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
কলেজের উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা বিপুল সংখ্যক বুয়েট, কুয়েট, চুয়েট, রুয়েট, সরকারি মেডিকেল কলেজ এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন। অনার্স পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি চাকুরিতে নিযুক্ত হয়ে দেশের সেবা করে যাচ্ছেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে যুক্ত থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীরা সুনাম বয়ে নিয়ে আসছেন। আগামীতে আরো দক্ষ মানবিক দেশপ্রেমিক নাগরিক সৃষ্টিতে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।