সিলেটস্থ শান্তিগঞ্জ সমিতির সংবাদ সম্মেলন
‘সুনামগঞ্জবাসীর স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় পূর্বনির্ধারিত স্থানে স্থাপন জরুরি’
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১:৫৭:৩৮ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস স্থানান্তরের দাবিতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে নষ্ট করার পাঁয়তারা চলছে। গতকাল মঙ্গলবার সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন সিলেটস্থ শান্তিগঞ্জ সমিতির সদস্যবৃন্দ। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক স্বপন।
সংবাদ সম্মেলনে সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়, হাওরপাড়বাসীর দীর্ঘদিনের কাক্সিক্ষত স্বপ্ন সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। জাতীয় সংসদে পাশ হওয়া সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইনে বিশ্ববিদ্যালয়টি শান্তিগঞ্জ উপজেলা ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার পাশে অবস্থিত দেখার হাওরপাড়ে স্থাপন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বর্তমানে নির্ধারিত স্থানটিও দেখার হাওরপাড় অপেক্ষাকৃত উঁচু স্থানে অবস্থিত। ফলে মাটি ভরাট, রিটেইনিং ওয়ালসহ সীমানা প্রাচীর এবং এপ্রোচ রোড নির্মাণে খরচ আনুপাতিক হারে কম হবে। ভবিষ্যতে অন্যান্য অবকাঠামোগুলো নির্মাণেও অনেক সুবিধা পাওয়া যাবে। অধিকন্তু পুরো সুনামগঞ্জ জেলার মানচিত্র পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় স্থানটি জেলার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত।
সমিতির নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এতসব সুযোগ সুবিধা থাকা সত্ত্বেও একটি মহল অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে চাপসৃষ্টি ও অনৈতিকভাবে ক্ষমতা প্রয়োগ করে বিষয়টি জটিল করে তোলার সংবাদে আমরা উদ্বিগ্ন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২২ সালে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম উপাচার্য নিয়োগ হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপনকল্পে সরকারের নিকট প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি পিজিবিলিটি স্টাডি প্রকল্পের প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়। ডিপিইসি সভায় ৪৬৮.৫০ লক্ষ টাকার প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। প্রথমে ১২৫ (একশত পঁচিশ) একর জায়গা অধিগ্রহণের প্রস্তাব থাকলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভায় এটা ৫০ একর করার সুপারিশ করা হয়। পরে পরিচালক পরিকল্পনা ও উন্নয়ন এবং উপাচার্যের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ও তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনের যৌক্তিকতা অবগত হয়ে ৭৫ (পঁচাত্তর) একর ভূমি অধিগ্রহণের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণ করা হয়। গত ২৭ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ সিন্ডিকেটে উপস্থাপিত হয়। সিন্ডিকেট যাবতীয় কার্যক্রমে অবহিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে চূড়ান্ত অনুমোদন করেন। এ সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রায় তিন বছর সময় লেগেছে। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের অনুমতি সাপেক্ষ প্রথম ও দ্বিতীয় ব্যাচের ক্লাস নির্ধারিত জায়গার সন্নিকটবর্তী অস্থায়ী ক্যাম্পাসে পুরোদমে চলমান রয়েছে। ছাত্র/ছাত্রীদের আবাসিক সমস্যা সমাধানে দুটি হলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাতে ছাত্র/ছাত্রীরা নির্বিঘ্নে বসবাস করছে।
সমিতি নেতৃবৃন্দ বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল ঘোলাপানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টায় বৃহত্তর সুনামগঞ্জবাসীর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন বানচালের জন্য মিথ্যাচার করছে। এছাড়া শহরের গুটি কয়েক স্বার্থপর ব্যক্তি প্রতিবেশ পরিবেশের দোহাই দিয়ে ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টায় লিপ্ত। স্বার্থান্বেষীরা চিন্তা করেনা যে, তাদের এ হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতে গেলে সরকারের কতগুলো অর্থ অপচয় হবে। এই প্রতিষ্ঠানটিকে নিয়ে অযথা টানাহেঁচড়া করে প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ নষ্ট করার ষড়যন্ত্র পরিহার করার আহবান জানানো হয়। বৃহত্তর সুনামগঞ্জবাসীর স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়টি পূর্বনির্ধারিত স্থানে স্থাপন জরুরি বলেও মনে করেন সমিতির নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সমিতির সভাপতি মো. কবিরুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি হযরত আলী তালুকদার, সহ-সভাপতি মশিউর রহমান জায়গীরদার, সুয়েব আহমদ, রেজওয়ানুল হক, তালেব হোসেন, বাবলুল হক, যুগ্ম সম্পাদক সাংবাদিক এমজেএইচ জামিল, সহ-সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম সাইদ, কোষাধ্যক্ষ মোঃ সাইরুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক রাজিব হোসাইন, সহ-দপ্তর সম্পাদক রাফি মিজান নূর, নির্বাহী সদস্য সোহাগ মিয়া, ফিরোজ আহমদ ফিরোজ ও ইমামুল তালুকদার তপন প্রমুখ।




