ড. সৈয়দ শাহ এমরান এর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১১ মার্চ ২০২৩, ৬:৫৬:৪১ অপরাহ্ন
ড. সৈয়দ শাহ এমরান হবিগঞ্জ জেলায় মাধবপুর উপজেলার বেলঘর গ্রামে ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিনি চতুর্থ। তাঁর অন্য চার ভাইবোন হলেন যথাক্রমে-সৈয়দা ফাতেমা বেগম, সৈয়দ আশরাফ আলী, সৈয়দা নাজমা বেগম এবং সৈয়দা আসমা বেগম। পিতা মরহুম সৈয়দ হোসেন আলী (১৯১৯-২০০৮) একজন বুজুর্গ ব্যক্তি ছিলেন।
ড. সৈয়দ শাহ এমরান-এর মাতা চৌধুরী শাহানা বেগম। মায়ের বংশের উজ্জ্বল নক্ষত্র মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত কমান্ডেন্ট মানিক চৌধুরী এমএনএ, এমপি। তাঁর ভাই আফজাল চৌধুরী একজন খ্যাতিমান সাহিত্যিক।
দাদা সৈয়দ আহমদ আলী (১৮৭৮-১৯৩১) শিক্ষকতা করতেন জগদীশপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তিনি চাকরিরত অবস্থায় ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে ৫৩ বছর বয়সে স্ত্রী, তিন ছেলে এবং এক মেয়ে রেখে ইন্তেকাল করেন।
সৈয়দ শাহ এমরান জগদীশপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে ইটাখোলা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে কৃতিত্বের সাথে দাখিল (এসএসসি) পাশ করে বৃন্দাবন কলেজে বিএ শ্রেণিতে ভর্তি হন। ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে কামিল (হাদিস) বিভাগে কৃতিত্বের সাথে ১ম শ্রেণি অর্জন করেন এবং ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে ১ম শ্রেণিতে বিএ (অনার্স) ও এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি অতীশ দিপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় থেকে এমবিএ ও জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে বিশে^ শান্তি প্রতিষ্ঠায় ওআইসি’র ভূমিকার ওপর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
ড. সৈয়দ শাহ এমরান ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারি পরিচালক হিসেবে ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে যোগদান করেন। তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন হবিগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক, ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমির উপ-পরিচালক প্রশাসন, মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক প্রশাসন, উপ-পরিচালক গবেষণা বিভাগ এবং কর্ম সচিবের একান্ত সচিবসহ বিভিন্ন সরকারি দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন-এর ইসলামি পুস্তক প্রকাশনা কার্যক্রম-২য় পযায় শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একই সাথে তিনি মাসিক সৃজনশীল পত্রিকা অগ্রপথিক-এর সম্পাদক-এর দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক (খরনৎধৎু) হিসেবে কর্মরত আছেন।
তিনি মশুরিখোলা দরবার শরিফ নারিন্দা, ঢাকার প্রখ্যাত অলি ত্রয়োদশ শতাব্দির মহান মুজাদ্দির হজরত ক্বেবলা শাহ মো. আহসানউল্লাহ (র.)-এর নাতি এবং বর্তমান গদিনিসিনপির ও মুতাওয়াল্লি হজরত শাহ মো. আহসানুজ্জামান (মা. আ.)-এর একমাত্র কন্যা হাফিজা জামান (সুমি) এর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
ড. সৈয়দ শাহ এমরান চাকরির পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত রয়েছেন। তিনি বাহুবল উন্নয়ন ফোরামের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য, মাধবপুর এসোসিয়েশনের সভাপতি : উযধশধ টহরাবৎংরঃু ঝঃঁফবহঃ অংংড়পরধঃরড়হ ড়ভ ঐধনরমধহল-এর প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি। তিনি মাধবপুর সমিতি, হবিগঞ্জ সমিতি, হবিগঞ্জ নাগরিক কমিটি, সিলেট বিভাগ উন্নয়ন পরিষদ ও জালালাবাদ এসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য। হবিগঞ্জ এসোসিয়েশন ঢাকা-এর নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার সাথে জড়িত আছেন।
তিনি একজন সুলেখক ও গবেষক। তাঁর গবেষণার বিষয় হলোÑইসলাম, বাংলাদেশ বিষয়, বিশেষ করে জীবনীসাহিত্য, সাহিত্য উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক শান্তি, রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক সংগঠন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থাবলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোÑবীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডেন্ট মানিক চৌধুরী ২০০৫, সিলেট বিভাগ উন্নয়ন পরিষদ, ঢাকা। প্রসঙ্গ নজরুল, ২০১০ ইসলামিক ফাউন্ডেশন ঢাকা। উন্নয়নে ইমাম, ২০১৫ ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ঢাকা। ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা, ২০১৫ ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ঢাকা। বাংলাদেশ ও ওআইসি ২০১৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ঢাকা। ইধহমষধফবংয ধহফ ঙওঈ, ২০১৮, ওংষধসরপ ঋড়ঁহফধঃরড়হ, উযধশধ. ইসলামি পরিভাষা, ২০১৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ঢাকা।
ড. সৈয়দ শাহ এমরান-এর সম্পাদনায় অনেক বই প্রকাশিত হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোÑ১. পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধেই সলাম ২০১১, ইউএসএআইডি ও অন্যান্য। ২. ঈদে মিলাদুন্নবি স্মরণিকা ২০১৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ৩. আল-ইমাম, জাতীয় প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ইমামদের মুখপত্র ২০১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ৪. হজরত ক্বেবলাশাহ মো. আহসানউল্লাহ (র.) স্মারকগ্রন্থ, ২০২০ আহসানিয়া কমপ্লেক্স।
এছাড়াও তিনি ‘বাংলাপিডিয়া’ এবং‘ আল-কোরানুল কারিম সংক্ষিপ্ত বিশ্বকোষ-এর একজন নবন্ধকার। বাংলা একাডেমি গৃহীত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ দলিল ও ইতিহাস প্রকল্পের হবিগঞ্জ অধ্যায়েরসহ-লেখক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার বেশ কয়টি গবেষণা প্রবন্ধ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার সমসাময়িক বিষয়ের ওপর তাঁর প্রকাশিত কবিতা রয়েছে। তিনি পেশাগত কারণে ভারত, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, জর্ডান ও সৌদি আরব সফর করেন। টিভি চ্যানেল ও রেডিওতে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচক হিসেবে ইতোমধ্যে তিনি বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন। তিনি পবিত্র হজব্রত ও ওমরা পালন করেছেন। তিনি সরকারের হজ প্রশাসনিক দলের সদস্য হিসেবে সর্বশেষ ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে সম্মানিত হাজি সাহেবদের সেবা দান করেন।