কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভাঙনে বিয়ানীবাজারের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ জুন ২০২৫, ৬:৫৮:৫৭ অপরাহ্ন

বিয়ানীবাজার (সিলেট) থেকে সংবাদদাতা : গত কয়েকদিনের ভারি বর্ষণ, পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলে সৃষ্ট বন্যায় বিয়ানীবাজার উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। উপজেলার অন্তত ৭টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বন্যায় প্লাবিত হয়েছে রাস্তাঘাট, হাটবাজার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এছাড়া টানা বৃষ্টিতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় পাঁচ শতাধিক কাঁচাঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে, সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে উপজেলার দুবাগ, শেওলা, কুড়ারবাজার, মুড়িয়া, মাথিউরা, তিলপাড়া ও পৌরসভার কিছু অংশে বন্যা দেখা দিয়েছে। চলাচলের রাস্তা, হাটবাজার, ও বসতবাড়ি বন্যাকবলিত হয়েছে। সিলেট-বিয়ানীবাজার মহাসড়কের আঙ্গারজুর এলাকার উপর দিয়ে বইছে বানের পানি।
বিয়ানীবাজারের শেওলা পয়েন্টে কুশিয়ারা বিপদসীমার ৪৬ সে.মি উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সিলেট-বিয়ানীবাজার সড়কের একাধিক স্থানে পানি ঊঠেছে। কুশিয়ারা ও সুরমা তীরবর্তী বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যা পরিস্থিতির আরোও অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। বৈরাগীবাজারের মূল বাজার এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। দুবাগ, শেওলা ও কুড়ারবাজার ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম, রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বৈরাগীবাজারের সবজি ও মাছ বাজার প্লাবিত হয়েছে।
তাছাড়া দুবাগ ইউনিয়নের ঝুঁকির মুখে রয়েছে কুশিয়ারা নদীর গজুকাটা এলাকার ডাইক। বিজিবি সদস্যরা বালুবর্তী বস্তা ফেলে ক্ষতিগ্রস্ত ডাইক মেরামত করেছেন। তবে নদীর পানি চাপে এ বাঁধ যেকোন সময় ভেঙে যেতে পারে। একই অবস্থায় রয়েছে দুবাগ বাজারের ডাইকটিও। পানির তোড়ে যেকোন ডাইক ভেঙে নদী তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে, গৃহীত প্রকল্পের আওতায় চারখাই ইউনিয়নের নয়াগ্রাম জামে মসজিদ, দুবাগ ইউনিয়নের গজুকাটা বিওপি, আলীনগর ইউনিয়নের ঢাকা উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জামে মসজিদের ভাঙন ঠেকাতে মোট ১ কোটি ২৪ লাখ টাকার প্রকল্পের প্রশাসনিক অনুমোদন হয়েছে। এসব এলাকা সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ভাঙনে মারাত্মক ঝূঁকির মুখে ছিল।
এদিকে, বন্যার আশঙ্কায় বিয়ানীবাজারে ৬৮ টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হিরণ মাহমুদকে প্রধান করে কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। বন্যার্তদের মাঝে বিতরণের জন্য ৪৪ মেট্রিকটন চাল, নগদ ৫০ হাজার টাকা ও ১৪৫ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ করা হয়েছে।
বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গোলাম মুস্তাফা মুন্না জানান, পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী বরাদ্দ আছে। আমরা প্রকৃত বন্যার্ত পরিবারে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করবো।