জগন্নাথপুর সরকারি কলেজ শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন পাচ্ছেন না এক বছর ধরে
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ মার্চ ২০২৩, ৪:০২:২৩ অপরাহ্ন
জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা :
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর সরকারি কলেজের শিক্ষক ও কর্মচারীরা এক বছর ধরে বেতন পাচ্ছেন না। ফলে তাদের অর্থকষ্টে ভুগতে হচ্ছে। বেতন বিলের জন্য স্বাক্ষর আনতে গেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিক্ষক ও কর্মচারীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জগন্নাথপুর সরকারি কলেজ শিক্ষক ও কর্মচারীরা জানান, ১৯৮৭ সালে জগন্নাথপুর কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৮ সালে কলেজটি জাতীয়করণের গেজেট প্রকাশ করা হলেও জাতীয়করণের দাপ্তরিক কার্যক্রম চলে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক সরকারিকরণের ঘোষণা হলেও দাপ্তরিক কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আগের মতো বেসরকারি নিয়মে শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেসরকারি অংশের বেতন ভাতা ও আনুষঙ্গিক বিল পরিশোধ করার কথা। নিয়ম অনুযায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কলেজ অধ্যক্ষ যৌথ স্বাক্ষরে এসব বেতন বিলে স্বাক্ষর করবেন। গত এক বছর ধরে শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন বিলে স্বাক্ষর করছেন না উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম। শিক্ষকরা বার বার তাঁর সঙ্গে দেখা করে বেতন বিলে স্বাক্ষর দিতে অনুরোধ করলে তিনি স্বাক্ষর না করে কলেজ অধ্যক্ষ ও কর্মচারীর সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন মর্মে অভিযোগ রয়েছে।
জগন্নাথপুর সরকারি কলেজের অফিস সহকারী বকুল রায় জানান, এক বছরের বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। ধার দেনা করতে করতে এখন নিরুপায় হয়ে গেছি। বেতন বিল নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে গেলে তিনি ‘খুব খারাপ’ ব্যবহার করেন।
জগন্নাথপুর সরকারি কলেজের সিনিয়র শিক্ষক প্রভাষক বিজিত বৈদ্য জানান, বেতন বিলে স্বাক্ষর না করে শিক্ষক ও কর্মচারীদের সঙ্গে ইউএনও অমানবিক আচরণ করছেন। এতে অনেক শিক্ষক কর্মচারী আর্থিক সংকটে আছেন। বেতন বিলের জন্য তার দপ্তরে গেলে তিনি শিক্ষক ও কর্মচারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাহিদুল ইসলাম জানান, একাধিকবার তাকে বেতন বিলে স্বাক্ষর দিতে অনুরোধ করলেও তিনি নানা অজুহাতে ফিরিয়ে দিচ্ছেন। কলেজে ১৭ জন শিক্ষক ও চারজন কর্মচারী রয়েছেন।
ইউএনও সাজেদুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, কলেজের নানা আয়-ব্যয়ের হিসেব নিয়ে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু, তদন্ত কমিটিতে শিক্ষকদের দুই জন প্রতিনিধি দিচ্ছেন না। কলেজ থেকে ছয় মাসের বেতন চাওয়া হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে বেতনের বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান ইউএনও।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সিলেটের সহকারী পরিচালক প্রতাপ চৌধুরী জানান, শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন তাদের অধিকার। এটা না দেয়া হয়ে থাকলে দুঃখজনক। তিনি বলেন, যেসব কলেজে পরিচালনা কমিটি নেই-সেই সব কলেজে ইউএনওদের শুধু আর্থিক বিষয়টি দেখার জন্য যৌথ স্বাক্ষরের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।