নায়ক ফারুককে শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় শেষ বিদায়
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ মে ২০২৩, ১২:১৮:৫৭ অপরাহ্ন
# শায়িত হলেন বাবার পাশে
ডাক ডেস্ক : ঢাকাই চলচ্চিত্রের নন্দিত নায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুককে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা-ভালোবাসা ও চোখের জলে শেষ বিদায় জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টায় শহীদ মিনারে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিভিন্ন স্তরের মানুষ তার মরদেহে শ্রদ্ধা জানায়। ঢাকাই সিনেমার নবীন-প্রবীণ বহু মুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকালে নায়ক ফারুকের মৃত্যু হয়। গতকাল মঙ্গলবার সকালে একটি ফ্লাইটে তার মরদেহ দেশে পৌঁছায়। এর পর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মরদেহ নেওয়া হয় ফারুকের উত্তরার বাসায়। দুপুর পৌনে ১২টায় মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়। সেখানে শুরুতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পক্ষে লেফটেন্যান্ট কর্নেল সৈয়দ মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে শ্রদ্ধা জানান তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর পক্ষে শ্রদ্ধা জানান কমডোর এম এম নাঈম রহমান।
আওয়ামী লীগের পক্ষে দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে দলের নেতারা শ্রদ্ধা জানান। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন। শ্রদ্ধাজ্ঞাপন শেষে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন নায়ক ফারুক। তিনি আজীবন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে গেছেন। তার লাইফ ছিল কালারফুল (রঙিন)।’
নায়ক ফারুকের ছেলে রওশন হোসেন পাঠান শরৎ বলেন, ‘আমার বাবা চলে গেলেন। আপনারা আমার বাবার প্রতি কোনো দাবি রাখবেন না। তার জন্য দোয়া রাখবেন।’
জাসদ, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় কবিতা পরিষদ, জয় বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, আওয়ামী শিল্পীগোষ্ঠী, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এই অভিনয়শিল্পী ও সংসদ সদস্যের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। নায়ক ফারুককে শ্রদ্ধা জানাতে ইলিয়াস কাঞ্চন, ফেরদৌস, মিশা সওদাগর, নিপুণ, জায়েদ খানসহ আরও অনেকে এসেছিলেন শহীদ মিনারে। এর পর দুপুর পৌনে ১টার দিকে শহীদ মিনার থেকে ফারুকের মরদেহ তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল এফডিসিতে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁকে শেষবারের মতো বিদায় জানান সহকর্মী শিল্পী, নির্মাতা, প্রযোজক ও কলাকুশলীরা।
বিদেশে অবস্থানরত তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং মন্ত্রণালয়ের সবার পক্ষে সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার প্রয়াতের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে কিছুক্ষণ নীরবে অবস্থান করেন। এফডিসিতে নায়ক ফারুকের জানাজা সম্পন্ন হয় দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে। এর পর তার মরদেহ নেওয়া হয় চ্যানেল আই ভবনে। সেখানে আরেক দফা জানাজা হয় বিকেল সাড়ে ৩টায়। এর পর মরদেহ নেওয়া হয় গুলশান আজাদ মসজিদে। সেখানে বিকেলে আরেক দফা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় কালীগঞ্জ উপজেলার তুমুলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সোম গ্রামে নায়ক ফারুকের বাড়িতে মরদেহ পৌঁছায়। এর পর সোম টিউরি পাকা জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে তাকে গার্ড অনার দেওয়া হয়। সেখানে রাত ৯টার দিকে জানাজা শেষে বাবার কবরের পাশে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।