জগন্নাথপুর উপজেলা উপনির্বাচন প্রচার প্রচারণা শেষ, চলছে ভোটের হিসাব নিকাশ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ মে ২০২৩, ৬:০২:২২ অপরাহ্ন
জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে উপ নির্বাচনে গতকাল মঙ্গলবার প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিক প্রচার প্রচারণা শেষ হয়েছে। নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু করেছেন। নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে জয় পরাজয়ের হিসাব নিয়ে নাগরিকদের মধ্যে চলছে নানা বিচার বিশ্লেষণ। একটি পৌরসভা ও আটটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ উপজেলার ৮৯ টি কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা পুরুষ ১ লক্ষ ২৩১ ও নারী ভোটার ৯৯ হাজার ৯১৭ জন। নির্বাচনে এবার ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুল ইসলাম (নৌকা), জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী আতাউর রহমান (লাঙ্গল), জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের প্রার্থী আব্দুল কাইয়ুম কামালী সিতু (খেজুর গাছ), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হারুন রাশীদ (আনারস) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী তালহা আলম (কাপ পিরিচ)। ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নুরুল ইসলাম এবার নৌকা প্রতীকে শেষ মুহূর্তে এসে সুবিধাজনক অবস্থায় আছেন। তাঁর সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কে আসবে এ নিয়ে চলছে আলোচনা। গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা তালহা আলম এবারো প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন। আর আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হারুন রাশীদ বলয়ের নেতাকর্মীদের পাশে না পেয়ে চাপে রয়েছেন।
উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২ নভেম্বর সর্বশেষ জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২৬ ডিসেম্বর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আকমল হোসেন মারা যাওয়ায় আগামী বৃহস্পতিবার ২৫ মে চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দুই ধারায় বিভক্ত আওয়ামী লীগ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে একসূত্রে এসে প্রচারণায় নেমেছেন। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হারুন রাশীদ এর নেতা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আজিজুস সামাদ এবার নৌকার পক্ষে কোমড় বেঁধে মাঠে নেমেছেন। তিনি তাঁর অনুসারী সকল নেতাকর্মীকে নৌকার পক্ষে কাজ করতে বলেছেন। তাঁর অনুসারী নেতা সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুক্তাদীর
আহমেদ মুক্তা সার্বক্ষণিক মাঠে রয়েছেন। ফলে হারুন রাশীদ তাঁর অনুসারী নেতাকর্মীদের পাশে না পেয়ে বেকায়দায় পড়েছেন। অপরদিকে, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের রাজনৈতিক সচিব শান্তিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসনাত হোসাইন নৌকার পক্ষে দিনরাত মাঠে কাজ করে নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় নৌকা জয়ের পথে অনেকটা এগিয়ে গেছে। গত নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চলে আসা জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের প্রার্থী তালহা আলম খেজুর গাছ প্রতীকে আলোচনায় চলে আসলেও ছয় মাসের ব্যবধানে তিনি দল বদল করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে কাপ পিরিচ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় শুরুতে প্রতীক নিয়ে বেকায়দায় আছেন। অপর দিকে, জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের প্রার্থীও তাঁদের প্রতীকের ভোট বহাল রাখতে মাঠে কাজ চালিয়ে
যাচ্ছেন। এ উপজেলার উল্লেখযোগ্য ভোট ব্যাংক থাকলেও ভালো প্রার্থী দিতে না পারায় জাপার প্রার্থী জামানত হারাতে পারে বলে আলোচনা রয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী তালহা আলম বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমি জয়ের বিষয়ে আশাবাদী। সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে ফিফটি ফিফটি আশাবাদী। তিনি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুল ইসলাম বলেন, উন্নয়নের প্রতীক নৌকায় ভোট দিতে মানুষ ঐক্যবদ্ধ। জনগণের প্রতি আমাদের আস্থা আছে। সুনামগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুরাদ উদ্দিন হাওলাদার বলেন, একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা সব প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। ইভিএম এর মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে বলে তিনি জানান।