গণপরিবহনে ধূমপান
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ মে ২০২৩, ৭:৪২:২৮ অপরাহ্ন
সব দুঃখের মূল এই দুনিয়ার প্রতি অত্যধিক আকর্ষণ। -হযরত আলী রা.
গণপরিবহনে শতভাগ ধূমপানমুক্ত করার বিষয়টি ইদানিং বেশ আলেচিত হচ্ছে। সচেতন মহল জোরালেভাবে দাবি তলেছেন গণপরিবহনে ধূমপান নিসিদ্ধ করতে আইনানুগ উদ্যোগ গ্রহণের। যদিও জনসমাগমসাথলে ধূমপান নিষিদ্ধের আইন বলবৎ রয়েছে। অবশ্য এই আইন কার্যকর নেই বললেই চলে। এটি কার্যকর হলে এমনিতেই গণপরিবহনে ধূমপান বন্ধ হয়ে যায়।
তামাক-পণ্য ব্যবহার করছে দেশের প্রায় সব শ্রেণি সব বয়সি মানুষ। এর বিরুদ্ধে নানা ধরণের তৎপরতা অব্যাহত থাকলেও এর ব্যবহারকারির সংখ্যা কমছে না, বরং বাড়ছে। সত্যি বলতে কি, তামাক ও ধূমপান বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতির জন্য মারাত্মক হুমকি। ধূমপানকারি ব্যক্তি বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির সম্মুখিন হন। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রতিদিন ধূমপানের জন্য ১৪ মিনিট করে আয়ু কমতে থাকে। আরেক জরিপের তথ্য হচ্ছে, দেশে প্রতিদিন তামাকজনিত রোগে ৪৫০ জন মানুষ মারা যান
এবং এ রোগে বছরে এক লাখ ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটে। আর সারা বিশ্বে প্রতিবছর শুধু ধূমপানের কারণে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করে। ধূমপান হচ্ছে প্রতিরোধযোগ্য অকাল মৃত্যুর প্রধান কারণ। বিভিন্ন গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে উদ্বেগজনক তথ্য। যেমন- ধূমপায়িদের আয়ু সাত থেকে ১৪ বছর কমে যায়, একটি সিগারেট গড়ে প্রায় এগারো মিনিট আয়ু কমিয়ে দেয়, সারাজীবন ধরে ধূমপানকারির ৫০ ভাগ ধূমপানের ক্ষতির কারণে মারা যায়, অধূমপায়ির তুলনায় একজন ধূমপায়ির ৬০ বা ৭০ বছর বয়সের পূর্বে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় তিনগুণ। তামাকজাত দ্রব্য হৃদরোগ, ক্যান্সার, বক্ষব্যাধিসহ অনেক প্রতিরোধযোগ্য রোগ এমন কি মৃত্যুর অন্যতম কারণ। সেই সঙ্গে তামাকজনিত রোগের চিকিৎসায় সরকারের প্রতিবছর ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়।
ধূমপান তথা মাদকদ্রব্য ব্যবহার বন্ধে সরকার আইন করেছে। ২০০৫ সালে প্রণীত হয় ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন। ২০১৩ সালে আইনে বেশকিছু সংশোধনি আনা হয়। তারপরও আইনটিতে বেশকিছু দুর্বলতা রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন। সর্বোপরি আইন যা ও আছে তার প্রয়োগ নেই। আইনে নিষিদ্ধ হলেও জনসমাগমস্থলে হরদম ধূমপান হচ্ছে। গণপরিবহনেও একই অবস্থা।সব ধরণের যানবাহন ধূমপানমুক্ত করা হোক।