বিশ্ব বসতি দিবস
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০২ অক্টোবর ২০২৩, ২:৩১:৪৭ অপরাহ্ন
সব ধরনের অনিশ্চয়তা, হতাশা আর বাধা সত্ত্বেও নিজের সবটুকু দিয়ে সফল হওয়ার চেষ্টাই শক্তিমান মানুষকে দুর্বলদের থেকে আলাদা করে। -থমাস কার্লাইল
সবার জন্য আবাসন নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতিকে সামনে রেখে আজ দেশে পালিত হচ্ছে বিশ্ব বসতি দিবস। জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতি বছর অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। ১৯৮৫ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এই দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। পরের বছরই দিবসটি পালন শুরু হয়। মূলত সবার জন্য নিরাপদ আবাসন সৃষ্টিই এই দিবসটি পালনের লক্ষ। বিগত ৩৭ বছর ধরে বিশ্ব বসতি দিবস পালিত হয়ে আসলেও এর লক্ষ ও উদ্দেশ্য কোনটাই বাস্তবায়িত হয়নি। বিশেষ করে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে তো অবশ্যই। এখানে বিভিন্ন কারণে বাস্তুহারা মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তাছাড়া, মধ্যবিত্ত নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের বড় অংশের নিজের একটি আবাসনের স্বপ্ন এখনও স্বপ্নই রয়ে গেছে।
বাংলাদেশে ছিন্নমূল মানুষের আবাসনের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা বলা হলেও এখনও তা অপ্রতুল। জরিপের তথ্য হচ্ছে- বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বছরে গড়ে অন্তত ৮-১০ লাখ মানুষ বাস্তুহারা হচ্ছেন। আর এই বাস্তুচ্যুত মানুষেরা আশ্রয় নেন রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরের ফুটপাত বা বস্তিতে। সরকারের রয়েছে বিভিন্ন আবাসন প্রকল্প। কিন্তু এগুলোর সুবিধাভোগী হচ্ছে সরকারি চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। বাস্তুহারা দরিদ্র, নিম্নবিত্ত মানুষেরা সরকারের আবাসন সুবিধা পাচ্ছে না। বেসরকারি পর্যায়ে গড়ে উঠা আবাসন প্রকল্পগুলোতেও নিম্নবিত্ত সীমিত আয়ের মানুষেরা আবাসনের সুযোগ পাচ্ছে না। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই আবাসন নিয়ে এখনও সরকারের দৃশ্যমান কোন পরিকল্পনা চোখে পড়ছে না। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জরিপে পাওয়া গেছে, জনসংখ্যার ১৭ শতাংশের সরকারিভাবে টেকসই আবাসন নিশ্চিত করা হয়েছে; আর বেসরকারি উদ্যোগে আবাসন নিশ্চিত করা হয়েছে ১৯ শতাংশ মানুষের। এছাড়া, ৪৪ শতাংশ মানুষ বস্তিতে এবং ২০ শতাংশ মানুষ খোলা আকাশের নিচে ও ব্যক্তিগত দুর্বল অবকাঠামোর বাসভবনে বসবাস করছে।
তারপরেও আমরা আশায় থাকতে চাই। সরকার সবার জন্য স্বাস্থ্যসম্মত টেকসই আবাসন নিশ্চিত করার ঘোষণা দিয়েছে। নেয়া হয়েছে নানান উদ্যোগ। রাজধানীসহ দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নিম্ন আয় ও ছিন্নমূল মানুষের জন্য ফ্ল্যাট-প্লট প্রকল্প গ্রহণ করার কথা ঘোষণা করেছে সরকার। এগুলো বাস্তবের মুখ দেখবে বলেই আমরা আশা করছি। সবচেয়ে বড় কথা, বর্ধিত জনসংখ্যার আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করতে আমাদের মূল্যবান কৃষিজমি সংকুচিত হচ্ছে। কৃষিজমি সুরক্ষার মাধ্যমে দেশের সকল স্তরের মানুষের জন্য আবাসন সুবিধা দেয়াই হোক বিশ্ব বসতি দিবসের অঙ্গীকার।