নবীগঞ্জে সালিশ বৈঠকে আ.লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১০
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ নভেম্বর ২০২৩, ১:১৩:২০ অপরাহ্ন

নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : নবীগঞ্জ উপজেলায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিলকে স্বাগত জানানোর মিছিলকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় সড়কে যানবাহন চলাচলসহ দোকান পাট বন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনায় সাবেক ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সম্পাদক আবু সিদ্দিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নবীগঞ্জ শহরের নতুন বাজার এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এদিকে বিষয়টি মীমাংসার জন্য আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট আবু জাহির এমপিকে নিয়ে সালিশ বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গত বুধবার রাতে জাতীয় সংসদের দ্বাদশ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণায় নবীগঞ্জে উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এক আনন্দ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। আনন্দ মিছিলটি নবীগঞ্জ শহর প্রদক্ষিণ শেষে শহরের প্রাণকেন্দ্র গাজির টেক এ মিলিত হয়ে এক পথ সভায় মিলিত হলে তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাবেদুল আলম চৌধুরী সাজু ও পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাবলু আহমদের মধ্যে বাক-বিতন্ডা হয়। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা মীমাংসার জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় নবীগঞ্জ শহরের শেরপুর রোডস্থ আব্দুল হেকিম ম্যানশনে শালিস বৈঠকে বসেন উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।
এ সময় জাবেদুল আলম চৌধুরী সাজু ও বাবলু আহমদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘন্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে উভয়পক্ষ ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সিদ্দিক (৫৫) সহ উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হন। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে বিষয়টি সমাধানের জন্য উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম, বাহুবল-নবীগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আবুল খয়ের, ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট গতি গোবিন্দ দাশ, নবীগঞ্জ থানার ওসি মোঃ মাসুক আলী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এমদাদুর রহমান মুকুল, সাবেক জেলা পরিষদ মোঃ আব্দুল মালিক, করগাঁও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নির্মলেন্দু দাশ রানা, পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র এবং উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জায়েদ চৌধুরীসহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ বৈঠকে বসে হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট আবু জাহির এমপিকে নিয়ে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হয়।
খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক নবীগঞ্জ থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পরে বাহুবল-নবীগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আবুল খয়ের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং উভয়পক্ষকে শান্ত করেন। সংঘর্ষের পর উভয়পক্ষই শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিলে ফের সংঘর্ষের আশংকা দেখা দেয়। এসময় পুলিশ কঠোর অবস্থান নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাসুক আলী জানান, বতর্মানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। বাহুবল-নবীগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আবুল খয়ের বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে উভয়পক্ষকে নিয়ে সমাধানের জন্য চেষ্টা করেছি, বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।