দিরাইয়ে আধুনিক বাসস্ট্যান্ড নির্মাণের দাবি জোরালো হচ্ছে
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২১ নভেম্বর ২০২৩, ৩:০৩:১৪ অপরাহ্ন
উবাইদুল হক, দিরাই (সুনামগঞ্জ) থেকে : দিরাই থেকে সারাদেশে সরাসরি বাস চলাচল শুরুর ৩০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো সেখানে আধুনিক কোন বাসস্ট্যান্ড নির্মাণ করা হয়নি। শহরের প্রবেশ মুখ আনোয়ারপুর এলাকায় মাত্র ১০ শতক ভূমিতে নামমাত্র একটি স্ট্যান্ড রয়েছে। সেখানে একটি মিনি যাত্রী ছাউনি আছে, যা টিকেট কাউন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। স্থানাভাবে প্রায় সকল গাড়ি রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। প্রতিবছর গাড়ি ও যাত্রীসংখ্যা বাড়তে থাকলেও আয়তন বাড়েনি এই বাসস্ট্যান্ডের। ফলে প্রতিদিন তীব্র যানজটে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন যাত্রীসহ শহরের লোকজন। স্থানীয়রা বর্তমান মিনি বাসস্ট্যান্ডটি শহরের সুবিধাজনক কোন এলাকায় বেশি পরিমাণ জায়গায় স্থানান্তর করে সেখানে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত বাস টার্মিনাল নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন। দিরাই বাসস্ট্যান্ড স্থানান্তর বাস্তবায়ন কমিটি সম্প্রতি পৌর মেয়র বরাবরে একটি স্মারকলিপি দিয়েছে। তারা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুপ্রশস্ত চলাচল নিশ্চিত করতে বাসস্ট্যান্ড স্থানান্তরের বাস্তবসম্মত কার্যক্রম গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছে।
জানা যায়, দিরাই থেকে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ শুরু হয় ১৯৯৩ সালে। বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রথমে দু একটি বাস ঢাকা যাতায়াত করলেও বর্তমানে প্রতিদিন ২০টি বাস ঢাকায় যাতায়াত করে। তাছাড়া স্থানীয়ভাবে সিলেট বিভাগীয় শহর, জেলা ও উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন জায়গায় প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক বাস যাতায়াত করছে। এছাড়া লেগুনা, সিএনজি, মালবাহী ট্রাক, টমটমসহ বিভিন্ন যানবাহন স্টেশন হয়ে চলাচল করে। বাসস্ট্যান্ডের আয়তন না বাড়ায় সড়কের পুরোটা জুড়েই এখন সারি সারি সিএনজি ও দূরপাল্লার গাড়ি।
সরেজমিনে দিরাই বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান সড়কে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আছে ঢাকাগামী বাসগুলো। দেখে সড়কটিকেই বাসস্ট্যান্ড বলে মনে হবে। এসব বাসের চালকরা জানান, জায়গার অভাবে রাস্তায় বাস পার্কিং করে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। ফলে সড়কটি সংকীর্ণ হয়ে চলাচলে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। সড়কেই যাত্রী উঠা-নামা করায় যান চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াতকারী যাত্রী, স্থানীয় জনসাধারণ, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ ব্যবসায়ীদের প্রতিনিয়ত চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে।
দিরাই সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মারজান আহমেদ বলেন, দিরাই এখন যানজটের শহরে পরিণত হয়েছে। দিন দিন অবস্থা ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এ যেন দেখার মতো কেউ নেই। দিরাই কলেজ রোডের ব্যবসায়ী ফজলুল করিম বলেন, একটা সুন্দর বাসস্ট্যান্ড হলে যানজট থেকে নিস্তার পাওয়া যেত। যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করতে পারলে আমাদের ব্যবসা বাণিজ্য বাড়ত। কিন্তু প্রশাসনের কোনও উদ্যোগই চোখে পড়েছেনা। মানবাধিকার কর্মী মুজিবুর রহমান যানজটে অতিষ্ঠ দিরাইবাসীর নিত্য দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে স্থানীয় প্রশাসন ও দিরাই পৌর কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন। দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেতে দিরাই বাসস্ট্যান্ড স্থানান্তর বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক আবুল কাশেম চৌধুরী বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর মেয়র বরাবর বাসস্ট্যান্ড অন্যত্র সরিয়ে একটি আধুনিক বাস টার্মিনাল স্থাপনে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
দিরাই বাসস্ট্যান্ডের উন্নয়নে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন এবং পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান এর একটি ডিও লেটার দেয়া হয়েছে বলে জানান, প্রবাসী কমিউনিটি নেতা ডক্টর সামসুল হক চৌধুরী।
১৯৯৯ সালে দিরাই পৌরসভা গাঠিত হলে বাসস্ট্যান্ড পৌরসভার অধীনে চলে যায়। দিরাই পৌরসভার মেয়র বিশ্বজিত রায় বলেন, বাসস্ট্যান্ড নির্মাণের জন্য জায়গা খোঁজা হচ্ছে। সুবিধাজনক জায়গা পাওয়া গেলেই নতুন বাসস্ট্যান্ড নির্মাণ করা হবে।