সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন
বালাগঞ্জে জোরপূর্বক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে উচ্ছেদের পাঁয়তারা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ নভেম্বর ২০২৩, ২:১২:৪৩ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : ‘বালাগঞ্জের সিরাজপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোখলেসুর রহমানের মৃত্যুর পর জালিয়াতির মাধ্যমে তার সম্পত্তি নিজের নামে করেছেন তারই ভাই ফজলুর রহমান। এর সূত্র ধরে ফজলুর রহমানের স্ত্রী যুক্তরাজ্য প্রবাসী আমেনা খাতুন হেনা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের পারিবারিক সম্পত্তি থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদের পাঁয়তারা করছেন।’
এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মোখলেসুর রহমানের চাচাতো ভাই রুহুল কুদ্দুস বাবুল। গতকাল শনিবার দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ কথ তিনি।
লিখিত বক্তব্যে বাবুল বলেন, ‘১৯৯২ সালে সেটেলমেন্টের কাজ শুরু হয় বালাগঞ্জ উপজেলায়। সিরাজপুর মৌজায় ২৯ ধারার কাজ চলাকালীন সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মোখলেসুর রহমানের মৃত্যু হয়। তখন বড়ভাই লন্ডন প্রবাসী ফজলুর রহমান দেশে এসে জরিপ কাজ সম্পন্ন করে আবার লন্ডন চলে যান।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে মোখলেসুর রহমানের ছোট ছেলে অভিউর রহমান অভি তাদের এজমালি জায়গা জমি চাষাবাদ ও রক্ষণাবেক্ষণ করছেন। কিন্তু গত বছরের ২৮ জুলাই বীর মুক্তিযোদ্ধা মোখলেসুর রহমানের ভাই মৃত ফজলুর রহমানের স্ত্রী যুক্তরাজ্য প্রবাসী আমেনা খাতুন হেনা দেশে এসে সমস্ত সম্পত্তি নিজের মালিকানা দাবি করেন এবং সৎ ভাই আলতাবুল ইসলামের মাধ্যমে জনৈক এনামুল হককে ভুয়া আমমোক্তার সাজিয়ে ১৪৪ ধারার একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। এতে মোখলেসুর রহমানের ছেলে মাহবুব আলম রেজভী, মোখলেসুর রহমানের চাচাতো ভাই লুৎফুর রহমান খসরু, রুহুল কুদ্দুস বাবুলসহ আরও কয়েকজনকে বিবাদী করা হয়।’
তিনি আরও জানান, আদালতের নির্দেশে বালাগঞ্জ থানা পুলিশ তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়। প্রতিবেদনে মামলার বিষয়বস্তু মিথ্যা উল্লেখ করে মোখলেসুর রহমানের ছেলে ওহিউর রহমানদের ৩০/৩৫ বছরের যৌথ দখল বিদ্যমান বলা হয়। সম্পত্তিতে সব পক্ষের দাবি প্রতিষ্ঠিত বলে নিজ নিজ সত্ত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য দেওয়ানী আদালতে বাটোয়ারা মামলা করতে এবং থানাকে আইনশৃংখলা বজায় রাখতে নির্দেশ দেন আদালত।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘বিএস জরিপে প্রতারণার মাধ্যমে পিতা মৃত মুহিবুর রহমান ও মাতা তৈয়বুন্নেসার সমস্ত জমি নিজের নামে রেকর্ড করিয়ে নেন বলে জানা যায়। বাড়ির বসতভিটায়ও তার ভাই মুক্তিযোদ্ধা মোখলেসুর রহমানের নাম রাখেননি। পারিবারিক কবরস্থানও বাদ রাখেননি, সবই তার নামে রেকর্ড করে নেন।’
রুহুল কুদ্দুস বাবুল আরও বলেন, ‘আমার আরেক চাচাতো ভাই লুৎফুর রহমান খসরুর কিছু জমি ফজলুর রহমান ভুয়া দলিল করে তার নামে বিএস রেকর্ড করিয়ে নিয়েছেন।’ এদিকে, গত মে মাসে ফজলুর রহমানের স্ত্রী তার সন্তানদের নিয়ে গোপনে দেশে আসেন এবং তার সৎ ভাই দক্ষিণ সুরমার মোল্লারগাঁওয়ের আলতাবুল ইসলামকে সমস্ত জমি আমমোক্তারনামা দিয়ে চলে যান।
জমি দখলে নিতে আমেনা খাতুন হেনা ও আলতাবুল ইসলাম সমাজের দুষ্কৃতকারীদের সহযোগিতা নিচ্ছেন জানিয়ে বাবুল অভিযোগ করে বলেন, ‘আলতাবুল ইসলাম আমমোক্তার বলে লতিফকে লিখিতভাবে মুক্তিযোদ্ধা মোখলেসুর রহমানের পরিবারের সমস্ত ইজমালী ধানি জমি বর্গা দেন। চিহ্নিত দুষ্কৃতকারী লতিফ ডাকাত মোখলেসুর রহমান ও শফিকুর রহমানের পরিবার নানাভাবে হেনস্থা হয়রানি করছে।’
বাড়ির বসতঘর দখলচেষ্টা হয় জানিয়ে বাবুল বলেন, ‘ওহিউর রহমানের বৃদ্ধা অসুস্থ মা একা বাড়িতে থাকেন। তাকে দেখাশুনা করেন ওহিউরের ভাগ্নে শারমিন আক্তার রিপার ছেলে কলেজ ছাত্র তায়েফ আহমদ। তাদের লতিফ ডাকাতের লোকজন ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চলেছে। আমাদের পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় আছে। আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের সদয় দৃষ্টি ও সহযোগিতা কামনা করছি।’
তিনি বলেন, ‘২০২২ সালে পারিবারিক গোরস্থানের গার্ডওয়াল নির্মাণের সময় আমির আলী ও গেদুসহ ২৫ থেকে ৩০ জন লোক হামলা চালায়। অথচ, এ জমির সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। এ ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে তাদের দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে ঘটনাস্থলে অজ্ঞান হয়ে পড়েন বাবুল। পরে, হাসপাতালে নেয়া হলে তিনি মারা যান। এ ঘটনার পর আমির ও আলফুকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও পোস্টমর্টেম না করার অজুহাতে হত্যা মামলা নেননি থানার ওসি।’
ঘ
টনাটি সুপরিকল্পিত ও সংঘবদ্ধ উল্লেখ করে তিনি এ ঘটনার সাথে আমেনা খাতুন হেনাদের হাত থাকতে পারে বলে অভিযোগ করেন। সার্বিক বিষয়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান রুহুল কুদ্দুস বাবুল।