কারেন্ট পোকার আক্রমণে দিশেহারা আজমিরীগঞ্জের চাষীরা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ২:৫১:৪৪ অপরাহ্ন
আজমিরীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : ধান কাটা শুরু হয়েছে এরই মাঝে পাকা ধানের জমিতে কারেন্ট পোকার আক্রমণ। এমনটি হয়েছে আজমিরীগঞ্জে রোপা আমন জমিতে। এতে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে বিভিন্ন ধরনের বালাই নাশক স্প্রে করছেন। শুধু কারেন্ট পোকার আক্রমণ নয় পাকা জমির ধান কেটে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ারও অভিযোগ করছেন কৃষকরা। তবে সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ না করায় কৃষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এদিকে, সরকার কৃষকদের পুনর্বাসনে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের মাধ্যমে ৮ হাজার ৫৭৫ জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে সরিষা, ভুট্টা, সূর্যমুখী, চিনা বাদাম, মসুর ডাল, হাইব্রিড ধান, উফশি বীজ ধান, ডিএমপি ও এমওপি সার বিতরণ করেন। আজমিরীগঞ্জে এবার ৭ হাজার ৮১০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদ করা হয়েছে। গত অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে অতিবৃষ্টিতে হাওরে অধিকাংশ জমি তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়, সেই সাথে পাতাপোড়া রোগেরও আক্রমণ বাড়ে। কয়েকদিনের মধ্যেই পানি নেমে গিয়ে ক্ষতির পরিমাণটা কমে আসলেও আবার পাকা ধানে কারেন্ট পোকার আক্রমণে দিশেহারা কৃষক। আর জমি আবাদের খরচ অনুযায়ী ধানের মূল্য না পাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।
প্রান্তিক কৃষকরা সরকারিভাবে ধান কেনার কার্যক্রম দ্রুত করার দাবি জানান। কৃষক চাবু মিয়া জানান, তিনি ৮ কিয়ার জমিতে রোপা আমন আবাদ করেছেন আর কয়েকদিন পর ধান কর্তন করবেন। এরই মধ্যে কারেন্ট পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েন। তিনি বাজার থেকে বালাই নাশক ওষুধ কিনে জমিতে স্প্রে করেন। কৃষক সমর আলী জানান, তিনি ৭ কিয়ার রোপা আমন আবাদ করেছিলেন। গত কয়েকদিন আগে ঝড়ে জমির ধান গাছ নুয়ে পড়ে তার ব্যাপক ক্ষতি হয়। আর ৯১০ টাকা মন (৪০ কেজি) দরে ধান বিক্রি করেন। ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
উপজেলা খাদ্য গুদাম পরিদর্শক মো. সামছুল হুদা জানান, এ উপজেলায় রোপা আমন ধান ৩০ টাকা কেজি দরে ২৫৪ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে। কৃষকেদর তালিকা তৈরি করে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই সংগ্রহ শুরু করা হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. লুৎফে আল মুঈজ জানান, বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই থেকে ফসলকে মুক্ত রাখতে কৃষকদের মাঝে সচেতনতামূলক প্রচারণা ও লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের পুর্নবাসনের জন্য প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় সরকার এ উপজেলায় ১ হাজার ৭৫ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে সরিষা, ভুট্টা, গম, সূর্যমুখী, চিনা বাদাম, মসুর ফসলের বীজ ও সার, ৩ হাজার কৃষককে ২ কেজি করে হাইব্রিড বীজ ধান এবং সাড়ে ৪ হাজার কৃষক/কৃষাণীর মাঝে উফশী ৫ কেজি বীজ ধান, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ এমওপি সার বিতরণ করা হয়।