ভারতের রপ্তানি বন্ধের খবরে সিলেটে পেঁয়াজের বাজার অস্থির
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৫৭:১৯ অপরাহ্ন

এনামুল হক রেনু :
ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের খবরে সিলেটে পেঁয়াজের বাজারে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। একদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম একলাফে কেজিতে বেড়েছে ৩০-৫০ টাকা।
গতকাল শুক্রবার দেওয়া এক আদেশে রপ্তানি বন্ধের খবর জানায় ভারত। এই সিদ্ধান্ত আসার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই কেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে পেঁয়াজের।
গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে সিলেট নগরীর বন্দরবাজার এলাকার ব্রহ্মময়ীবাজারে গিয়ে দেখা যায়, পেঁয়াজ নিয়ে কাড়াকাড়ি চলছে। অনেক দোকান পেঁয়াজ শুন্য হয়ে পড়েছে। এ সময় ১৫০ টাকা করে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হলেও নগরীর বিভিন্নস্থানে ওই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে। ব্যবসায়ীরা জানান, আগের দিন ১১০ টাকা কেজিতে যে পেঁয়াজ বিক্রি হয় সেগুলো সন্ধ্যার দিকে তারাই বিক্রি করেছেন ১২০-১৩০ টাকা দরে।
মূলত ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের খবর সন্ধ্যার মধ্যেই পৌঁছে যায় সাধারণ ব্যবসায়ীদের কানে। এরপরই নিজ নিজ অবস্থান থেকে বাড়তি দামে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেন তারা।
বন্দরবাজার এলাকায় পেঁয়াজ কিনছিলেন নগরীর মিরাবাজার এলাকার বাসিন্দা সুফিয়ান আহমদ।
তিনি বলেন, পেঁয়াজের দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে। পাইকারি ও খুচরা বাজারে দাম প্রায় একই। যদিও বাজারে যে পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলো নতুন আমদানি করা নয়, আগের পেঁয়াজগুলোই ব্যবসায়ীদের কাছে মজুত আছে। এখন ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের অজুহাত দেখিয়ে এগুলোই তারা বেশি দামে বিক্রি করছেন।
পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে জহির আলী নামের এক বিক্রেতা বলেন, ভারত থেকে বেশি দামেই পেঁয়াজ আনতে হচ্ছে। যার কারণে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেশি। এখন আবার শুনেছি ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করেছে, তাহলে তো পেঁয়াজের বাজারে আরও অস্থিরতা তৈরি হবে। তবে আগামী ১৫ দিন পরই বাজারে নতুন পেঁয়াজ চলে আসবে, আশা করি দেশিটার দাম তখন কমে যাবে।
সিলেটের কালীঘাট এলাকার ব্যবসায়ী ফাহাদ মো. হোসেন বলেন, তারা মূলত মুদিদোকানের মালামাল পাইকারি দামে বিক্রি করেন। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী তাদের কাছে কোনো পণ্য না থাকলেও অন্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে দেন। গতকাল থেকে সিলেটে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। এ জন্য তিনি ক্রেতাদের পেঁয়াজ দিতে পারেননি।
তিনি আরও বলেন, যেখানে একদিন আগেও ২০ টাকা কমে পেঁয়াজ দিতে পেরেছিলেন, সেখানে পাইকারি বাজারে এক রাতের ব্যবধানে ২০ টাকা বেশি চাওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, এই মুহূর্তে দেশের পেঁয়াজের দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। যতবার ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করেছে, দেশে ঠিক ততবার অসাধু ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে দাম বাড়িয়েছে। এবারও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন ও আমদানি পর্যাপ্ত পরিমাণে হয়েছে। পাশাপাশি নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে উঠতে শুরু করেছে। তাই তদারকির মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তা না হলে অসাধু চক্র ফের ভোক্তার পকেট কাটবে।