আজমিরীগঞ্জে অনলাইন জুয়ায় সর্বস্বান্ত হচ্ছেন লোকজন
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১:৪৯:০২ অপরাহ্ন
আজমিরীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) থেকে সংবাদদাতা: আজমিরীগঞ্জে অনলাইন ভিত্তিক শিলং নামক জুয়ার নেশায় সর্বস্বান্ত হচ্ছেন এলাকার লোকজন। মোবাইলের এসএমএস’র মাধ্যমে এ খেলা পরিচালিত হয়। অর্থ লেনদেন করা হয় মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টের মাধ্যমে। এ খেলাটি দুই রাউন্ডে পরিচালিত হয়। প্রথম রাউন্ডে বাজিতে ধরা টাকার ৭০ গুণ ও দ্বিতীয় রাউন্ডে ৬০ গুণ টাকা দেয় স্থানীয় এজেন্ট। রাতারাতি বড়লোক হওয়ার আশায় এলাকার শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষ এ খেলায় অংশ নিয়ে অনেকেই সর্বস্বান্ত হয়েছেন।
জানা যায়, ১৯৯০ সালে ভারতের শিলং ও গৌহাটি থেকে চালু হয় এ জুয়া খেলা। সেখান থেকে সিলেটের গোয়াইনঘাটের জাফলং ও কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জের শ্রমিকদের মধ্যে এ খেলা পরিচালিত হতো। ধীরে ধীরে সিলেট শহর হয়ে প্রায় ৮ বছর আগে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার জলসুখা ইউনিয়নে এর বিস্তার ঘটে। তাৎক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর হস্তক্ষেপে তা দমন করলেও কিছুদিন পর উপজেলা সদরসহ আশপাশের এলাকায় ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পায়। সম্প্রতি এই জুয়া খেলায় অংশ নিয়ে প্রায় ৫ শতাধিক মানুষ ঋণগ্রস্ত হয়ে এলাকা ছেড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।
স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে তারা জানান, আজমিরীগঞ্জ উপজেলার জলসুখা ইউনিয়নের মাধবপাশার দুটি স্পটে বেশ কয়েকটি চায়ের দোকান, আজমিরীগঞ্জ সদরের টানবাজার, মোক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স সংলগ্ন এলাকা, নিচ বাজারের কাঠবাজার, মুন সিনেমা হল এলাকার চায়ের দোকান, লঞ্চ টার্মিনাল ঘাট এলাকাসহ প্রায় অর্ধশতাধিক স্পটে এ জুয়ার আসর বসে। এ জুয়া খেলা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা নেয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুরোধ জানান এলাকার সচেতন মহল।
গতকাল শুক্রবার বিকালে আজমিরীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক জয়ন্ত কুমার তালুকদারের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সদরের টান বাজারের তিন্নি মিষ্টান্ন ভান্ডারে অভিযান চালিয়ে ২ জুয়াড়িকে আটক করে। ধৃতরা হলো, পৌর
এলাকার নগর গ্রামের আল্লাদ মিয়ার পুত্র মোঃ আলী আক্তার (৪০) ও আলফু মিয়ার পুত্র আশিকুর রহমান (২৮)। এ সময় তাদের কাছ থেকে শিলং জুয়া খেলার সরঞ্জাম, দু’টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৫০ টাকা করে জরিমানা ও ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদ- প্রদান করেন উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম।
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, বংগীয় প্রকাশ্য জুয়া আইন, ১৮৬৭ এর ৪ ধারা মোতাবেক প্রত্যেককে ৫০ টাকা জরিমানা ও ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদ- প্রদান করা হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।