মহীয়সী নারী বেগম রাবেয়া খাতুন চৌধুরীর সপ্তদশ মৃত্যুবার্ষিকী আজ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ৫:২৫:১১ অপরাহ্ন
![মহীয়সী নারী বেগম রাবেয়া খাতুন চৌধুরীর সপ্তদশ মৃত্যুবার্ষিকী আজ মহীয়সী নারী বেগম রাবেয়া খাতুন চৌধুরীর সপ্তদশ মৃত্যুবার্ষিকী আজ](https://sylheterdak.com.bd/wp-content/uploads/2023/12/dak-news-2-5-768x479.jpg)
স্টাফ রিপোর্টার : দেশের সকল মেহনতি মানুষের মুখে হাসি ফুটুক-এমন স্বপ্ন ছিলো যার জীবনজুড়ে, সেই বেগম রাবেয়া খাতুন চৌধুরীর ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। মানবতার কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ, বহুল প্রচারিত দৈনিক সিলেটের ডাক’র সাবেক সফল সম্পাদক সবার প্রিয় এই মানুষটির অকালে চলে যাওয়াটা ছিলো বিরাট বেদনার। যা মৃত্যুর এতো বছর পরও কাটিয়ে উঠতে পারেননি সিলেটের মানুষ। ২০০৬ সালের এই দিনে সবাইকে কাঁদিয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চিরবিদায় নিয়েছিলেন মহীয়সী এই নারী। মৃত্যু তাঁকে ছিনিয়ে নিয়ে গেলেও মানুষের মনে এখনো তিনি চিরঞ্জীব। যতদিন তাঁর কর্ম থাকবে, ততদিন মানুষ তাকে মনে রাখবে। দেশ বরেণ্য শিল্পপতি ও সমাজহিতৈষী দানবীর ড. রাগীব আলীর সকল সুকীর্তির, সকল সাফল্যের একনিষ্ঠ সহচর ও সমাজের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মহৎ কাজের মূল উৎস বেগম রাবেয়া খাতুন চৌধুরী ছিলেন আপাদমস্তক একজন পরোপকারী। তাঁর চিন্তা চেতনায় ছিলো গরিব দু:খী মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন।
দেশের পিছিয়েপড়া বৃহৎ জনগোষ্ঠীর শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থানের বিষয়টি সারাক্ষণ আচ্ছন্ন করে রাখতো তাঁকে। তিনি সবসময় চাইতেন দেশের মঙ্গল ও কল্যাণ। তাঁর অনেক সুমহান কীর্তি শুধু সিলেটে নয়, বাংলাদেশের প্রত্যন্ত জনপদেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রশংসিত সিলেটের প্রথম বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় লিডিং ইউনিভার্সিটি এবং সিলেট বিভাগের প্রথম বেসরকারী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায় দানবীর ড. রাগীব আলীর পাশাপাশি বেগম রাবেয়া খাতুন চৌধুরীর রয়েছে অনন্য অবদান।
দৈনিক সিলেটের ডাক সম্পাদনার মহান দায়িত্ব পালন করে ঐতিহ্যবাহী জনপদ সিলেট অঞ্চলের সংবাদপত্রে তিনি যোগ করেন নতুন মাত্রা। শুধু তাই নয়, তাঁর যোগ্য নেতৃত্বে উপকৃত হয়েছে এদেশের অগণিত মানুষ। সকল প্রকার সহযোগিতা লাভ করেছে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন। গুণগত শিক্ষা প্রসারের ক্ষেত্রেও তাঁর রয়েছে নজীরবিহীন অবদান। নিজ হাতে গড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো নিভৃতে শিক্ষিত সমাজ গঠনে নিরবধি কাজ করে যাচ্ছে। বলা যায়, মানবকল্যাণে নিবেদিত তাঁর হাতে গড়া প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই সমাজে আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে। এজন্য গভীর শ্রদ্ধাভরে এই মানুষটিকে স্মরণ করেন ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণী পেশার মানুষ।
বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী বেগম রাবেয়া খাতুন চৌধুরী ২০০৬ সালে ১২ ডিসেম্বর ভোর রাতে আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হন। পরে তাঁকে মালনীছড়া চা বাগানের বাংলো থেকে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁরই হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। সেখানে নিয়ে আসার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তারপর সিলেটের সর্বস্তরের মানুষের চোখের জল আর ফুলেল শ্রদ্ধায় ওই দিন বিকেলে তাঁকে দাফন করা হয় স্বামীর বাড়ী শহরতলীর কামালবাজারস্থ রাগীব নগরের পারিবারিক গোরস্থানে। বেগম রাবেয়া খাতুন চৌধুরীর সপ্তদশ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সিলেটের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন ছাড়াও তাঁরই প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, ডিগ্রী কলেজ, স্কুল, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দিনব্যাপী নানা কর্মসূচী গ্রহণ করেছে।
এসব কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে- স্মরণসভা, আলোচনা সভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল। এছাড়া, মরহুমার পরিবার আত্মীয়-স্বজনের উদ্যোগেও বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হবে। আজ মঙ্গলবার সকালে শহরতলীর কামালবাজারস্থ রাগীব নগরে মরহুমার কবরে ফাতেহা পাঠ করবেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।